শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সিরাজগঞ্জে রেশম চাষে লাভবান হচ্ছে যমুনা চরের মানুষ

সিরাজগঞ্জে রেশম চাষে লাভবান হচ্ছে যমুনা চরের মানুষ

সিরাজগঞ্জের যমুনা চরাঞ্চলে রেশম চাষ করে আথিক ভাবে লাভবান হচ্ছে যমুনা চরের মানুষ। বর্তমানে যমুনা চরাঞ্চলে রেশম চাষ করে সুদিন ফিরতে শুরু করেছে তাদের। স্থানীয় রেশম উন্নয়ন বোর্ডের সহযোগীতায় নদী ভাঙ্গন কবলিত এসব মানুষগুলো গড়ে তুলেছে রেশম সমবায় সমিতি। তারা এখন পলু পোকা লালন-পালন করে রেশম চাষ করছে।

সিরাজগঞ্জ জেলা রেশম সম্প্রসারণ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, রেশম চাষ করতে ১ থেকে ২ হাজার টাকা ব্যয় করে মাত্র এক মাসে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব। বর্তমানে জেলার যমুনা চর ও নদী ভাঙ্গন কবলিত এলাকার ১০২ জন প্রশিক্ষিত নারী পুরুষ পলু পোকা পালনের মাধ্যমে রেশম চাষ করে সমৃদ্ধি অর্জন করেছে। ২১৫ জন রেশম চাষি তুত গাছ রোপণ করে রেশম চাষের প্রস্তÍুতি গ্রহণ করছেন।

বর্তমানে বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে এসব রেশম চাষীদের মধ্যে ৪০ হাজার টাকা মূল্যের ৫৯টি পলু পালন ঘর বিতরণ করেছে। আরও ৩০টি ঘর বিতরণের জন্য প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। গত ৫ বছর আগে থেকে যমুনা চরের বেলে দোআঁশ মাটিতে তুত গাছ রোপণ করে ভালো ফলন পাওয়ায় নদী ভাঙ্গন কবলিত এসব চরের মানুষের অনেকটা সমৃদ্ধ হবার সুযোগ হচ্ছে।

আগে রেশম চাষ করতে চাষিদের পলু পোকার ১শ ডিম সংগ্রহ করতে ২শ পাঁচ টাকা খরচ হলেও বর্তমানে রেশম চাষে উদ্বুদ্ধ করতে বোর্ডের পক্ষ হতে পলু পোকার এসব ডিম বিনামূল্যে বিতরণ করা হচ্ছে। রেশম বোর্ডের পক্ষ হতে তুত গাছ সরবরাহ করা হচ্ছে। প্রতিটি তুত গাছের ভর্তূকি মূল্য ধরা হচ্ছে ৫০ পয়সা। রেশম চাষীদের উৎপাদিত রেশম গুটি বোর্ডের মাধ্যমে প্রতি কেজি ৩শ ৫০ টাকা মূল্যে সংগ্রহ করা হচ্ছে।

সরেজমিনে সিরাজগঞ্জর সদর উপজেলার খোকশাবাড়ি ইউনিয়নের শৈলাবাড়ি গ্রাম ও কাওয়াকোলা ইউনিয়নের কাটেঙ্গা গ্রামে গিয়ে কথা হয় রেশম চাষিদের সাথে। এসময় শৈলাবাড়ি গ্রামের রেশম চাষি মরিয়ম বেগম জানান, রেশম চাষ অনেক অনেক লাভজনক। তাই এটি দেশের প্রত্যান্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে দিলে অনেক বেকার মানুষের কর্মসংস্থান হবে।

এই রেশম চাষের উপরেই আমার সংসার চলে। আমি দীর্ঘদিন ধরে রেশম চাষ করি। রেশম চাষ করে আমার ছেলে এমএ পাশ করেছে এক মেয়ে বিকম পাশ করেছে। আমার ঘর হয়েছে বাড়ি হয়েছে। আমার স্বামী বেচে নেই এই রেশম চাষের ব্যবস্থা না থাকলে এই প্রত্যন্ত চরে কি আর করার ছিলো আমার। রেশম চাষ আমার সংসার সমৃদ্ধ করেছে।

একই এলাকার রেশম চাষি হাসনা বানু জানান, আমার স্বামী ও আমার পরিবারের সবাই মিলে রেশম চাষ করি। রেশম চাষে তেম কোন ঝামেলা নেই বললেই চলে। আমাদের কোন জমি জমা নাই এই রেশম চাষের উপরেই আল্লাহ আমাদের খুব ভালো চালায়।

আমার থাকার ঘরের এক কোনায় মাচা পেতে পলু পোকার মাচা পেতেছি। বছরে চার বার ১শ করে পলু পোকার ডিম উঠাই। একবার ডিম উঠালে ২০ হতে ২৫ দিনের মধ্যেই রেশমের গুটি হয়। তাতে ১শ ডিমে রেশম হয় ৪০ থেকে ৭০ কেজি পর্যন্ত। রেশম বোর্ড ডিম দেয় আবার সেখানেই আমরা রেশম ওজন করে দিয়ে দেয়।

এ ব্যাপারে সিরাজগঞ্জ রেশম সম্প্রসারণ কেন্দ্রের ব্যাবস্থাপক মোঃ আকতার হোসেন জানান, বর্তমানে রেশম চাষের মাধ্যমে যমুনা চরের মানুষ বেশ সমৃদ্ধ হচ্ছে। যমুনা নদীর বিস্তীর্ণ চর এলাকায় বেলে দোআঁশ মাটিতে তুত গাছ ভালো হওয়ায় সেখানে রেশম চাষের ব্যাপক সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। পরীক্ষামূলক ভাবে রেশম বোর্ডের পক্ষ থেকে এটি শুরু করা হলেও এতে রেশম চাষিরা সফল হওয়ায় আমরা আশাবাদি।

তবে বাংলাদেশ রেশম বোর্ডেও জনবল স্বল্পতার কারণে এই কাজটি চরাঞ্চলে ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তাই যদি সরকারের পক্ষ থেকে বিষয়টিতে একটু সুনজর দেওয়া হয় তবে রেশম চাষের মাধ্যমেই যমুনা চরে মানুষের অর্থনৈতীক সমৃদ্ধি ঘটানো সম্ভব হবে বলেও জানান তিনি।

আলোকিত সিরাজগঞ্জ

শিরোনাম:

স্টেশনে যাত্রীরাই কাটতে পারবেন ট্রেনের টিকিট
এপ্রিলের ১৯ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ১২৮ কোটি ডলার
পুলিশকে সাহায্য করবে ক্রাইম জিপিটি!
পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে স্কুলজীবনের মজার স্মৃতিতে প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা
কাজিপুরে ভার্মি কম্পোস্ট সার বানিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু
১৪ কিলোমিটার আলপনা বিশ্বরেকর্ডের আশায়
আলো ছড়াচ্ছে কুষ্টিয়ার বয়স্ক বিদ্যালয়
মেয়েদের স্কুলের বেতন না দিয়ে ধোনিদের খেলা দেখলেন তিনি
‘ডিজিটাল ডিটক্স’ কী? কীভাবে করবেন?
তাপপ্রবাহ বাড়বে, পহেলা বৈশাখে তাপমাত্রা উঠতে পারে ৪০ ডিগ্রিতে
নেইমারের বাবার দেনা পরিশোধ করলেন আলভেজ
দেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীর