সংগৃহীত
সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়িতে গাভি পালন ও দুধ উৎপাদনের ইতিহাস প্রায় দেড়শ বছরের পুরোনো। তবে তীব্র তাপপ্রবাহে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন খামারিরা। গরমে গবাদিপশু খোলা মাঠে টিকতে পারছে না। ফলে পর্যাপ্ত কাঁচা ঘাস না পাওয়ায় গাভির দুধ উৎপাদন কমছে।
জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ সূত্র জানায়, জেলায় ছোট-বড় প্রায় ৩৩ হাজার গবাদিপশুর খামার রয়েছে। এসব খামারে পশু আছে ১৫ লাখেরও বেশি। যার প্রায় অর্ধেকই গাভি। এছাড়া দুই উপজেলায় খামারের পাশাপাশি বেশিরভাগ বাড়িতে দুধ উৎপাদনকারী একাধিক গাভি রয়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে জেলায় ৬ লাখ ৪০ হাজার টন দুধ উৎপাদিত হয়েছে। সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন দুগ্ধ সংগ্রহ ও প্রক্রিয়াজাতকারী প্রতিষ্ঠান খামারিদের কাছ থেকে দৈনিক প্রায় ৩ লাখ লিটার দুধ সংগ্রহ করেন। প্রতি লিটার দুধ গড়ে ৫৫ টাকা দরে কেনাবেচা হয়। সে হিসেবে দৈনিক বিক্রি দাঁড়ায় ১ কোটি ৬৫ লাখ টাকার ওপরে।
শাহজাদপুর উপজেলার রেশমবাড়ি গ্রামের ওয়াজেদ আলী জাগো নিউজকে বলেন, আমার ১২টি গাভি থেকে দুই মাস ধরে দুধ পাচ্ছি। কিন্তু তীব্র এ গরমে দুধের উৎপাদন কমে গেছে। আগে প্রতিদিন ক্রেতা প্রতিষ্ঠানকে ১৫০ লিটার দুধ দিতে পারলেও এখন সেটা কমে দাঁড়িয়েছে ১২০ লিটারে।
বাঘাবাড়ি এলাকার খামারি আবুল কালাম চৌধুরী জাগো নিউজকে জানান, তার খামারে শতাধিক গবাদিপশু রয়েছে। এরমধ্যে ৩৫টি গাভি আছে। তবে দুধ বিক্রি করে গাভিরই খাওয়ার খরচ উঠছে না। গরমে প্রায় ২০ শতাংশ দুধ উৎপাদন কমেছে।
বাঘাবাড়ি দুগ্ধ কারখানার উপ-মহাব্যবস্থাপক (সমিতি) ডা. ছাইদুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, প্রত্যেক মাসের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ২২৫টি সমিতির মাধ্যমে দুধ সংগ্রহ করা হয়। এ মাসে প্রতিদিন ৫০ হাজার লিটার দুধ সংগ্রহ করার কথা থাকলে গড় হিসেবে ৫২ হাজার লিটার দুধ সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে মে মাস থেকে প্রতিদিন ৯০ হাজার লিটার দুধ সংগ্রহ করা হবে।
তীব্র গরমে খামারিরা কারখানায় দুধ কম দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, গরমে দুধের উৎপাদন কমে গেলেও কারখানার চাহিদা পূরণে কোনো সমস্যা হচ্ছে না।
সিরাজগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. ওমর ফারুক জাগো নিউজকে বলেন, জেলার কয়েক লাখ পরিবার এসব গবাদিপশু পালন করে আয় করে। তবে তীব্র তাপপ্রবাহে তারা পশুপালনে হিমশিম খাচ্ছেন। আমরা নিয়মিত গবাদিপশুর বাড়তি যত্ন নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।