রোববার, ০৫ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

শাহজাদপুরে ‘দোলন খাতুন’ তার সন্তানের পিতৃ পরিচয় চায়

শাহজাদপুরে ‘দোলন খাতুন’ তার সন্তানের পিতৃ পরিচয় চায়

গতকাল শনিবার, ১১ মে- ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দ : স্বামী মালয়েশিয়া রাষ্ট্রে চাকরি করার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে প্রতিবেশী ৩ লম্পট এক গৃহবধূকে ধর্ষণ এবং ধর্ষণের বিষয় প্রকাশ না করার জন্য ভয়ভীতি প্রদান করার এক অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুধু তাই নয়, ওই ধর্ষণের ঘটনায় গর্ভবতী হওয়া ভিকটিম দোলন খাতুন অবশেষে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দিয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে, জেলার শাহজাদপুর উপজেলার পোতাজিয়া ইউনিয়নের রেশমবাড়ি গ্রামে। গৃহবধূর স্বামী দীর্ঘদিন প্রবাস জীবনে থাকার পরও গৃহবধূ দোলন খাতুন সন্তান প্রসব করায় তার সন্তানের পিতৃ পরিচয়ের দাবি জানিয়েছে ওই গৃহবধূ।

গৃহবধু দোলন, তার পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, রেশমবাড়ি গ্রামের মৃতঃ আফসার প্রামনিকের ছেলে ইউনুস আলীর সাথে একই উপজেলার বাড়াবিল গ্রামের মান্নান বিশ্বাসের মেয়ে দোলন খাতুনের ৯/১০ বছর আগে বিয়ে হয়। তাদের ঘরে নীরব (৮) এবং হাবিব (৫) নামের দুটি পুত্র সন্তান আছে। ইউনুস জীবিকার প্রয়োজনে প্রায় আড়াই বছর হলো মালয়েশিয়া রাষ্ট্রে চাকুরিতে গিয়েছে। ইউনুসের অনুপস্থিতির সুযোগে প্রতিবেশী লিটন মিয়া (২৩), পিতা- হাজী তয়জাল ফকির, ইয়াছিন (২৫), পিতা- মৃতঃ আফসার প্রামানিক, স্বপন ফকির (২৫), পিতা- মৃতঃ আব্দুর রহমান ফকির এই ৩ লম্পট মিলে গত ৩০/০৮/২০১৮ ইং বাংলা ১৫ ভাদ্র- ১৪২৫ খ্রি. বৃহস্পতিবার গভীর রাতে প্রকৃতির ডাকে দোলন খাতুন ঘরের বাহির হলে তাকে জোরপূর্বক নৌকায় তুলে গ্রাম থেকে একটু দূরে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এক পর্যায়ে দোলন অসুস্থ্য হয়ে পড়লে তাকে আবার ওই গভীর রাতেই বাড়ি পৌঁছে দেয় প্রতিবেশী ওই ৩ ধর্ষক। এ সময় ঘটনা প্রকাশ না করার জন্য গৃহবধূকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে যায় ৩ লম্পট। একদিকে জীবননাশের হুমকি, অপরদিকে স্বামী বিদেশ থাকা স্ত্রী হিসেবে লোকলজ্জার ভয় এই দুই বিবেচনায় প্রথম পর্যায়ে গৃহবধূ দোলন খাতুন বিষয়টি কাউকেই বলে নাই। কিন্তু গর্ভাবস্থা যখন একেবারেই প্রকাশ পেয়ে গেছে তখন সে ঘটনাটি ফাঁস করে দিয়েছে। এ নিয়ে দোলনের স্বামীর পরিবার ও বাবার পরিবার ধর্ষকদের বিরুদ্ধে সামাজিক বিচার দাবি করলেও ধর্ষকরা ও তাদের অভিভাবকরা প্রভাবশালী হওয়ায় আজকাল করে কালক্ষেপণ করে অবশেষে আর বিচার দেয়নি। এদিকে, গত ৮ মে -২০১৯ ইং বুধবার রাতে দোলন খাতুন তার পিত্রালয়ে একটি ফুটফুটে পুত্র সন্তান প্রসব করেছে। দোলনের স্বামী আড়াই বছর যাবৎ দেশের বাইরে আছেন। যে কারণে এ সন্তানের জনৈক সে নয়। তাহলে, এই সন্তানটির পিতৃ পরিচয় কী হবে তা নিয়ে উভয় পরিবার, এলাকাবাসী এবং সর্বোপরি দোলন খাতুনের মনে এ প্রশ্নই দেখা দিয়েছে। দোলন খাতুন তার সন্তানের পিতৃ পরিচয়ের দাবি জানিয়ে এ প্রতিবেদকের কাছে অঝর নয়নে কেঁদেছে। এলাকাবাসী এবং সুধীজনের অভিমত, হোক জোরপূর্বক ধর্ষণ বা হোক পরকিয়া ধর্ষণ, যাই বলি না কেন ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে অবুঝ শিশুটির পিতৃ পরিচয় নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
এ ব্যাপারে শাহজাদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান বলেন, ‘আমার কাছে  অভিযোগ দিলে ডিএনএ টেস্ট সহ আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।'
অপরদিকে ধর্ষকদের সাথে সংশ্লিষ্ট ইউপি মেম্বর আব্দুল কুদ্দুসকে মাধ্যম করে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে, ধর্ষকরা কেউ নিজে আবার কারো কারো অভিভাবক পরে কথা বলবো এ বলেই ফোন কেটে দেন। তবে, ঘটনায় জড়িত নয় এমন কোন বক্তব্য তারা কেউই দেয়নি।

আলোকিত সিরাজগঞ্জ

সর্বশেষ: