শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সিরাজগঞ্জে পলিনেট হাউসে ফুল চাষে সফল কৃষক

সিরাজগঞ্জে পলিনেট হাউসে ফুল চাষে সফল কৃষক

সিরাজগঞ্জের সদর উপজেলার পলিনেট হাউসে ফুলের চাষাবাদ করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন কৃষক শহীদুল ইসলাম। পলিনেট হাউসে দীর্ঘমেয়াদী ফুল চাষ করা যায়। শীতের ফুল গরমে এবং গরমের ফুল শীতে চাষাবাদ করা যায়। পলিনেট হাউসে ফুল চাষ সিরাজগঞ্জে কৃষকদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। ফুলের পাশাপাশি বিভিন্ন ফসলের চাষাবাদ করা হচ্ছে এই পলিনেট হাউসে। এখন আর জমি পতিত পড়ে থাকতে হবে না। পলিনেট হাউসে সারা বছরই চাষাবাদ করা হচ্ছে ফুল ও ফসলের।

বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) সরেজমিনে গেলে শহীদুল ইসলাম জানান, তার পলিনেট হাউসে ফুল চাষ করতে বছরে তার খরচ হচ্ছে ৫-৬ লাখ টাকা। আর ফুল বিক্রি করে বছরে লাভবান হচ্ছে ১০-১২ লাখ টাকা। এবছর আমার ফুলের বাম্পার ফলন হয়েছে। পলিনেট হাউসে চন্দ্র মল্লিকা, গাদা, গোলাপ ফুলে ছেয়ে গেছে। বর্তমানে আমার পলিনেট হাউস থেকে ফুল তুলতে ও বাজারজাত করতে ব্যস্ত সময় পার করছি।

তিনি আরো জানান, দেশের বিভিন্ন জেলায় এই ফুল বিক্রি করা হচ্ছে। ফুলের চাহিদা রয়েছে অনেক। আমার দেখা দেখি এ অঞ্চলের আরো অনেক কৃষক পলিনেট হাউসে ফুল ও সবজি চাষে উদ্যোগ নিয়েছে। ইতিমধ্যে দুজন কৃষক কাজ শুরু করে দিয়েছে।

সদর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, আধুনিক পদ্ধতির মাধ্যমে রাজশাহী বিভাগের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় সদর উপজেলার রতনকান্দিতে একটি পলিনেট হাউস নির্মাণ করা হয়েছে। এই পলিনেট হাউসের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে বিভিন্ন উচ্চ মূল্যে যে ফসল ও ফুল রয়েছে তার চাষাবাদ করা। বিশেষ করে লেটুস, ক্যাপসিকাম, বিভন্ন ফুল চাষাবাদ করা। আবার শীতকালীন ফুল ও ফসল গ্রীস্মকালীন সময়ে চাষ করা যায়। পলিনেট হাউসে আবহাওয়া নিয়ন্ত্রণ করা হয়। অনেক সময় শৈত্য প্রবাহ, খরা, অতিবৃষ্টি অনাবৃষ্টির কারনে উচ্চমূল্যের ফসল গুলো চাষাবাদ করতে সমস্যা হয়। কিন্তু পলিনেট হাউসে এই সমস্যা গুলো থাকবে না। আগাম ফসল এখানে চাষাবাদ করা হচ্ছে। এর ফলে কৃষক তার ন্যয্য মূল্য পাচ্ছে। আর্থিক ভাবে কৃষক লাভবান হবে।

ফুলচাষি শহীদুল ইসলাম আরো বলেন, পলিনেট হাউসের সুবিধা অনেক। গরমের সময় বা বৃষ্টির সময় বিভিন্ন প্রতিকুলতার সন্মুখীন হই। পলিনেট হাউসে চাষাবাদ করে প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে অনেক নিরাপদ থাকা যাচ্ছে। বৃষ্টির মধ্যে উন্নত মানের টমেটো, ক্যাপসিকাম, লেটুস, ফুলকপি, বাঁধাকপি পলিনেট হাউসে চাষাবাদ করতে পারবো। এতে অনেক মুনাফা অর্জন করতে সক্ষম হবো। এক সময় ফসল চাষাবাদের পর জমি ফাঁকা থাকতো। তখন কোন কিছু চাষাবাদ করতে পারি নাই। কিন্তু পলিটেন আসার পর এখন আর জমি পতিত থাকে না।

কৃষক আমিনুল ইসলাম বলেন, অন্যান্য আবাদের চেয়ে ফুল চাষ লাভজনক। আমাদের এখানে চাষাবাদ বেড়ে যাবে। বছরে আমাদের ৫-৬ লাখ টাকা খরচ হয়। লাভ হয় ১০-১২ লাখ টাকা। কৃষি অফিস থেকে আমাদের সহযোগিতা করে। তারা নিয়মিত খোাঁজ খবর নেয়। সমস্যা হলে সমাধানের চেষ্টা করে।

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা পতিত প্রবন রায় বলেন, পলিনেট হাউসে ফুল চাষ সিরাজগঞ্জে এই প্রথম। পলিনেট হাউসে দীর্ঘমেয়াদী ফুল চাষ করা যায়। শীতের ফুল গরমে এবং গরমের ফুল শীতে চাষাবাদ করা যায়। এটি খুব লাভজনক ব্যবসা। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সক পরামর্শা দেয়া হয়। পলিনেট হাউস তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রন করে। এটি অীতবৃষ্টি এবং গ্রীস্মকালে অনেক সময় ফসলের চারা মরে যায়। তবে পলিনেট হাউজে বার মাস যে কোন ফুল যে কোন সবজি চাষাবাদ করতে পারবো। এটি একটি ভালো জিনিস। এতে কৃষকও খুশি।

স্থানীয় আবুল কাশেম বলেন, প্রত্যন্ত অঞ্চলে পলিনেট হাউজে ফুলের চাষাবাদ হচ্ছে। এত বড় পলিনেট হাউস আর কোথাও নাই। এর মাধ্যমে কৃষক যেমন লাভবান হচ্ছে তেমনি শহিদুল ইসলামের পলিনেট হাউস দেখে অনেক কৃষক এই পদ্ধতিতে চাষাবাদ করার উদ্যেগ নিয়েছে। এটি দেখার জন্য মাঝে মধ্যে এখানে আসি। দেখতে খুব ভালো লাগে। মনোরোম পরিবেশ।

সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো: আনোয়ার সাদাত বলেন, আধুনিক পদ্ধতির মাধ্যমে রাজশাহী বিভাগের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় সদর উপজেলায় একটি পলিনেট হাউস নির্মান করা হয়েছে। এই পলিনেট হাউসের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে বিভিন্ন উচ্চ মূল্যে যে ফসল ও ফুল রয়েছে তার চাষাবাদ করা। বিশেষ করে লেটুস, ক্যাপসিকাম, বিভন্ন ফুল চাষাবাদ করতে পারি। আবার শীতকালীন ফসল গ্রীস্মকালীন সময়ে চাষ করা যায়। এই পলিনেট হাউসে আবহাওয়াকে নিয়ন্ত্রন করা হয়। অনেক সময় শৈত্য প্রবাহ, খরা, অতিবৃষ্টি অনাবৃষ্টির কারনে উচ্চমূল্যের ফসল গুলো চাষাবাদ করতে সমস্যা হয়। কিন্তু আমাদের এই পলিনেট হাউসে এই সমস্যাগুলো থাকবে না। আগাম ফসল এখানে চাষাবাদ করতে পারি। এর ফলে কৃষক তার ন্যয্য মূল্য পাচ্ছে। আর্থিক ভাবে কৃষক লাভবান হবে।

আলোকিত সিরাজগঞ্জ

শিরোনাম:

স্টেশনে যাত্রীরাই কাটতে পারবেন ট্রেনের টিকিট
এপ্রিলের ১৯ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ১২৮ কোটি ডলার
পুলিশকে সাহায্য করবে ক্রাইম জিপিটি!
পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে স্কুলজীবনের মজার স্মৃতিতে প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা
কাজিপুরে ভার্মি কম্পোস্ট সার বানিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু
১৪ কিলোমিটার আলপনা বিশ্বরেকর্ডের আশায়
আলো ছড়াচ্ছে কুষ্টিয়ার বয়স্ক বিদ্যালয়
মেয়েদের স্কুলের বেতন না দিয়ে ধোনিদের খেলা দেখলেন তিনি
‘ডিজিটাল ডিটক্স’ কী? কীভাবে করবেন?
তাপপ্রবাহ বাড়বে, পহেলা বৈশাখে তাপমাত্রা উঠতে পারে ৪০ ডিগ্রিতে
নেইমারের বাবার দেনা পরিশোধ করলেন আলভেজ
দেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীর