শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

পানি শূন্যতায় ধুঁকছে চলনবিল

পানি শূন্যতায় ধুঁকছে চলনবিল

বর্ষা মৌসুমে দেশের বৃহত্তম চলনবিলের মাঠ-ঘাট রাস্তা তলিয়ে যায় পানিতে। ছোট বড় সব নালা, খাল-বিল থৈ থৈ করে পানির কলতানে। পানিতে ভরপুর থাকে গোটা চলনবিল। বাহারী সব নৌকা পালতুলে কখনোবা ইঞ্জিন চালিয়ে দাপিয়ে বেড়ায় চলনবিল এলাকার নানা প্রান্তে।

তবে এবার চলনবিলে ভরা বর্ষাতেও পানি নেই। যার প্রভাব পড়েছে তিন জেলার ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া এই বিলের ওপর নির্ভরশীল মানুষের জীবন-জীবিকার ওপর। তারা এখন পেশা বদলীয়ে অন্য পেশা করছেন। নদী ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞদের মতে, দুই দশক আগেও আষাঢ় মাসে চলনবিল থাকত পানিতে টইটম্বুর। এখন গোটা বিল পানিশূন্য।

জলবায়ু পরিবর্তনের নির্মমতায় শিকার হতে চলছে এই বিল। এক সময় ধান ও মাছে পরিপুর্ণ ছিল চলনবিল। বিল ঘেঁষে গড়ে ওঠা শত শত দ্বীপের ন্যায় গ্রামগুলো পর্যটকদের আকর্ষণ করত। অধিকাংশ গ্রামবাসী মাছ আহরণ করে জীবিকা নির্বাহ করতো। বর্ষাকালে দূর-দূরান্ত থেকে হাজারো ভ্রমন পিঁপাসু মানুষগুলো চলনবিলকে কাছ থেকে একনজর দেখার জন্য ছুটে আসত । নৌ ভ্রমণের মাধ্যমে চলনবিলের নৈসর্গিক সৌন্দর্য উপভোগ করতেন তারা।

মুলত: নির্মল প্রাকৃতিক আবহাওয়া,জলে দোল খাওয়া, নানা প্রকার দেশী বিদেশী পাখির কলতান,দেশী মাছের স্বাধ,বিনোদন আর শহরের এক ঘেঁয়েমীপনা দুর করতেই পর্যটকরা আসতো দেশের নানা প্রান্ত থেকে। সেই সাথে স্থানীয় লোকদেরও দু’পয়সা আয় রোজগার হতো। বর্তমানে চলনবিল পানি শুন্য থাকায় বিলুপ্ত হতে বসেছে বিলের জীববৈচিত্র ও মৎস্য সম্পদ। ব্যাহত হচ্ছে কৃষি আবাদ।

তাড়াশ উপজেলা মৎস্য অফিসার মশগুল আজাদ জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ভরা মৌসুমেও চলনবিল পানি শুন্য হয়ে পড়েছে। তবে মৎস্যজীবিরা পেশা পরিবর্তন করছেন কিন্ত তাদের সরকার কোন সুবিধা দেননি। কারন যে সকল অঞ্চলে ইলিশ পাওয়া যায়, সেই সকল এলাকার জেলেদের সরকার বিভিন্ন সহায়তা দিয়ে থাকেন।

জানা যায়, রাজশাহী বিভাগের ৬ জেলার ১ হাজার ৮৮ বর্গকিলোমিটার এলাকা নিয়ে ছিল চলনবিল। বর্তমানে পাবনা, নাটোর ও সিরাজগঞ্জ এই তিন জেলার ১০টি উপজেলার, ৬২টি ইউনিয়নের ১ হাজার ৬০০ গ্রাম নিয়ে বৃহত্তর চলনবিল। বিলে রয়েছে ২১টি নদ-নদী, ৭১টি নালা-খাল ও ৯৩টি ছোট বিল। পাবনা, নাটোর ও সিরাজগঞ্জ জেলা মৎস্য অফিসের তথ্যমতে, চলনবিলে মাছের উৎপাদন ছিলো ১৯৯২ সালে ১৮ হাজার ৭০০ মেট্রিক টন, ১৯৯৭ সালে ১৫ হাজার ৪২১ মেট্রিক টন, ২০০২ সালে ১২ হাজার ৪৬০ মেট্রিক টন এবং ২০০৬ সালে উৎপাদন হয়েছে ১২ হাজার ১১৭ মেট্রিক টন। এই হিসাবে ২৪ বছরে চলনবিলে মাছের উৎপাদন কমেছে ৭২ দশমিক ৫ শতাংশ। গড় উৎপাদন কমেছে ১২ দশমিক ১ শতাংশ। প্রতিবছর উৎপাদন কমেছে ৩ শতাংশ।

তাড়াশ উপজেলার সগুনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জুলফিকার আলী ভুট্রু জানান, অতীতে চলনবিলে বর্ষা মৌসুমে পানিতে ভরপুর থাকতো। উঁচু জমিতে ফসল আবাদ, নদী-খালে মাছ শিকার চলত। অপরিকল্পিত উন্নয়নের কারণেই বৃহৎ এই বিল এখন পানিশূন্য। চলতি বর্ষা মৌসুমে পানিশূন্যতায় ধুঁকছে চলনবিলের জলাশয়গুলো। নেই তেমন বৃষ্টিপাতও।

তাই দেখা মিলছে না মাছের। তিনি আরো জানান, সাধারণ চলনবিল অঞ্চলে লোকজন শুকনো মৌসুমে অন্যের জমিতে কাজ করে আর বর্ষায় মাছ ধরে আর নৌকায় ভাড়া মেরে সংসার চলতো তাদের। কিন্তু এবার বর্ষায় বিলে পানি না আসায় তারা হতাশ। কারণ মাছ বিক্রি করেই ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়াসহ সংসারের যাবতীয় খরচ যোগাতে হয় তাদের।

আলোকিত সিরাজগঞ্জ

শিরোনাম:

স্টেশনে যাত্রীরাই কাটতে পারবেন ট্রেনের টিকিট
এপ্রিলের ১৯ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ১২৮ কোটি ডলার
পুলিশকে সাহায্য করবে ক্রাইম জিপিটি!
পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে স্কুলজীবনের মজার স্মৃতিতে প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা
কাজিপুরে ভার্মি কম্পোস্ট সার বানিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু
১৪ কিলোমিটার আলপনা বিশ্বরেকর্ডের আশায়
আলো ছড়াচ্ছে কুষ্টিয়ার বয়স্ক বিদ্যালয়
মেয়েদের স্কুলের বেতন না দিয়ে ধোনিদের খেলা দেখলেন তিনি
‘ডিজিটাল ডিটক্স’ কী? কীভাবে করবেন?
তাপপ্রবাহ বাড়বে, পহেলা বৈশাখে তাপমাত্রা উঠতে পারে ৪০ ডিগ্রিতে
নেইমারের বাবার দেনা পরিশোধ করলেন আলভেজ
দেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীর