নিশ্চয়ই জানেন, পানির অপর নাম জীবন। পানি ছাড়া বেঁচে থাকা অসম্ভব। সুস্থভাবে বাঁচতে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করা প্রয়োজন। নইলে দেহে নানা রকম সমস্যা দেখা দেবে। তাইতো প্রতিদিন কমপক্ষে ৭ থেকে ৮ গ্লাস পানি পানের পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা।
অনেক সময় কিছু রোগের কারণে শরীর থেকে বেশি পরিমাণে পানি বেরিয়ে যায়। যেমন- ডিহাইড্রেশন, অত্যাধিক ঘাম, বমি বা ডায়রিয়ার মতো রোগ হলে এই সমস্যা দেখা দেয়। যদিও স্বাভাবিকভাবে অনেকেই বুঝতে পারেন না যে তার শরীরে পানির ঘাটতি দেখা দিয়েছে।
তবে অনেক ক্ষেত্রে এই রোগগুলো ছাড়াও আমাদের শরীরে পানির অভাব হয় যেগুলো আমরা বুঝতে পারি না। কিন্তু আপনার শরীর ঠিকই জানান দেয় যে আপনি ডিহাইড্রেশনে ভুগছেন। আপনি যে পানি কম খাচ্ছেন, তা বোঝার রয়েছে কিছু লক্ষণ। চলুন তবে জেনে নেয়া যাক সেই লক্ষণগুলো-
মিষ্টি খাওয়ার প্রবণতা বাড়ে
পানিশূন্যতায় মিষ্টি খাওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পায়। শরীরের পানি কমে গেলে লিভার ঠিক মতো কাজ করতে পারে না। লিভার পানির সাহায্যে গ্লাইকোজেন তৈরি করে যা আমাদের শরীরে এনার্জি জোগায়। কিন্তু সেটা ঠিক মতো না হলে শরীরের আরও বেশি খাবারের প্রয়োজন হবে। তাই আপনার নোনতা স্ন্যাকস, চকলেট, মিষ্টি খাওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়।
মাথা ধরার সমস্যা দেখা দেয়
মাইগ্রেনের ব্যথা অনেক সময় ডিহাইড্রেশন থেকেই শুরু হয়। তাই সারাক্ষণ মাথা ধরে থাকলে একটা বড় গ্লাস ভর্তি করে পানি খান। সারা দিন ধরে মাঝেমাঝেই পানি বা অন্য কোনো পানীয়ে (ডিটক্স ওয়াটর, ফলের রস, শরবত, ইত্যাদি) চুমুক দিন। অনেকটাই রেহাই মিলবে।
মুখে দুর্গন্ধ হয়
মুখের লালায় অ্যান্টিব্যাকটিরিয়াল গুণ থাকে। কিন্তু পানি কম খেলে বেশি লালা তৈরি হয় না এবং মুখে ব্যাকটেরিয়া বেড়ে যায়। তা থেকেই মুখে দুর্গন্ধ তৈরি হয়। সকালে উঠে মুখ দিয়ে দুর্গন্ধ বেরোনোর কারণও তাই। ঘুমের সময় আমাদের শরীরের লালা উৎপাদন কম হয়। তাই সকালে উঠে মুখ ধুয়েই অনেকটা পানি খেয়ে নিতে পারেন।
ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়
অনেকের ধারণা খুব বেশি ঘামেন যারা, তাদের শরীরে ডিহাইড্রেশনের সমস্যা রয়েছে। তবে সত্যিটা কিছুটা আলাদা। ডিহাইড্রেশনের সমস্যা যখন অনেক বেড়ে যায়, তখন ত্বক শুকিয়ে যায়। কী করে বুঝবেন? হাতে চিমটি কেটে দেখুন। ত্বক কি অনেকক্ষণ কুঁচকেই থাকছে? স্বাভাবিক হতে সময় নিচ্ছে? তাহলে আপনার আরও পানি খাওয়া প্রয়োজন।
হাত-পায়ে টান ধরে
খুব গরমে যখন ব্যায়াম করেন, শরীরও গরম হয়ে যায়। তা ঠাণ্ডা হতে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানির প্রয়োজন। কিন্তু ডিহাইড্রেশন হলে, মাংসপেশিগুলো সেই পানিটা পায় না। তাই চট করে হাত-পায়ে টান লেগে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে মনে রাখবেন, পানি খুব কম খেলে ঠাণ্ডার মধ্যেও এই সমস্যা তৈরি হতে পারে।
আলোকিত সিরাজগঞ্জ