সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

জাতিসংঘে বাংলাদেশের প্রথম দুই নারী সামরিক পাইলট

জাতিসংঘে বাংলাদেশের প্রথম দুই নারী সামরিক পাইলট

 

জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীতে কাজ করছেন বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর সাহসী দুই নারী কর্মকর্তা ফ্লাইট ল্যাফটেনেন্ট তামান্না-ই-লুৎফি ও ফ্লাইট ল্যাফটেনেন্ট নাঈমা হক। সম্প্রতি জাতিসংঘ প্রকাশিত এক বিশেষ ভিডিওতে কঙ্গোতে কাজের অভিজ্ঞতাসহ পেশাদারিত্বের বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন তারা।

নিত্যনতুন চ্যালেঞ্জ নিয়ে সেখানকার দুর্গম পরিবেশ আর বৈরী আবহাওয়ার সঙ্গে দৃঢ়চিত্তে পাল্লা দিচ্ছেন তারা। বাংলাদেশের এই দুই সাহসী নারী এখন কঙ্গোর নারীদের রোল মডেল হয়ে উঠছেন। ভিনদেশে গিয়ে তারা হয়ে উঠেছেন স্থানীয়দের আস্থার প্রতীক। সেখানকার মানুষদের জরুরি স্বাস্থ্যসেবা এবং আহতদের সহায়তায় নিয়মিত এগিয়ে আসেন তারা।

এই দুঃসাহসিক অভিযাত্রার ক্ষেত্রে তাদের কাছে লিঙ্গভিত্তিক পরিচয়ের চেয়েও বৈমানিক পরিচয়টাই বড়। শক্ত হাতেই তারা সামলাচ্ছেন দায়িত্ব। 

ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তামান্নার ভাষায়, আমি কখনোই নিজেকে কেবলই একজন নারী হিসেবে পরিচয় দেই না। আমি মনে করি, আমি একজন পাইলট, একজন শান্তিরক্ষী। কারণ নারী নাকি পুরুষ, কে চালাচ্ছে মেশিনের তা বোঝার ক্ষমতা নেই। 

তিনি বলেন, স্থানীয় নারীদের কাছে আমরা এক বিশাল অনু্প্রেরণা। স্থানীয় নারীরা আমাদের দেখে পড়াশোনা করতে উদ্বুদ্ধ হয়। 

নাইমা ও তামান্না দুজনেরই বেড়ে ওঠা ঢাকায়। তামান্নার বাবা বিমানবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। তাই ছোটবেলা থেকে বিমানচালকই হতে চেয়েছিলেন তিনি। নাইমার বাবা অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা। মা-বাবা দুজনই চেয়েছিলেন মেয়ের বৈমানিক হওয়ার ইচ্ছাকে গুরুত্ব দিতে। তাদের পরিবারে ছেলেমেয়েকে কখনো আলাদা মনে করা হয় না। দুজনের পরিবারই তাদের সব সময় সাহস জোগায়। 

কঙ্গোতে যাওয়ায় নাইমা ও তামান্না দুজনই রোমাঞ্চিত। বাংলাদেশের মেয়েদের জন্য এটা বড় অর্জন। এই দুজনকে দেখে অনেক পরিবার তাদের মেয়ের বৈমানিক হওয়ার স্বপ্নপূরণ করতে উদ্যোগী হবে। 

বাংলাদেশ বিমানবাহিনী ২০০০ সালে প্রথম সামরিক বাহিনীতে নারী কর্মকর্তা নিয়োগ শুরু করে। সময়ের পরিক্রমায় বিমানবাহিনীর বিভিন্ন শাখার নারী কর্মকর্তারা বিমানবাহিনী ছাড়াও জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক অঙ্গণে পেশাদারিত্ব ও দায়িত্ববোধের পরিচয় দিয়ে যাচ্ছেন। 

সামরিক বৈমানিকের মত চ্যালেঞ্জিং ও ঝুঁকিপূর্ণ পেশায় নারী বৈমানিকদের গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় যাচাই বাছাইয়ের পর বিমানবাহিনীতে কর্মরত দুই জন নারী কর্মকর্তা ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট নাইমা হক ও ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তামান্না-ই-লুৎফি মনোনিত হন উড্ডয়ন প্রশিক্ষণে প্রশিক্ষণার্থী হিসেবে। 

বাংলাদেশ বিমানবাহিনী ঘাঁটি বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের ১৮ নং স্কোয়াড্রনে বেল-২০৬ হেলিকপ্টারে বেসিক কনভার্সন কোর্সের জন্য মনোনিত হওয়া দুই নারী কর্মকর্তা ২০১৪ সালের ৩ আগস্ট গ্রাউন্ড প্রশিক্ষণ শুরু করেন। 

২০১৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর প্রথমবারের মত তাদের উড্ডয়ন প্রশিক্ষণ শুরু হয়। পরবর্তীতে ২৫ ঘণ্টা সফল প্রশিক্ষণ উড্ডয়ন শেষে তারা একক উড্ডয়ন তথা প্রথম একক উড্ডয়ন সম্পন্ন করেন। এভাবে এই দুই নারী পাইলট ২০১৪ সালের ১৭ ডিসেম্বর তাদের প্রশিক্ষণের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ অতিক্রম করে বৈমানিক হয়ে ওঠার প্রাথমিক পর্যায় শেষ করেন।

প্রশিক্ষণরত বৈমানিকদ্বয় বেল-২০৬ হেলিকপ্টারে ৬৫ ঘণ্টা উড্ডয়নের প্রাথমিক ধাপ সম্পন্ন করার পর পরবর্তীতে বিমানবাহিনীর বিভিন্ন হেলিকপ্টার স্কোয়াড্রনে দায়িত্ব পালন করেন। তারা ২০৬ হেলিকপ্টার কনভার্সন কোর্স, এমআই-১৭, এমআই-১৭১ এবং এমআই-১৭১ এসএইচ হেলিকপ্টার প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত হন। 

২০১৪ সালের ডিসেম্বরে যশোরে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান ঘাঁটিতে ‘বেল ২০৬’ বিমান অবতরণের মাধ্যমে দেশের প্রথম কম্ব্যাট পাইলট হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন নাঈমা এবং তামান্না।

আলোকিত সিরাজগঞ্জ

সর্বশেষ:

শিরোনাম:

স্টেশনে যাত্রীরাই কাটতে পারবেন ট্রেনের টিকিট
এপ্রিলের ১৯ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ১২৮ কোটি ডলার
পুলিশকে সাহায্য করবে ক্রাইম জিপিটি!
পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে স্কুলজীবনের মজার স্মৃতিতে প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা
কাজিপুরে ভার্মি কম্পোস্ট সার বানিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু
১৪ কিলোমিটার আলপনা বিশ্বরেকর্ডের আশায়
আলো ছড়াচ্ছে কুষ্টিয়ার বয়স্ক বিদ্যালয়
মেয়েদের স্কুলের বেতন না দিয়ে ধোনিদের খেলা দেখলেন তিনি
‘ডিজিটাল ডিটক্স’ কী? কীভাবে করবেন?
তাপপ্রবাহ বাড়বে, পহেলা বৈশাখে তাপমাত্রা উঠতে পারে ৪০ ডিগ্রিতে
নেইমারের বাবার দেনা পরিশোধ করলেন আলভেজ
দেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীর