দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, জোর করে কেউ টাকা পকেটে দিয়ে যায় না, ঘুষ না চাইলে তা কেউ দেবে না। চাইতে হলে হাত পাততে হয়। আর মানুষের কাছ থেকে হাত পেতে ঘুষ নেয়া ভিক্ষাবৃত্তির সমান। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, ভিক্ষা করব কি না।
রোববার সকালে দুর্নীতি দমন কমিশনের কর্মকর্তাদের ‘আয়কর আইন ও বিধানাবলী সংক্রান্ত বিশেষ প্রশিক্ষণ কোর্স ও উপ -করকমিশনারদের রিফ্রেশার্স প্রশিক্ষণ কোর্স’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন দুদক চেয়ারম্যান।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (প্রশাসন) আরিফা শাহানার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, যে ট্যাক্স দেয়ার কথা সেটি যদি কেউ না দেন তাহলে দুদক আইনে তা আত্মসাৎ বলে গণ্য হবে, আত্মসাৎ করা দুর্নীতি। কারণ সেটা জনগণের টাকা, জনগণের হক। দুদক কখনো গণ্ডির বাইরে গিয়ে কিছু করতে চায় না। আমরা ট্যাক্স সংগ্রহ করি না, ব্যাংকের ঋণ তদারকিও করি না। কিন্তু ঋণ নিয়ে পালিয়ে গেলে সেটা দেখার এখতিয়ার দুদকের রয়েছে।
ইকবাল মাহমুদ বলেন, অনেক লোককে আমরা পেয়েছি যার কোনো ট্যাক্স ফাইল নেই কিন্তু বিএমডব্লিও গাড়ি হাঁকাচ্ছে। আমরা যখন দেখতে চাইলাম, এমন দামি গাড়ি কারা চালায়, তখন অনেকে সমালোচনা করেছে। আমরা চাই না কেউ জনগণের হক মেরে পোরশে গাড়ি (এক ধরনের বিলাসবহুল গাড়ি) চালাক।
দুদক চেয়ারম্যান আরো বলেন, এমনও লোক আছে ট্যাক্স রিটার্ন দাখিল করেনি কিন্তু ব্যাংক থেকে ১০০ কোটি টাকা নিয়ে চলে গেছে। এটা আমরা বন্ধ করতে চাই। দেশের উন্নয়নকে যদি টেকসই করতে চান তাহলে ইন্টারনাল রিসোর্স সিস্টেম থাকতে হবে।
তিনি বলেন, ১৬ কোটি মানুসের দেশে ট্যাক্স রিটার্ন দাখিল করে মাত্র ২০-২৫ লাখ মানুষ। এর থেকে লজ্জার আর কিছু নেই। এটা একটা জাতীয় লজ্জা। অথচ ট্যাক্স রিটার্ন দাখিল করার অর্থ হচ্ছে আপনি এদেশের মানুষ।
এনবিআরকে উদ্দেশ করে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, টাকা মানুষ ঘরে রেখে দেয়। কখনো বাসায় সার্চিং হয় না। হয়তো ইদানীং হচ্ছে। যদি সন্দেহ হয় তাহলে সার্চ করেন। ২০ লাখ লোক ট্যাক্স রিটার্ন দেয় আর ১২ লাখ ট্যাক্স দেয়-এটা সত্যি লজ্জাজনক। দুদক-এনবিআরের মধ্যে আমরা লিঙ্কআপ করতে পারছি না টেকনোলজি না থাকার কারণে।
বাংলাদেশে অবস্থান করা বিদেশিদের অনেকে ট্যাক্স দেয় না উল্লেখ করে দুদক চেয়ারম্যান আরো বলেন, এসব বিদেশিদের খুব সহজেই ধরার সুযোগ আছে। এনবিআর এনআইডি ধরে কাজ করুক, স্পেশাল ব্রাঞ্চ ও ইমিগ্রেশন শাখা সবাই কাজ করুন। ফিঙ্গারিং করুন। কে বেতন পাচ্ছে, কে ওভারটাইম স্টে করছে, ধরেন। চেইনের মধ্যে নিয়ে আসেন। জনগণের টাকা আত্মসাৎ করে বিদেশিরা চলে যাবে সেটা হতে দেয়া যায় না।
আলোকিত সিরাজগঞ্জ