বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১

দেশের মাটিতে তিন বছরেই গাছে ধরবে নারকেল

দেশের মাটিতে তিন বছরেই গাছে ধরবে নারকেল

এখন থেকে নারিকেলের চারা রোপণের সাত থেকে আট বছর পর ফুল/কুড়ি আসার অপেক্ষার পালা শেষ। দেশের মাটিতেই এখন তিন বছরের আগেই গাছে ধরতে শুরু করেছে নারিকেলের ফুল। তিন বছরের মাথায় পাওয়া যাবে নারিকেল বা ডাব।অর্থাৎ দেশের মাটিতে তিন বছরেই গাছে ধরবে নারকেল। এখন শুধু বাণিজ্যিকভাবে নারিকেল চাষের উন্মুক্ত হবার পালা।

ভিয়েতনামের নারকেল গাছের এই প্রজাতির নাম ‘ডুয়া এক্সিম লু’। এ জাতটি আবার দু’ধরনের, সিয়াম গ্রিন কোকোনাট এবং সিয়াম ব্লু কোকোনাট। সারা পৃথিবীতে এ পর্যন্ত দ্রুত নারকেল আসে এমন জাতের যেসব গাছের উদ্ভাবন এবং চাষাবাদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে তার মধ্যে ভিয়েতনামের এই জাতটি সবচেয়ে বেশি আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।

এই গাছ একটানা ৭০/৮০ বছর পর্যন্ত ফল দিতে পারে। স্বাদে-গন্ধে, আকার ও পুষ্টিমানে এটি অসাধারণ। এর পানি অত্যন্ত মিষ্টি ও সুস্বাদু। এছাড়া ভারতের ‘গঙ্গাবন্ধন’ জাতের নারকেল গাছেও দ্রুত ফল আসে। জানা গেছে, ‘ডুয়া এক্সিম লু’ নারকেলের জাতটির আদি উৎপত্তি থাইল্যান্ডে যা ‘সিয়াম’ নামে পরিচিত। বিশেষ করে দক্ষিণ-পূর্ব ও মধ্য থাইল্যান্ডে এই জাতের নারকেল ব্যাপক পরিচিত ও জনপ্রিয়।

কৃষি সম্প্রসারণ সূত্র বলছে, এখন পর্যন্ত চার লাখ খাটো জাতের নারিকেলের চারা আমদানি ও বিতরণ করা হয়েছে। যেসব জায়গায় প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে সেসব জায়গায় বিনামূল্যে চাষিদের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে চারা। এছাড়া প্রতিটি চারা কিনে নিতে হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এই হাইব্রিড নারিকেলের দশ হাজার চারাভারতের কেরালা প্রদেশ থেকে নিয়ে আসা হয়।

চাষীদের চারা রোপণের শুরু থেকে গাছে ফল আসা পর্যন্ত যত্ন ওপরিচর্যা বিষয়ে লিফলেট দেয়া হচ্ছে। এছাড়া যে কোনো সমস্যা হলে কৃষি হর্টিকালচার অফিসে যোগাযোগ করলে মিলছে সমাধান। তবে অতীতে দেশে বেসরকারিভাবে অনেকেই ওই নারিকেলের চাষ করছেন। সেখানেও সফলতা দেখা গেছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর হর্টিকালচার দৌলতপুরের উপসহকারী উদ্যান কর্মকর্তা সুভাষ চন্দ মন্ডল, উপসহকারী উদ্যান কর্মকর্তা মো. আক্তারুজ্জামান এবং উদ্যানতত্ত্ব বিদ এস. এম. এনামুল ইসলাম জানান, ভিয়েতনাম এবং ভারত দুই দেশ থেকে খাটো দুই জাতের নারকেলের চারা সংগ্রহ করা হয়েছে। সিয়াম গ্রিন কোকোনাট ডাব হিসেবে ব্যবহারের জন্য অতি জনপ্রিয়।

এ জাতের রং সবুজ, আকার কিছুটা ছোট, প্রতিটির ওজন ১.২-১.৫ কেজি। ডাবে পানির পরিমাণ ২৫০-৩০০ মিলি। গাছ প্রতি বছরে ফল ধরে ১৫০-২০০টি। এছাড়া সিয়াম ব্লু কোকোনাটও অতি জনপ্রিয় জাত। এটা ২০০৫ সালে উদ্ভাবন করা হয়। এটা কৃষকের খুব পছন্দের জাত।

চারা রোপণের আড়াই থেকে তিন বছরের মধ্যেই ফল ধরে, ফলের রং হলুদ, ওজন ১.২-১.৫ কেজি, ডাবের পানির পরিমাণ ২৫০-৩০০ মিলি। ডাবের পানি অতি মিষ্টি এবং শেল্ফ লাইফ বেশি হওয়ার কারণে এ জাতের ডাব বিদেশে রফতানি করা যায়। গাছ প্রতি বছরে ফলে ধরে ১৫০-২০০টি।

প্রায় সব ধরনের মাটি নারিকেল চাষের জন্য উপযোগী। তবে অতি শক্ত, কাঁকর শিলাময় মাটি হলে প্রায় দেড় মিটার চওড়া ও দেড় মিটার গভীর করে তৈরি গর্তে জৈব পদার্থ সমৃদ্ধ উপরিভাগের মাটি ও সার দিয়ে ভরাট করে গাছ লাগালে গাছ সুন্দরভাবে বেড়ে উঠবে এবং শুকনো মৌসুমে সেচের সুবিধা থাকলে অথবা বসতবাড়িতে সারা বছরই রোপণ করা যাবে। চারা রোপণের পর প্রতি তিন মাস পর পর সার প্রয়োগ করতে হবে। প্রতি লিটার পানিতে দুই গ্রাম হারে ম্যানকোজের গ্রুপের রোগনাশক মিশেয়ে আক্রান্ত ফলে ভালোভাবে স্প্রে করতে হবে।

দেশের মাটিতে তিন বছরেই গাছে ধরবে নারকেল শিরোনামে সংবাদের তথ্য জাগো নিউজ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে ।

 

 

আলোকিত সিরাজগঞ্জ