মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

গ্রামপুলিশকে জাতীয় গ্রেডে বেতন দেয়ার নির্দেশনা

গ্রামপুলিশকে জাতীয় গ্রেডে বেতন দেয়ার নির্দেশনা

গ্রামপুলিশের মধ্যে মহল্লাদারদের জাতীয় বেতন স্কেলের ২০তম গ্রেড এবং দফাদারদের ১৯তম গ্রেডে বেতন দিতে নির্দেশ দিয়ে হাইকোর্টের দেয়া পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়েছে। বিচারপতি মো: আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের স্বাক্ষরের পর সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে এ রায় প্রকাশ করা হয়। গত বছরের ১৫ ও ১৭ ডিসেম্বর হাইকোর্টের একই বেঞ্চ এ রায় প্রদান করেন।

গতকাল রিটকারীদের আইনজীবী হুমায়ন কবির পল্লব ১৮ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এর মাধ্যমে গ্রামপুলিশ বাহিনীর ৪৭ হাজার সদস্যকে জাতীয়করণের আদেশ দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান। রায়ে মহল্লাদারদেরকে জাতীয় বেতন স্কেলের ২০তম গ্রেড এবং গ্রামপুলিশদের ১৯তম গ্রেডে ২০১১ সালের ২ জুন থেকে সব বকেয়া বেতনভাতা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

রায়ে বলা হয়েছে, সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩১ মোতাবেক আইনানুযায়ী ব্যতীত কোনো ব্যক্তিকে তার ন্যায্য অধিকার থেকে তথা ন্যায্য প্রাপ্যতা থেকে তথা ন্যায্য প্রত্যাশা থেকে তথা আইনসম্মত অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যায় না। বর্তমান মোকদ্দামায় দরখাস্তকারীরাসহ সব মহল্লাদার ও দফাদারদের ন্যায্য অধিকার বিধিমালা ২০১১ অনুযায়ী বেতনভাতাদি পাওয়ার কথা। কিন্তু প্রতিপক্ষরা দরখাস্তকারীসহ সব মহল্লাদার ও দফাদারদের ন্যায্য অধিকার থেকে বেআইনিভাবে দীর্ঘদিন ধরে বঞ্চিত করে আসছে। রায়ে বলা হয়, সাধারণ মানুষের সবচেয়ে নিকটতম আত্মীয়ের মতো প্রজাতন্ত্রের ৭০ প্রকার কাজে সার্বক্ষণিক নিয়োজিত থাকেন গ্রামপুলিশ ও মহল্লাদাররা।

রায়ের আদেশ অংশে বলা হয়, ২০১১ সালের ২ জুন থেকে মহল্লাদারদের জাতীয় বেতন স্কেল ২০০৯ (বর্তমানে জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫) এর ২০তম গ্রেডে বেতনভাতাদি দিতে এবং দফাদারদের জাতীয় বেতন স্কেল ২০০৯ (জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫)এর ১৯তম গ্রেডে বেতনভাতাদি দিতে প্রতিপক্ষদের নির্দেশ দেয়া হলো।

আরো বলা হয়, ২০১১ সালের ২ জুনের পর থেকে স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) কর্মচারী চাকরি বিধিমালা ২০১১ বহির্ভূতভাবে মহল্লাদার ও দফাদার এর যেকোনো নিয়োগ অবৈধ ও বেআইনি মর্মে গণ্য হবে। ২ জুনের পর থেকে বিধিমালা ২০১১ বহির্ভূত যেকোনো নিয়োগ আপনা আপনি বাতিল।
আদালতে রিট আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী হুমায়ন কবির মো: মোজাম্মেল হক ও মোহাম্মদ কাওসার। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ওয়ায়েস আল হারুনী।

ঢাকার ধামরাইয়ের টুপিরবাড়ীর হাটকুশারা এলাকার বাসিন্দা লাল মিয়াসহ কয়েকজন গ্রামপুলিশ সদস্যের করা রিটে ২০১৭ সালের ৩ ডিসেম্বর রুল দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। ওই দিন হুমায়ন কবির বলেছিলেন, ব্রিটিশ আমল থেকে এ বাহিনী বিভিন্ন আইনের অধীনে কাজ করে আসছে। সর্বশেষ স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন ২০০৯ সালের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এ আইনের অধীনে ২০১৫ সালে স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) গ্রামপুলিশ বাহিনী গঠন, প্রশিক্ষণ, শৃঙ্খলা ও চাকরির শর্তাবলী সম্পর্কিত বিধিমালা তৈরি করা হয়। কিন্তু এ বিধিতে তাদের কোনো শ্রেণী নির্ধারণ করা হয়নি। ২০০৮ সালের স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় গ্রামপুলিশদের চতুর্থ শ্রেণীর স্কেল নির্ধারণে অর্থ বিভাগকে চিঠি দেন। কিন্তু কোনো সিদ্ধান্ত তারা না নেয়ায় হাইকোর্টে রিট করা হয় বলে জানান হুমায়ন কবির।

আলোকিত সিরাজগঞ্জ