কাজিপুরের ঢেকুরিয়া শহিদ মনসুর আলী ইকোপার্কের নৌঘাট। সকাল সকাল এই ঘাটে আসে খড় বোঝাই ১০/১২ টি ভটভটি (নসিমন)। এগিয়ে আসে জনা পঞ্চাশেক শ্রমিক। তারা গাড়ি থেকে খড়ের গাদা ঘাটের পাশে নামায়। এরপর খড়গুলো থেকে ছোট ছোট আটি তৈরি করে। এভাবে বিকেল অবধি কয়েকশ আটি তৈরি হয়ে যায়। এগুলো বহনের জন্যে ঘাটে উপস্থিত ১০/১২ টি নৌকা। শ্রমিকগণ সেই খড়ের আটিগুলো নৌকায় বিশেষ কায়দায় ভরে দেয়। এরপর নৌকার যাত্রা দূর দুরান্তের গন্তব্যে।
বুধবার (২২জুলাই) কাজিপুরের যমুনার ওই ঘাটে গিয়ে এমন চিত্র চোখে পড়েছে। এসময় কথা হয় স্থানীয় ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলামের সাথে। তিনি এই কাজের সাথে জড়িত।শহিদুল এই প্রতিবেদককে জানান, পাশের বগুড়া জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে খড়ের গাদা কিনে নেয়া নয়। পরে ভটভটিযোগে এই ঘাটে এনে তা নতুন করে আটি করা হয়। তিনি জানান, মাসে কমপক্ষে কুড়ি দিন এই ঘাটে গড়ে ৫০/৫৫ জন শ্রমিক কাজ করে। নৌকা বোঝাই করে দেবার চুক্তিতে তারা এই কাজ করে। নৌকা প্রতি তারা পাঁচশ থেকে ছয়শ টাকা করে পায়। বিশেষ করে বর্ষাকালে কড়ের চালান বেশি যায়।
কথা হয় এই ব্যবসার সাথে জড়িত আলমগীর হোসেনের সাথে। তিনি জানান, “এই ঘাট দিয়ে মাসে কমপক্ষ্যে এক থেকে দেড়শ নৌকা খড় নিয়ে দেশের নানা প্রান্তে যায়। সবচেয়ে বেশি খড় বোঝাই নৌকা সিরাজগঞ্জের চৌহালী, টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলায় যায়।” বছরের জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সব চেয়ে বেশি খড় বোঝাই নৌকা এই ঘাট থেকে ছেড়ে যায়। খড় বিক্রি করে খরচ বাদে প্রতি নৌকা থেকে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা লাভ হয় বলে তিনি জানান।
ঢেকুরিয়া ঘাটের লেবার সর্দার মোকতাল হোসেন জানান, “সপ্তাহে চার থেকে পাঁচদিন আমাদের ৫৫ থেকে ৬০ জন শ্রমিক এখানে কাজ করে। প্রতিজন দিনে গড়ে ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা করে তারা উপার্জন করে।”রোদ এবং বৃষ্টির সময়ে শ্রমিকদের আশ্রয়ের জন্যে এই ঘাটে একটি ছাউনি নির্মাণের দাবী জানান তিনি।
আলোকিত সিরাজগঞ্জ