কারবালার বিয়োগাত্মক ঘটনা ও পবিত্র আশুরা উপলক্ষে রোজা, নামাজ ও জিকিরের পাশাপাশি তাজিয়া মিছিল সম্পন্ন করেছেন শিয়া মতাদর্শীরা। আর সুন্নি মতাদর্শীরা পালন করছেন নফল রোজা, নামাজ ও জিকির আশকার।
মঙ্গলবার সকালে পুরান ঢাকার হোসনি দালান ইমামবাড়া থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে ধানমন্ডিতে পৌঁছে শেষ হয় তাজিয়া মিছিল। এ উপলক্ষে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর ছিল নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
হোসনি দালান ছাড়াও রাজধানীর পুরান ঢাকার ফরাশগঞ্জের বিবিকা রওজা, পুরানা পল্টন, মগবাজার এলাকা, মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্প ও মিরপুর-১১ নম্বরে বিহারি ক্যাম্পগুলোয় নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে আশুরা পালন করে। তারাও বের করে তাজিয়া মিছিল।
হোসনি দালান ইমামবাড়া থেকে তাজিয়া মিছিল আশুরার দিন সকাল ১০টায় তাজিয়া মিছিল বের হয়ে রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে ধীর গতির মিছিলটি দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে প্রতিকী কারবালা ধানমন্ডির সিমান্ত স্কয়ার লেকপাড়ে পৌঁছায় এবং লেকের পানিতে তাজিয়া বিসর্জনের মাধ্যমে মিছিল শেষ হয়। প্রতি বছরের মতো এবারো তাজিয়া মিছিলে অংশ নেয় হাজারো মানুষ।
ইতিহাসের বর্ণনা অনুযায়ী, এক মহররম বর্তমান ইরাকের কুফা নগরীর কাছে ফোরাত নদের তীরে কারবালা প্রান্তরে ইয়াজিদ বাহিনীর হাতে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন ইমান হোসাইন। নবীর আদরের নাতির পরিবার-পরিজন ও সঙ্গীদের জন্য ফোরাতের পানি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।
কুফার গভর্নর ইবনে জিয়াদের নিয়োজিত বাহিনীর প্রধান সাদ ইবনে ওমর ইয়াজিদকে ইসলামের খলিফা ঘোষণা করে তার হাতে বাইয়াত গ্রহণের জন্য ইমাম হোসাইনের ওপর চাপ দিতে থাকেন। কিন্তু তিনি ইসলামের আদর্শ রক্ষার স্বার্থে ইয়াজিদকে ইসলামের খলিফা ঘোষণা ও তার ইমামত স্বীকার করতে অস্বীকৃতি জানান। ইয়াজিদের বাইয়াত মানতে রাজি না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত নির্মমভাবে নবী দৌহিত্রকে হত্যা করা হয়।
মুসলিম উম্মাহর ইতিহাস অনুযায়ী মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন এ দিনেই পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন এবং এই দিনেই কেয়ামত বা পৃথিবী ধ্বংস হবে। বেহেস্ত থেকে মানব জাতির আদি পিতা হজরত আদম (আ.) ও মা হাওয়া (আ.) পৃথিবীতে আগমনের ঘটনা ঘটে এই দিনেই। আগমনের ৩০০ বছর প্রার্থনার পর এই দিনেই তারা মহান আল্লাহর ক্ষমা লাভ করেন। আর পৃথিবীতে এসে ক্ষমা লাভ করার পর আরাফার ময়দানে তাদের মধ্যে পুনরায় সাক্ষাৎ লাভও ঘটে এই দিনেই।
আলোকিত সিরাজগঞ্জ