শুক্রবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৮ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২

কাজিপুরের জনসংখ্যা প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট নির্মাণের চার বছর পরও চালু হয়নি

কাজিপুরের জনসংখ্যা প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট নির্মাণের চার বছর পরও চালু হয়নি

সংগৃহীত

সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার মাইজবাড়ি ইউনিয়নে নির্মাণের চার বছরেও চালু হয়নি আঞ্চলিক জনসংখ্যা প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট। ২২ কোটি টাকার প্রকল্পটি শুরু হয় ২০১৭ সালে। নির্মাণ কাজ পুরোপুরি শেষ হয় ২০২১ সালে। প্রতিবন্ধীদের সুরক্ষাবিষয়ক প্রশিক্ষণ কার্যক্রম এবং মাঠপর্যায়ে কর্মরতদের ২২ ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়ার লক্ষ্যে ইনস্টিটিউটটি নির্মাণ করে সরকার। এখানে আবাসিক সুবিধাসহ পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শিকাদের ১৮ মাস মেয়াদি প্রশিক্ষণ সুবিধা রয়েছে।

প্রতিষ্ঠানটির মূল ফটকে টানানো সিটিজেন চার্টারে দেখা যায় মিডওয়াইফারি ও ইনডাকশন প্রশিক্ষণের পাশাপাশি অফিস ব্যবস্থপনা আর স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিষয়ে মাঠপর্যায়ে বছরে মোট এক হাজার ২৫০ জনের প্রশিক্ষণ নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। সরেজমিনে ওই প্রতিষ্ঠানে গিয়ে দেখা গেছে, বড় বড় চারটি নতুন ভবনের ফটকে তালা ঝুলছে। দেখেই বোঝা গেল এগুলোর ব্যবহার নেই।

ডাইনিং রুমের জন্যে কেনা চেয়ার টেবিলের মোড়কই খোলা হয়নি। চার তলা হোস্টেলে প্রশিক্ষণার্থীর জন্য আসন রয়েছে ৮০টি। কিন্তু এখন পর্যন্ত একটিও কাজে লাগেনি। প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষের জন্য নির্ধারিত ভবনটি পড়ে আছে। তবে আট ইউনিটের চারতলা স্টাফ কোয়ার্টারে একজন মাত্র অফিস সহকারী পরিবার নিয়ে বসবাস করেন। নাম আতাহার আলী। বাকি অফিসার্স কোয়ার্টার পুরোপুরি ফাঁকা। আর জনবল না থাকায় একাডেমিক ভবনের সব কক্ষই তালাবদ্ধ।

প্রতিষ্ঠানটি দেখাশোনার দায়িত্বে রয়েছেন কয়েকজন নিরাপত্তাকর্মী। শুরু থেকেই জনবল সংকট, এলাকার পানিতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন, আর প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু না হওয়ায় স্থানীয় মানুষের মাঝে এই প্রতিষ্ঠান ঘিরে এক ধরণের অসন্তোষ বিরাজ করছে।

মাইজবাড়ি ইউপি সদস্য ফরিদুল ইসলাম বলেন, তিন একরের বেশি জমির ওপর বহুতল ভবনগুলোর নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে বেশ কয়েক বছর আগে। কিন্তু প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ শুরু হয়নি এখনও। এ কারণে এলাকার মানুষ স্বাস্থ্যসেবা থেকে যেমন বঞ্চিত হচ্ছে তেমনি প্রায় ২২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ইনস্টিটিউটটি কোনো কাজেই আসছে না।

অফিসার্স ও স্টাফ কোয়ার্টারের দুইটি চারতলা ভবন পড়ে আছে শুরু থেকেই। তিনতলা একাডেমিক ভবন, চার তলা হোস্টেলের অবস্থায় একই। সব মিলে এলাকার মানুষ এই প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে বিরূপ মন্তব্য করতে শুরু করেছেন বলেও জানান তিনি।

অফিস সহকারী আতাহার আলী বলেন, অনেক চেষ্টার পর বসানো টিউবওয়েলের পানিও পানের অযোগ্য। ওই ইনন্সটিটিউটে পারিবারের সদস্যদের নিয়ে আসার পর কয়েক দিনের মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়তে শুরু করে বাড়ির লোকজন। দেখা দেয় পেটের অসুখ আর সঙ্গে প্রস্বাবের ইনফেকশন। পরিবারের লোকজনের চিকিৎসার জন্য ইতোমধ্যে ব্যয় হয়েছে আমার ৪০ হাজার টাকা। এ সমস্যার সমাধান না হলে প্রশিক্ষণ নিতে আসা নারী-পুরুষ নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত হতে পারে বলেও তিনি নিজের অভিজ্ঞতা থেকে জানান।

শুরু থেকেই এই প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে রয়েছেন ডা. মো.মোদ্দাবেরুল ইসলাম। তাঁর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘জনবলের অনুমোদন হয়েছে ১৫ জনের। এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি চালু করতে প্রশাসনিক অনুমোদনসহ আর্থিক অনুমোদনও মিলেছে।’ কবে নাগাদ এটি চালু হতে পারে- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আশা করা যায় সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী বছরের শুরুর দিকে চালু হবে এ ইন্সটিটিউটট। ডা. মোদ্দাবেরুল আরো বলেন, ইনস্টিটিউটের পানিতে মাত্রাতিরিক্ত আয়রনের বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। তাঁরাও গুরুত্ব সহকারে দেখছেন।

সর্বশেষ:

শিরোনাম: