শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১

সিরাজগঞ্জে খেজুর গুড় তৈরিতে ব্যস্ত গাছিরা

সিরাজগঞ্জে খেজুর গুড় তৈরিতে ব্যস্ত গাছিরা

শীতের শুরু থেকেই বাড়ছে খেজুর রসের চাহিদা। পাশাপাশি রস জ্বালিয়ে তৈরি হচ্ছে সুস্বাদু দানা ও ঝোলা গুড় ও পাটালী। উৎপাদিত এসব গুড়-চাটালী এলাকার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় সববরাহ করা হচ্ছে।জেলার তাড়াশ উপজেলায় খেজুর রস সংগ্রহ ও রস জ্বালিয়ে গুড় তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা।

নভেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত চলবে তাদের ওই কর্মযজ্ঞ। তাদের উৎপাদিত গুড় এলাকার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় সরবরাহ করা হচ্ছে।কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বিভিন্ন রাস্তায়, বসতবাড়ি, পুকুরপাড় ও পতিত জমি ও পরিত্যাক্ত ভিটে-ভাটিতে অযত্ন অবহেলায় ছোট-বড় প্রায় ১৫ থেকে ২০ হাজার খেজুর গাছ রয়েছে। এসব গাছ থেকে প্রতিবছর প্রায় ১ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন রস সংগ্রহ করে থাকে গাছিরা।

যা থেকে তৈরি হয় ১৫ থেকে ২০ মেট্রেক টন খেজুর গুড়। উৎপাদিত এসব গুড় স্থানীয় হাট-বাজার ও দেশের জেলা-উপজেলাগুলোতে বিক্রি হয়ে থাকে।শীত মৌসুমের শুরুতেই খেজুর রস থেকে গুড় তৈরির জন্য রাজশাহী জেলার বাঘা ও চারঘাট, নাটোরে গুরুদাসপুর, বড়াইগ্রাম ও সিংড়া উপজেলা থেকে আসা ৩০ থেকে ৩৫টি গাছীর দল তাড়াশ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় তারা ভাটি স্থাপন করেছেন।

রাজশাহীর বাঘা উপজেলার তুলশীপুর (হরিপুর) গ্রামের গাছী মো. পলাশ হোসেন জানান, কার্তিকের মাঝামাঝিতে এসে এলাকার খেজুর গাছ মালিকদের কাছ থেকে গাছ প্রতি ৩ কেজি থেকে সাড়ে ৩ কেজি গুড়ের বিনিময়ে খেজুর গাছগুলো লিজ নেয়া হয়। এসব গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরি করা হয়। চলতি মৌসুমে প্রতিটি গাছ থেকে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ কেজি গুড় তৈরি করা সম্ভব হবে বলে আশা করছি।

উপজেলার দেশিগ্রাম ইউনিয়নের মাঝদক্ষিণা গ্রামের মো. আবু নাসের জানান, দেশিগ্রাম, তালম, মাধাইনগর, সগুনা ও নওগা ইউনিয়নে খেজুর গাছ তুলনামূলক বেশি। ওই অঞ্চলগুলোতে গাছিরা ভাটি স্থাপন করে খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করেন এবং তা থেকে গুড়-পাটালি তৈরি করে থাকেন।

তাড়াশের খেজুর গুড় কিনতে ঢাকা থেকে এসেছেন আবু তালেব। তিনি পাইকারী দরে গুড় কিনে ঢাকাতে বিক্রি করবেন। তিনি বলেন, শীতের সময় খেজুর রস, গুড়-পাটালির বেশ চাহিদা থাকে শহরের মানুষের কাছে। শীতের বিভিন্ন পিঠা-পুলি, পায়েস তৈরীর জন্য খেজুর গুড়ের জুড়ি নেই। গুড়ের বাজার একটু বেশি হলেও ক্রেতারা ভালো মানের গুড় পেতে অত্যন্ত আগ্রহী।

তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ লুৎফুন্নাহার লুনা জানান, শীত মৌসুমে খেজুরের রস থেকে তৈরিকৃত গুড় সবার কাছেই বেশ সমাদৃত। খেজুর রস থেকে কৃষকের বাড়তি আয় হয়। সেজন্য কৃষকদের বাড়ির আঙ্গিনায়, পুকুরপাড়ে, পতিত জমি ও ভিটে-ভাটিতে থাকা খেজুর গাছের যত্ন নেয়া প্রয়োজন।

আলোকিত সিরাজগঞ্জ

সর্বশেষ: