শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

সুবর্ণ খাতুননের পড়াশুনার দায়িত্ব নিলেন এসিল্যান্ড

সুবর্ণ খাতুননের পড়াশুনার দায়িত্ব নিলেন এসিল্যান্ড

সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার সয়দাবাদ গ্রামের ভূমিহীন দিনমজুর সুজাব আলীর মেয়ে সুবর্ণ খাতুনকে দারিদ্র্যের কারণে পড়াশুনা ছাড়িয়ে দিয়ে বাল্যবিবাহ দেয়ার দিন ধার্য্য করে তার পরিবার। গত ২২ মার্চ ২০১৯ শুক্রবার  তার বিয়ের দিন ধার্য্য ছিল।তার বাড়িতে যথারীতি বিয়ের আয়োজন চলছিল।ঠিক সেই সময়ে সাথে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়ে বিয়ে বাড়িতে হাজির হন সদরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আনিসুর রহমান।তিনি সুবর্ণের বাল্যবিবাহ বন্ধ করে দেন। সুবর্ণ খাতুন সয়দাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির একজন মেধাবী ছাত্রী।

তার বাবা কিছুদিন পূর্বে স্ট্রোক করে কাজ করার সক্ষমতা হারিয়েছেন।সুজাব আলীর ০৩ মেয়ে ও ০২ ছেলে।ইতিপূর্বে তিনি তার বড় মেয়েকেও আর্থিক অনটনের কারণে বাল্যবিবাহ দিয়েছেন।ছেলে দুটোও অল্পবয়সে তাতপল্লীতে কাজ করে। সুবর্ণ তার বাবার ৪র্থ সন্তান।তার পড়ালেখা করার খুবই ইচ্ছা। কিন্তু পিতার আর্থিক অনটনের কারণে মেধা থাকা সত্ত্বেও মেধা বিকাশের সুযোগ পাচ্ছিল না। কথা প্রসংগে সুবর্ণ জানায়, সে সিরাজগঞ্জ জেলার জেলা প্রশাসক  কামরুন নাহার সিদ্দীকাকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়েছে।তিনি যদি নারী হয়েও জেলা প্রশাসক হতে পারেন,তবে আমি চেষ্টা করলে কেন পারব না।

আমিও নিজের পায়ে দাড়াতে চাই। এছাড়া সুবর্ণের পবিবারের মাথা গোজার ঠাই পর্যন্ত নেই। তারা কোন রকমে অন্যের পরিত্যক্ত বাড়িতে থাকে।বাল্যবিবাহ বন্ধ হওয়ার কারণে সে খুশি হয়েছে।এই কথাগুলো শুনে সুবর্ণের পড়াশুনার দায়িত্ব নেন সদরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ আনিসুর রহমান। তার অষ্টম শ্রেনীর পড়ালেখার আনুসাঙ্গিক বই ও খাতাপত্র প্রদান, খন্ডকালীন অনুদানসহ মাসিক বৃত্তি এবং তার পরিবারের জন্য কৃষি খাস জমি বন্দোবস্ত দেয়ার ব্যবস্থা করেন তিনি। সুবর্ণ ৭ম থেকে ৮ম শ্রেণীতে ৩য় স্থান পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছিল। দরিদ্র পরিবারের মেয়েটির পড়াশোনার দায়িত্ব নেয়ায় এসিল্যান্ডের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন সুবর্ণের বাবা-মা।আবেগ আপ্লুত হয়ে সুবর্ণের মা মর্জিনা বেগম বলেন, "এসিল্যান্ড স্যার মেয়ের পড়াশোনার খরচ নিজের হাতে না নিলে আমাদের পক্ষে সম্ভব ছিলনা।

এখন আমরা আর মেয়েকে বাল্যবিবাহ দিব না।মেয়েটি পড়াশোনা করে অনেক বড় হতে চায়,তার সে স্বপ্নটি এখন পূরণ হবে। স্যারের মত সমাজের আরও ব্যক্তিরা যদি এগিয়ে আসত তবে অনেক দরিদ্র পরিবারের মেয়েরা বাল্যবিবাহের মত অভিশাপ থেকে রক্ষা পেত।" সয়দাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হারুন অর রশিদ জানান, "সুবর্ণ খুব মেধাবী ছাত্রী কিন্তু আর্থিক অনটনের কারণে তার পরিবার এতদিন পড়াশোনার আনুসঙ্গিক বই ও খাতাপত্র পর্যন্ত কিনে দিতে পারত না। এখন আশাকরি সে ভাল করে পড়ালেখা করে দেশে মুখ উজ্জ্বল করবে এবং আমরাও তার দিকে বিশেষ নজর রাখব যাতে সে আরও ভাল করতে পারে।" উল্লেখ্য যে সদরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) সদর উপজেলায় এ বছরের জানুয়ারি থেকে অদ্যাবধি ১৩ সপ্তাহে ২১ (একুশ)টি বাল্যবিবাহ বন্ধ করেছেন এবং তিনি যমুনানদী বিধৌত চৌহালীতে কর্মকালীন সময়ে ৩৩ সপ্তাহে ৩৪ টি বাল্যবিবাহ বন্ধ করেছেন।

আলোকিত সিরাজগঞ্জ

শিরোনাম:

স্টেশনে যাত্রীরাই কাটতে পারবেন ট্রেনের টিকিট
এপ্রিলের ১৯ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ১২৮ কোটি ডলার
পুলিশকে সাহায্য করবে ক্রাইম জিপিটি!
পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে স্কুলজীবনের মজার স্মৃতিতে প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা
কাজিপুরে ভার্মি কম্পোস্ট সার বানিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু
১৪ কিলোমিটার আলপনা বিশ্বরেকর্ডের আশায়
আলো ছড়াচ্ছে কুষ্টিয়ার বয়স্ক বিদ্যালয়
মেয়েদের স্কুলের বেতন না দিয়ে ধোনিদের খেলা দেখলেন তিনি
‘ডিজিটাল ডিটক্স’ কী? কীভাবে করবেন?
তাপপ্রবাহ বাড়বে, পহেলা বৈশাখে তাপমাত্রা উঠতে পারে ৪০ ডিগ্রিতে
নেইমারের বাবার দেনা পরিশোধ করলেন আলভেজ
দেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীর