সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫, ৫ কার্তিক ১৪৩২

অস্টিওপোরোসিসে কেন অবহেলা করবেন না

অস্টিওপোরোসিসে কেন অবহেলা করবেন না

সংগৃহীত

অস্টিওপোরোসিস মানে ছিদ্রযুক্ত হাড়। এ রোগে হাড়ের ঘনত্ব কমে যায়। ফলে হাড় ভঙ্গুর হয়ে পড়ে এবং খুব সামান্য আঘাতেই ভেঙে যেতে পারে। এই রোগে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় মেরুদণ্ড, কোমর ও কবজির হাড়।

হাড় দুর্বল হলেও শুরুতে কোনো উপসর্গ দেখা দেয় না বলে অস্টিওপোরোসিসকে ‘নীরব রোগ’ বলা হয়। এ ছাড়া এই রোগের প্রথম লক্ষণই অনেক সময় হাড় ভেঙে যাওয়া। তখন আর কিছু করার থাকে না।

বিশ্বে ২০ কোটির বেশি মানুষ এ রোগে আক্রান্ত। গবেষণা বলছে, প্রতি তিনজন নারীর একজন এবং পাঁচজন পুরুষের একজন কোনো এক পর্যায়ে অস্টিওপোরোটিক ভাঙনের শিকার হন। এটা শুধু ব্যথা বা বিকলাঙ্গতা নয়, অনেক সময় দীর্ঘমেয়াদি প্রতিবন্ধকতা ও মানসিক কষ্টের কারণ।

ঝুঁকিতে যাঁরা

বাংলাদেশে নারীদের মধ্যে হরমোনের ভারসাম্যহীনতা ও পুষ্টিহীনতার কারণে রোগটির প্রকোপ বাড়ছে। অস্টিওপোরোসিসজনিত হাড় ভাঙা নারীদের শয্যাশায়ী হওয়ার অন্যতম কারণ। এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন—

  • ৫০ বছরের বেশি বয়সী নারী ও পুরুষ।

  • রজঃনিবৃত্ত (মেনোপজ) পরবর্তী নারী।

  • ধূমপায়ী ও অতিরিক্ত মদ্যপানকারী ব্যক্তি।

  • যাঁরা কম ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি গ্রহণ করেন।  

  • কায়িক শ্রম বা ব্যায়ামের অভাব।

  • দীর্ঘদিন স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ সেবনকারী।

প্রতিরোধই সেরা উপায়

অস্টিওপোরোসিস সম্পূর্ণ নিরাময়যোগ্য নয়। তবে প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। জীবনযাপনে কয়েকটি পরিবর্তন আনলেই হাড় শক্ত রাখা যায়।

পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম গ্রহণ: দুধ, দই, পনির, ছোট মাছ, শাকসবজি, তিল ইত্যাদিতে প্রচুর ক্যালসিয়াম থাকে।

ভিটামিন ডি: প্রতিদিন রোদে ১৫-২০ মিনিট থাকলে শরীরে ভিটামিন ডি তৈরি হয়। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শে সাপ্লিমেন্ট নিতে হয়।

নিয়মিত ব্যায়াম: হাঁটা, সিঁড়ি ভাঙা, হালকা দৌড় বা ওজন নিয়ে ব্যায়াম হাড় মজবুত রাখে।

ধূমপান ও অ্যালকোহল পরিহার: এগুলো হাড়ের গঠন ব্যাহত করে ও ক্যালসিয়াম শোষণ কমায়।

হাড়ের পরীক্ষা: বয়স ৫০ পার হলে বা ঝুঁকিপূর্ণ গোষ্ঠীর সদস্য হলে বছরে অন্তত একবার হাড়ের ঘনত্ব পরীক্ষা করা উচিত।

শেষ কথা

পরীক্ষায় অস্টিওপোরোসিস প্রমাণিত হলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ ব্যবহার করা হয়। অস্টিওপোরোসিস নীরবে হাড় ক্ষয় করে, কিন্তু সময়মতো সচেতনতা ও ব্যবস্থা নিলে এর ক্ষতি রোধ করা সম্ভব। ভালো খাদ্যাভ্যাস, রোদে থাকা, নিয়মিত ব্যায়াম, আর সময়মতো পরীক্ষা—এই চারটি অভ্যাসই আপনার হাড়কে ভাঙন থেকে রক্ষা করতে পারে।

সূত্র: প্রথম আলো

সর্বশেষ:

শিরোনাম: