শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

কাজলে রেখা টানছেন সাদিয়া

কাজলে রেখা টানছেন সাদিয়া

সংগৃহীত

মায়াবী চাহনি। মুখে রাজ্যের একরাশ হাসি লেগেই থাকে। ভক্তরা তার হাসিতে কুপোকাত তো বটেই, অভিনয়েও মুগ্ধ। তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পাতা চোখ বুলালেই নজরে আসে দর্শকদের অগণিত ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া। বলছিলাম অভিনেত্রী সাদিয়া আয়মানের কথা।

২০১৯ সালে পড়াশোনা করতে বরিশাল থেকে ঢাকায় আসা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির বছরখানেকের মধ্যেই যুক্ত হয়ে পড়েন শোবিজে। একটি ফেসবুক পোষ্ট মারফত পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগ। মূল বিপত্তি বাঁধে পরিবারের অনুমতিতে। কারণ বড় হয়েছেন রক্ষণশীল পরিবারে। তবে সাদিয়া ঠিকই তার আত্মবিশ্বাস, মেধা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে নিজেকে প্রমাণ করেছেন।

কখনো ‘ফুলের নামে’, কখনো ‘মায়াশালিকে’

২০১৯ সালে প্রথম নাটকে কাজ করেন সাদিয়া আয়মান। তবে আলোচনায় আসেন মিজানুর রহমান আরিয়ানের ‘ফুলের নামে নাম’ নাটকের মধ্য দিয়ে। সাদিয়া আয়মানের ভাষায়, ‘‘ফুলের নামে নাম’ কাজটি আমার ক্যারিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট। এটি দিয়েই আমি দর্শকদের কাছে পৌঁছাতে পেরেছি।’’

এরপর বেশ কিছু দারুণ কাজ করে মুগ্ধতা ছড়িয়েছেন। বিশেষ করে ‘মায়াশালিকে’র জারা’ ওয়েব ফিল্মে মিষ্টি হাসির অভিনয়ে মুগ্ধতা ছড়িয়েছে তিনি। পরিচালক শিহাব শাহীন তিনি তার অভিনয়-মেধাকে দুর্দান্তভাবে কাজে লাগাতে পেরেছেন। তার চাঞ্চল্য এবং কিশোরীর চরিত্র নিশ্চয়ই প্রশংসাযোগ্য। এমনকি যখন শাড়িতে আবির্ভাব হয়েছেন, তখনও মাননসই ভাবে ফুটিয়েছেন তখনকার আবহ।

চ্যালেঞ্জ, এনজয়...

গত দেড় বছরে নাটক ও ওয়েব ফিল্মে বেশ ব্যস্ততা বেড়েছে সাদিয়া আয়মানের। তবে প্রস্তাব পেলেই যে কাজ করছেন, আয়মানের ক্ষেত্রে বিষয়টা এমনও নয়। তিনি বলেন, ‘অনেক কাজের প্রস্তাবই আসে, তার মধ্যে যেগুলো ভালো মনে হয় সেগুলোই করার চেষ্টা করছি। একদম যা পাচ্ছি তা করছি না। একটা সময় মনে হতো আমি বোধহয় রোমান্টিক চরিত্রগুলো করতে পারবো না বা আমাকে দিয়ে হবে না। কিন্তু এখন সেটা অনেকটাই কাটিয়ে উঠতে পেরেছি। দর্শকরা রোমান্টিক গল্পের কাজগুলোই বেশি পছন্দ করছেন।’

তবে রোমান্টিক হোক বা ভিন্ন ঘরানার চরিত্র, সব ক্ষেত্রেই রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন চ্যালেঞ্জ। সাদিয়া আয়মানের কথায়, ‘একটি নাটক দু’দিনের মধ্যে করতে হয়। এই সময়ের মধ্যে অনেকগুলো দৃশ্য করতে হয়। আবার কখনো কখনো একই সময়ের মধ্যে হ্যাপি মোমেন্টের অভিনয় করছি, তারপর আবার স্যাড কিছু করতে হলো। অল্প সময়ের মধ্যে চরিত্রে ঢুকে পড়াটা একটু চ্যালেঞ্জিং মনে হয়। তবে আমি এনজয় করি আমার কাজকে।’

প্রথম সিনেমা

সাদিয়া আয়মানের প্রথম সিনেমা ‘কাজলরেখা’। ‘মনপুরা’খ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা গিয়াসউদ্দিন সেলিমের এই সিনেমায় নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন তিনি। আসন্ন রোজার ঈদে এ সিনেমার মুক্তি উপলক্ষে গত ৯ মার্চ সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানেই প্রথম সিনেমা নিয়ে তার প্রত্যাশার কথা জানালেন সাদিয়া আয়মান। তিনি বলেন, ‘কাজলরেখা নিয়ে আমার অনেক প্রত্যাশা। এ সিনেমায় অনেক গান রয়েছে। বাংলাদেশে যে সুন্দর সুন্দর লোকসংগীত রয়েছে, তা এ সিনেমায় দর্শকরা আবারো প্রমাণ পাবেন।’

কাজলরেখার জন্যই বেড়ে গিয়েছিল অভিনেত্রী সাদিয়ার ফলোয়ার্স। চমকে যাওয়া সেই ঘটনা শোনালেন সংবাদ সম্মেলনেই! সাদিয়া আয়মান বলেন, ‘ছোট্ট একটা মজার ঘটনা বলি, আমি তখন ঢাকার বাইরে ছিলাম। ঢাকাতে ব্যাক (ফেরা) করার জন্য বাবার সঙ্গে টিকিট কাটতে গিয়েছি, তো বাসায় ফিরে যখন আমি ফেসবুকে ঢুকে অবাক হই।’

‘বাসা থেকে বের হওয়া সময় ফেসবুকে সম্ভবত আমার ফলোয়ার্স ছিল দুই হাজারের মতো কিংবা তিন-চারের কাছাকাছি, তবে দশের কাছাকাছি ছিল না-এটা নিশ্চিত। তারপর বাসায় ফিরে আমি দেখি যে, পনেরো-সতেরো হাজারের মতো ফলোয়ার্স হয়ে গেছে। কারণ, কোনো এক নিউজে ভাইয়া (সেলিম) কাজলরেখায় আমাকে কাস্টিংয়ের কথা বলেছিলেন। এছাড়া কিছু পেজ থেকেও আমাদের কাস্টিং লিস্ট (অভিনয়শিল্পী তালিকা) দিয়ে দেওয়া হয়েছিল, সেখান থেকেই সবাই আমাকে খুঁজে বের করেছেন।’

সিনেমায় মনোযোগী হতে চান...

নাটক এবং কিছু ওটিটির প্রজেক্টের বাইরে সিনেমার প্রস্তাবও পাচ্ছেন সাদিয়া আয়মান। তার মনও সায় দিচ্ছে বড় পর্দায় কাজ করতে। কিন্তু হুটহাট কোনো সিদ্ধান্ত তিনি নিতে চান না। তার কথায়, ‘এখন নাটকের চেয়ে সিনেমার জন্য মন সায় দিচ্ছে অর্থাত্ টানছে বেশি এবং এটা খুব স্বাভাবিক। কারণ, একটা সিনেমাতে কাজ করেছি। এরমধ্যে কয়েকজনের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে তবে চূড়ান্ত পর্যায়ে বলার মতো এখনো কিছু হয়নি।

সিনেমার আলাদা অভিজ্ঞতা নিয়ে তিনি বলেন, ‘কাজ করতে গিয়ে বুঝেছি, সিনেমা আসলেই আলাদা এবং অন্যরকম। এখানে ফ্রেমিং আলাদা, ডায়লগ ডেলিভারি দেওয়ার ধরণও আলাদা, ল্যাঙ্গুয়েজই আলাদা। এখানে কাজ করার মজাই অন্যরকম। সত্যি বলতে সিনেমার জেস্টারই একদম আলাদা। সামনে হয়তো সুখবর আসতেও পারে।’

সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক

সর্বশেষ: