শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

গোয়েন্দা নজরদারিতে ১০ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান

গোয়েন্দা নজরদারিতে ১০ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান

গত তিন বছর ধরে কোরবানির ঈদের সময় কাঁচা চামড়া কেনা-বেচা হচ্ছে পানির দরে। মূলত আন্তর্জাতিক বাজারের পরিস্থিতি ছাড়াও দামের ওঠা-নামা করে চামড়া কেনার জন্য স্থানীয় ব্যাংকগুলো থেকে ঋণ পাওয়া বা না পাওয়ার উপর।

আর রেওয়াজ অনুযায়ী, প্রতি বছরই ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে কাঁচা চামড়া কিনতে ব্যবসায়ীদের ঋণ দিয়ে থাকে ব্যাংকগুলো। এবারও তার ব্যত্যয় হচ্ছে না। যদিও গত বছর ব্যাংকগুলো যে পরিমাণ ঋণ বরাদ্দ রেখেছিল, তার সামান্যই ঋণ নিয়েছিলেন চামড়া ব্যবসায়ীরা। অন্যদিকে তহবিল সংকটে পড়েছিলেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। অর্থের অভাবে অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী চামড়া কিনতে পারেননি। এর ফলে গত বছর চামড়া বিক্রি হয়েছিল পানির দামে।

এক কথায়, ব্যাংকগুলো ঋণ দেয় ট্যানারি মালিকদের। ফড়িয়া বা মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীরা ব্যাংক থেকে কোনও ঋণ পান না। কোনও কারণে ট্যানারি মালিকরা ব্যাংক থেকে ঋণ না পেলে চামড়ার আড়তদারদের ঝুঁকি নিতে নিষেধ করেন, আর আড়তদাররা ট্যানারি মালিকদের কথা অনুযায়ী ফড়িয়া বা মৌসুমি ব্যবসায়ীদের ঝুঁকি নিতে নিষেধ করে দেন। এমন পরিস্থিতিতে কাঁচা চামড়ার বাজারে ধস নামে। গত তিন বছর ধরে এভাবে কাঁচা চামড়া পানির দরে বিক্রি হয়েছে।

পরিসংখ্যান বলছে, প্রতিবছর চামড়া খাতে ৫০০ কোটি টাকার বেশি ঋণ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেয় রাষ্ট্রীয় মালিকানার ব্যাংকসহ বেসরকারি কয়েকটি ব্যাংক। কিন্তু বিতরণ হয় ৯০ কোটি টাকার নিচে।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহীন আহমেদ বলেন, প্রতিবছর ব্যাংকগুলো থেকে বলা হয় ৫০০ কোটি, ৬০০ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে। কিন্তু আমরা পাই মাত্র ৬০/৬৫ কোটি টাকার মতো। তিনি বলেন, গত বছর ৬৪৪ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখলেও আমরা পেয়েছি মাত্র ৬৫ কোটি টাকা। তিনি আরও বলেন, এই খাতের সংকট কাটিয়ে উঠতে হলে নতুন করে ৪০০ থেকে ৫০০ কোটি টাকা অর্থায়ন করা প্রয়োজন।

এদিকে চলতি বছর কোরবানির চামড়া কেনার জন্য রাষ্ট্রায়ত্ত চার ব্যাংক ঋণ বরাদ্দ করেছে প্রায় ৪৬২ কোটি টাকা। যা গত বছরের চেয়ে প্রায় অর্ধেক।

চামড়া খাতে সরকারি সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রূপালী, বেসিক ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (বিডিবিএল) সবচেয়ে বেশি ঋণ বিতরণ করে। এছাড়া বেশ কয়েকটি ব্যাংক কিছু ঋণ বিতরণ করে থাকে।

জানা গেছে, এবার সোনালী ব্যাংক চামড়া কেনার জন্য ২৫ কোটি টাকা ঋণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অগ্রণী ব্যাংক দেবে ৭০ কোটি টাকা। জনতা ব্যাংক দিতে চায় ১৪০ কোটি টাকা। তবে চলতি বছর ব্যবসায়ীদের জন্য সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ রেখেছে সরকারি মালিকানাধীন রূপালী ব্যাংক। রাষ্ট্রায়ত্ত এ ব্যাংকটি এবার ২২৭ কোটি টাকার ঋণ বরাদ্দ রেখেছে।

এছাড়া বেসরকারি খাতের ইসলামী ব্যাংক ৬৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকা বরাদ্দ রেখেছে। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক আড়াই কোটি টাকা, এনসিসি ব্যাংক ৫০ লাখ টাকা এবং দি সিটি ব্যাংক ২০ লাখ টাকা ব্যবসায়ীদের চামড়া কিনতে বরাদ্দ রেখেছে।

এর আগে গত বছর ঈদুল আজহায় কাঁচা চামড়া কিনতে পাঁচ রাষ্ট্রায়ত্তসহ ৯ বাণিজ্যিক ব্যাংক ৬৪৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ রেখেছিল।

উল্লেখ্য, গত বছর কাঁচা চামড়া কিনতে অগ্রণী ব্যাংক বরাদ্দ রেখেছিল ১৮০ কোটি টাকা, রূপালী ব্যাংক রেখেছিল ১৫৫ কোটি, জনতা ব্যাংক ১০০ কোটি, সোনালী ব্যাংক ৭১ কোটি, বেসিক ব্যাংক তিন কোটি। বাণিজ্যিক ব্যাংকের মধ্যে ইসলামী ব্যাংক গত বছর বরাদ্দ রেখেছিল ৫০ কোটি টাকা, ঢাকা ব্যাংক ৫০ কোটি, প্রাইম ব্যাংক ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ রেখেছিল।

জানা গেছে, গত বছর চামড়া কেনার জন্য ব্যাংকগুলো ৬৪৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখলেও বিতরণ হয়েছিল মাত্র ৬৫ কোটি এক লাখ টাকা। এই ঋণের ৪৫ কোটি টাকা আদায় হয়েছে।

গত বছর অগ্রণী ব্যাংক সবচেয়ে বেশি ১৮০ কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছিল। কিন্তু ব্যাংকটি ঋণ বিতরণ করেছে ২০ কোটি ৬৫ লাখ টাকা।

রূপালী ব্যাংক গত বছর চামড়া খাতে ঋণ দেওয়ার জন্য ১৫৫ কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছিল। বিতরণ করেছে ১১ কোটি টাকা। জনতা ব্যাংক ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দের বিপরীতে কোনও ঋণই বিতরণ করেনি। রাষ্ট্রায়ত্ত খাতের সবচেয়ে বড় সোনালী ব্যাংক গত বছর ৭১ কোটি টাকা বরাদ্দের বিপরীতে ঋণ বিতরণ করেছে ২০ কোটি ১৫ লাখ টাকা।

বেসিক ব্যাংক তিন কোটি টাকা বরাদ্দ রাখলেও কোনো ঋণ বিতরণ করেনি। এবারও ব্যাংকটি চামড়া কিনতে কোনও অর্থই বরাদ্দ রাখেনি।

বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকের মধ্যে ইসলামী ব্যাংক গত বছর ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দের বিপরীতে ১২ কোটি ২১ লাখ টাকা ঋণ দিয়েছে। আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক গত বছর ৮০ কোটি টাকা বরাদ্দের বিপরীতে ঋণ দিয়েছে এক কোটি টাকা।

ব্যাংকাররা বলছেন, ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে ট্যানারিগুলোর তা পরিশোধ না করার প্রবণতা রয়েছে। তবে এবার ৩ শতাংশ জমা দিয়ে পুরনো ঋণ পুনঃতফসিলের সুবিধা দেওয়া হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে  অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ শামস্ উল ইসলাম বলেন, যারা ঋণ নিয়ে ফেরত দিচ্ছে কেবল তাদেরকেই ঋণ দেওয়া হচ্ছে। গত বছর কোরবানির ঈদে ঋণ নিয়ে যারা পরিশোধ করেছে তারা ঋণ পাবে। যদি তারা অর্ধেক ঋণ পরিশোধ করেন তাহলে ঋণও অর্ধেক পাবেন।

এদিকে অগ্রিম জমা ছাড়াই চামড়া ব্যবসায়ীদের ঋণ দিতে বিশেষ ঋণ সুবিধা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গত ১৩ জলাই জারিকৃত সার্কুলারে বলা হচ্ছে, আগের বছরের অপরিশোধিত ঋণের ৩ শতাংশ ডাউন পেমেন্টে ৩ বছর মেয়াদে পুনঃতফসিল করার সুযোগ পাবে চামড়া ব্যবসায়ীরা। এছাড়া অগ্রিম জমা অর্থাৎ কোনও ধরনের কম্প্রোমাইজড অ্যামাউন্ট ছাড়াই এবার ঋণ নিতে পারবেন। এ সুবিধা চলতি বছরের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত পাবেন কাঁচা চামড়ার ব্যবসায়ীরা।

আলোকিত সিরাজগঞ্জ

শিরোনাম:

স্টেশনে যাত্রীরাই কাটতে পারবেন ট্রেনের টিকিট
এপ্রিলের ১৯ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ১২৮ কোটি ডলার
পুলিশকে সাহায্য করবে ক্রাইম জিপিটি!
পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে স্কুলজীবনের মজার স্মৃতিতে প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা
কাজিপুরে ভার্মি কম্পোস্ট সার বানিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু
১৪ কিলোমিটার আলপনা বিশ্বরেকর্ডের আশায়
আলো ছড়াচ্ছে কুষ্টিয়ার বয়স্ক বিদ্যালয়
মেয়েদের স্কুলের বেতন না দিয়ে ধোনিদের খেলা দেখলেন তিনি
‘ডিজিটাল ডিটক্স’ কী? কীভাবে করবেন?
তাপপ্রবাহ বাড়বে, পহেলা বৈশাখে তাপমাত্রা উঠতে পারে ৪০ ডিগ্রিতে
নেইমারের বাবার দেনা পরিশোধ করলেন আলভেজ
দেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীর