সংগৃহীত
কোরআনের মূল পরিচয় হলো এই যে, এটি ‘কালামুল্লাহ’ (كَلاَمُ اللهِ) বা আল্লাহর কালাম। যা সরাসরি আল্লাহর নিকট থেকে এসেছে। (সহিহ ইবনু হিববান হা/৭৭৪; নিসা ৪/৮২; আন‘আম ৬/১১৫; আ‘রাফ ৭/৩৫; হামীম সাজদাহ ৪১/৪২; ওয়াক্বি‘আহ ৫৬/৭৭-৮২; হাক্কাহ ৬৯/৪৩; দাহর ৭৬/২৩)
সৃষ্টিজগত দুনিয়াবী চোখে কখনোই তার সৃষ্টিকর্তা আল্লাহকে দেখতে পাবে না (আন‘আম ৬/১০৩)। তবে তার ‘কালাম’ দেখে, পড়ে, শুনে ও বুঝে হেদায়াত লাভ করতে পারবে। কোরআনের ভাব ও ভাষা, এর প্রতিটি বর্ণ, শব্দ ও বাক্য আল্লাহর। জিবরাইল (আ.) ছিলেন বাহক। (সূরা: বাকারা, আয়াত: ৯৭; সূরা: শু‘আরা, আয়াত: ১৯৪; সূরা: তাকভীর, আয়াত:১৯) এবং রাসূল (সা.) ছিলেন এর প্রচারক ও ব্যাখ্যাতা। (সূরা: মায়েদাহ, আয়াত: ৬৭; সূরা: নাহল, আয়াত: ৪৪, ৬৪)
কোরআন লওহে মাহফুজে (সুরক্ষিত ফলকে) লিপিবদ্ধ ছিল’ (সূরা: বুরূজ, আয়াত: ২১-২২)। সেখান থেকে আল্লাহর হুকুমে ক্রমে ক্রমে নাজিল হয়েছে। (সূরা: আলে ইমরান, আয়াত: ৩; সূরা: ইসরা, আয়াত: ১০৬; সূরা: ফুরক্বান, আয়াত: ৩২; সূরা: যুমার, আয়াত: ২৩)
শেষনবী মুহাম্মাদ (সা.) এর আগমনের পর বিগত সব নবীর নবুয়াত শেষ হয়ে গিয়েছে এবং কোরআন অবতরণের পর বিগত সব ইলাহি কিতাবের হুকুম রহিত হয়ে গেছে। ঈসা (আ.)-সহ বিগত সব নবীই শেষনবী মুহাম্মাদ (সা.) এর আগমনের সুসংবাদ দিয়ে গেছেন (সূরা: ছফ, আয়াত: ৬) এবং তারা শেষনবীর আমল পেলে তাকে সর্বান্তঃকরণে সাহায্য করবেন বলে আল্লাহর নিকটে অঙ্গীকারাবদ্ধ হয়েছিলেন (সূরা: আলে ইমরান, আয়াত: ৮১)
এমনকি তওরাত ও ইনজিলে সর্বশেষ উম্মী নবীর আগমনের সুসংবাদ লিপিবদ্ধ ছিল (সূরা: আ‘রাফ, আয়াত: ১৫৭)। সে হিসাবে মুহাম্মাদ (সা.) কেবল আখেরি জামানার নবী নন, বরং তিনি ছিলেন বিগত সব নবীর নবী। অনুরূপভাবে তার আনীত কিতাব ও শরিয়ত বিগত সব কিতাব ও শরিয়তের সত্যায়নকারী (সূরা: বাকারা, আয়াত: ৪১, ৯১, ৯৭; সূরা: আলে ইমরান৩, ৫০; সূরা: নিসা, আয়াত:৪৭; সূরা: মায়েদাহ, আয়াত: ৪৮; সূরা: ফাত্বের, আয়াত: ৩১; সূরা: আহক্বাফ, আয়াত: ৩০) এবং পূর্ণতা দানকারী (সূরা: মায়েদাহ, আয়াত: ৩)।
অতএব, পবিত্র কোরআন বর্তমান পৃথিবীর একমাত্র ইলাহি কিতাব এবং সব মানুষের জন্য একমাত্র পথপ্রদর্শক ইলাহি গ্রন্থ।
এর সর্বাধিক প্রসিদ্ধ নাম হলো ‘কোরআন’। যার অর্থ ‘পরিপূর্ণ’ যেমন বলা হয়, قَرَأتِ الْحَوْضُ ‘হাউজ কানায় কানায় পূর্ণ হয়েছে’। সমস্ত জ্ঞানের ভান্ডার পূর্ণভাবে সঞ্চিত হওয়ার কারণে কালামুল্লাহকে ‘কোরআন’ বলা হয়েছে।
ইবনুল ক্বাইয়িম (রহ.) একথা বলেন (রহমাতুল্লিল ‘আলামিন ৩/২৪১)। আল্লাহ বলেন, وَتَمَّتْ كَلِمَتُ رَبِّكَ صِدْقًا وَّعَدْلاً ‘তোমার প্রভুর কালাম সত্য ও ন্যায় দ্বারা পূর্ণ’। (সূরা: আন‘আম, আয়াত: ১১৫)। অর্থাৎ কোরআনের প্রতিটি কথাই সত্য এবং প্রতিটি বিধানই ন্যায় ও ইনসাফপূর্ণ। ذَلِكَ الْكِتَابُ لاَ رَيْبَ فِيهِ এই কিতাবে কোনোরূপ ত্রুটি বা সন্দেহ নেই। (সূরা: বাকারা, আয়াত: ২) কোরআন ব্যতীত পৃথিবীতে এমন কোনো ধর্মগ্রন্থ নেই, যা তার শুরুতেই নিজেকে সন্দেহমুক্ত বলে ঘোষণা করেছে। -সূত্র: বাংলা হাদিস
পবিত্র কোরআন পড়া প্রত্যেক মুসলিম উম্মাহর জন্য অপরিহার্য, আমরা কোরআন শুধু তেলাওয়াতই করব না বরং তা বুঝব এবং সেইসঙ্গে নিজেদের জীবনে প্রয়োগ করব।
পবিত্র কোরআন মহান আল্লাহ তাআলা মানব জাতির হেদায়েতের জন্য নাজিল করেছেন। রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তাআলা এই কোরআনে ইহকালে মানুষের দৈনন্দিন পথ চলার এবং পরকালের আমল সঙ্গে নেয়ার সার্বিক পথ সুনির্দিষ্টভাবে বাতলে দিয়েছেন।
পবিত্র কোরআনের পরিচয় ও তথ্যকণিকা
(১) প্রশ্ন: পবিত্র কোরআনুল কারিমে কতটি সূরা আছে?
উত্তর: ১১৪টি।
(২) প্রশ্ন: পবিত্র কোরআনের প্রথম সূরার নাম কী?
উত্তর: সূরা ফাতিহা।
(৩) প্রশ্ন: পবিত্র কোরআনের সবচেয়ে বড় সূরার নাম কী?
উত্তর: সূরা বাকারা।
(৪) প্রশ্ন: পবিত্র কোরআনের সবচেয়ে ছোট সূরার নাম কী?
উত্তর: সূরা কাওছার।
(৫) প্রশ্ন: পবিত্র কোরআনের মধ্যে সবচেয়ে বড় আয়াত কোনটি কোন সূরায়?
উত্তর: সূরা বাক্বারার ২৮২ নম্বর আয়াত।
(৬) প্রশ্ন: পবিত্র কোরআনের মধ্যে সবচেয়ে ফজিলতপূর্ণ আয়াত কোনটি?
উত্তর: আয়াতুল কুরসী। (সূরা বাক্বারা ২৫৫ নম্বর আয়াত।
(৭) প্রশ্ন: ফরজ নামাযান্তে কোন আয়াতটি পাঠ করলে, মৃত্যু ছাড়া জান্নাতে যেতে কোনো বাধা থাকে না?
উত্তর: আয়াতুল কুরসী।
(৮) প্রশ্ন: পবিত্র কোরআনের কোন সূরাটি পাঠ করলে কবরের আযাব থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে?
উত্তর: সূরা মুলক। (৬৭নম্বর সূরা)।
(৯) প্রশ্ন: পবিত্র কোরআনের কোন সূরাটি কোরআনের এক তৃতীয়াংশের সমান?
উত্তর: সূরা ইখলাছ। (১১২ নম্বর সূরা)।
(১০) প্রশ্ন: পবিত্র কোরআনের কোন সূরার প্রতি ভালোবাসা মানুষকে জান্নাতে নিয়ে যাবে?
উত্তর: সূরা ইখলাছ।
(১১) প্রশ্ন: কোন সূরাটি পবিত্র কোরআনের চতুর্থাংশের সমপরিমাণ?
উত্তর: সূরা কাফেরূন। (১০৯ নম্বর সূরা)।
(১২) প্রশ্ন: পবিত্র কোরআনের কোন সূরাটি জুমার দিন বিশেষভাবে পাঠ করা মুস্তাহাব?
উত্তর: সূরা কাহাফ (১৮ নম্বর সূরা)।
(১৩) প্রশ্ন: পবিত্র কোরআনের কোন সূরার প্রথমাংশ তেলাওয়াতকারীকে দাজ্জালের ফেতনা থেকে রক্ষা করবে?
উত্তর: সূরা কাহাফের প্রথম দশটি আয়াত। (১৮ নম্বর সূরা)।
(১৪) প্রশ্ন: পবিত্র কোরআনের কোন দু’টি সূরা জুমার দিন ফজরের নামাজে তেলাওয়াত করা সুন্নাত?
উত্তর: সূরা সাজদা ও দাহার।
(১৫) প্রশ্ন: পবিত্র কোরআনের কোন দু’টি সূরা জুমার নামাজে তেলাওয়াত করা সুন্নাত?
উত্তর: সূরা আ’লা ও গাশিয়া।
(১৬) প্রশ্ন: পবিত্র কোরআন কত বছরে নাজিল হয়?
উত্তর: তেইশ বছরে।
(১৭) প্রশ্ন: ‘মুহাম্মাদ’ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এরনাম পবিত্র কোরআনে কত স্থানে উল্লেখ হয়েছে?
উত্তর: চার স্থানে। (১) সূরা আলে ইমরান আয়াত- ১৪৪। (২) সূরা আহযাব আয়াত- ৪০। (৩) সূরা মুহাম্মাদ আয়াত- ২। (৪) সূরা ফাতাহ্ আয়াত- ২৯।
(১৮) প্রশ্ন: পবিত্র কোরআনের সর্বপ্রথম কোন আয়াত নাজিল হয়?
উত্তর: সূরা আলাকের প্রথম পাঁচটি আয়াত। ইক্বরা বিসমি রাব্বিকাল্লাযী...
(১৯) প্রশ্ন: পবিত্র কোরআনের কোন আয়াতটি সর্বশেষ নাযিল হয়?
উত্তর: আল্লাহ বলেন, (وَاتَّقُوا يَوْمًا تُرْجَعُونَ فِيهِ إِلَى اللَّهِ ثُمَّ تُوَفَّى كُلُّ نَفْسٍ مَا كَسَبَتْ وَهُمْ لَا يُظْلَمُونَ) সূরা বাক্বারার ২৮১ নম্বর আয়াত। (ইবনু আবী হাতেম সাঈদ বিন জুবাইর (রা.) থেকে বর্ণনা করেন যে, এই আয়াত নাজিল হওয়ার পর নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নয় দিন জীবিত ছিলেন।- আল ইতক্বান ফি উলূমিল কোরআন)।
(২০) প্রশ্ন: পবিত্র কোরআনের সর্বপ্রথম কোন সূরাটি পূর্ণাঙ্গরূপে নাজিল হয়?
উত্তর: সূরা ফাতিহা।
(২১) প্রশ্ন: পবিত্র কোরআন প্রথম যুগে কীভাবে সংরক্ষিত ছিল?
উত্তর: ছাহাবায়ে কেরামের স্মৃতিতে, লিখিত অবস্থায় চামড়ায়, হাড়ে, পাতায় এবং পাথরে।
(২৩) প্রশ্ন: সর্বপ্রথম কে কোরআন একত্রিত করেন?
উত্তর: আবু বকর (রা.)।
(২৪) প্রশ্ন: কোন সাহাবীকে কোরআন একত্রিত করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল?
উত্তর: যায়েদ বিন ছাবেত (রা.)-কে।
(২৫) প্রশ্ন: কার পরামর্শে এই কোরআন একত্রিত করণের কাজ শুরু হয়?
উত্তর: ওমর বিন খাত্তাব (রা.)।
(২৬) প্রশ্ন: রাসূলুল্লাহ্ (সা.) এর ওহী লেখক কে কে ছিলেন?
উত্তর: আলী বিন আবী তালেব, মুআবিয়া বিন আবী সুফিয়ান, যায়েদ বিন ছাবেত ও উবাই বিন কা’ব প্রমুখ (রা.)।
(২৭) প্রশ্ন: কোন যুগে কার নির্দেশে কোরআনের অক্ষরে নোকতা দেয়া হয়?
উত্তর: উমাইয়া খলীফা আবদুল মালিকের যুগে হাজ্জাজ বিন ইউসূফের নির্দেশে একাজ হয়।
(২৮) প্রশ্ন: কোরআনে নোকতা দেয়ার কাজটি কে করেন?
উত্তর: নসর বিন আছেম বিন ই’য়ামার (রহ.)।
(২৯) প্রশ্ন: কোরআনে কে হরকত (যের যবর পেশ ইত্যাদি) সংযোজন করেন?
উত্তর: খলীল বিন আহমাদ আল ফারাহীদী (রহ.)।
(৩০) প্রশ্ন: পবিত্র কোরআনে কতবার ‘দুনিয়া’ শব্দটি এসেছে?
উত্তর: ১১৫ বার।
(৩১) প্রশ্ন: পবিত্র কোরআনে কতবার ‘আখেরাত’ শব্দটি এসেছে?
উত্তর: ১১৫ বার।
(৩২) প্রশ্ন: পবিত্র কোরআনে কতটি অক্ষর রয়েছে?
উত্তর: ৩২৩৬৭১টি।
(৩৩)প্রশ্ন: পবিত্র কোরআনে কতটি শব্দ আছে?
উত্তর: ৭৭৪৩৯টি।
(৩৪) প্রশ্ন: পবিত্র কোরআনে কতটি আয়াত আছে?
উত্তর: ৬২৩৬টি।
(৩৫) প্রশ্ন: কোন সূরার শেষ দু’টি আয়াত কোন মানুষ রাত্রে পাঠ করলে তার জন্য যথেষ্ট হবে?
উত্তর: সূরা বাক্বারার শেষের আয়াত দু’টি। (২৮৫ ও ২৮৬ নম্বর আয়ত)।
(৩৬) প্রশ্ন: পবিত্র কোরআনে কতটি সিজদা আছে এবং কোন কোন সূরায়?
উত্তর:১৫টি। আ’রাফ (২০৬নম্বর আয়াত), রা’দ (১৫নম্বর আয়াত), নাহাল (৪৯নম্বর আয়াত), ইসরা (১০৭নম্বর আয়াত), মারইয়াম (৫৮নন্ব আয়াত), হাজ্জ (১৮ ও ৭৭ নম্বর আয়াত), ফুরক্বান (৬০নম্বর আয়াত), নামাল (২৫নম্বর আয়াত), সাজদা (১৫নম্বর আয়াত), সোয়াদ (২৪নম্বর আয়াত), হা-মীম আস সাজদাহ (৩৭নম্বর আয়াত), নাজম (৬২নম্বর আয়াত), ইনশক্বিাক (২১নম্বর আয়াত), আলাক (১৯নন্বর আয়াত)।
(৩৭) প্রশ্ন: কোন সূরায় দু’টি সিজদা রয়েছে?
উত্তর: সূরা হজ্জ। (১৮ ও ৭৭ নম্বর আয়াত)।
(৩৮) প্রশ্ন: পবিত্র কোরআনে কতবার ‘রহমান’ শব্দের উল্লেখ হয়েছে?
উত্তর: ৫৭ বার।
(৩৯) প্রশ্ন: পবিত্র কোরআনে কতবার ‘জান্নাত’ শব্দ এসেছে?
উত্তর: ১৩৯ বার। (একবচন, দ্বিবচন ও বহুবচন শব্দে)।
(৪০) প্রশ্ন: পবিত্র কোরআনে কতবার ‘জাহান্নাম’ শব্দ এসেছে?
উত্তর: ৭৭বার।
৪১. প্রশ্ন: পবিত্র কোরআনে কতবার ‘নার বা আগুন’ শব্দ এসেছে?
উত্তর: ১২৬বার।
৪২. প্রশ্ন: পবিত্র কোরআনে কতবার ‘আল হামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামীন’ বাক্যটি এসেছে?
উত্তর: ৬বার।
৪৩. প্রশ্ন: পবিত্র কোরআনের কোন আয়াতে আরবি ২৯টি অক্ষরই রয়েছে?
উত্তর: সূরা ফাতাহ এর ২৯ নম্বর আয়াতে।
৪৪. প্রশ্ন: সূরা ফাতিহায় ‘মাগদূবে আলাইহিম’ বলতে কাদেরকে বোঝানো হয়েছে এবং ‘দঅল লীন’ বলতে কাদেরকে বোঝানো হয়েছে?
উত্তর: ‘মাগ দূবি আলাইহিম’ বলতে ইহুদীদেরকে এবং ‘দঅল লীন ’ বলতে খৃষ্টানদেরকে বোঝানো হয়েছে।
৪৫. প্রশ্ন: পবিত্র কোরআনের কোন সূরায় ‘মীম’ অক্ষরটি নেই?
উত্তর: সূরা কাওছার।
৪৬. প্রশ্ন: পবিত্র কোরআনের কোন সূরায় ك ‘কাফ’ অক্ষরটি নেই?
উত্তর: সূরা কুরায়িশ, ফালাক ও আছর।
৪৭. প্রশ্ন: পবিত্র কোরআনের কোন সূরায় দুবার বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম রয়েছে?
উত্তর: সূরা নামল। (২৭ নম্বর সূরা)।
৪৮. প্রশ্ন: কোরআনের কোন সূরার প্রথমে বিসমিল্লাহ নেই?
উত্তর: সূরা তাওবা। (৯নম্বর সূরা)।
৪৯. প্রশ্ন: পবিত্র কোরআনে মোট কতবার ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম রয়েছে?
উত্তর: ১১৪ বার।
৫০. প্রশ্ন: কোন সূরা সম্পর্কে ইমাম শাফেঈ বলেন, ‘মানুষের জন্য এ সূরাটি ব্যতীত অন্য সূরা নাজিল না হলেও যথেষ্ট ছিল’?
উত্তর: সূরা আছর।
৫১. প্রশ্ন: পবিত্র কোরআনে কতজন নবীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে?
উত্তর: ২৫ জন।
৫২. প্রশ্ন: মাক্কী সূরা ও মাদানী সূরা বলতে কী বুঝায়?
উত্তর: মাক্কী: মদীনায় হিজরতের পূর্বে যা নাজিল হয়েছে।
মাদানী: মদীনায় হিজরতের পর যা নাজিল হয়েছে।
৫৩. প্রশ্ন: মাক্কী সূরার মৌলিক বৈশিষ্ট কী কী?
উত্তর: (১) তাওহীদ এবং আল্লাহর ইবাদতের প্রতি আহ্বান। জান্নাত-জাহান্নামের আলোচনা এবং মুশরিকদের সঙ্গে বিতর্ক।
(২) মুশরকিদের খুন-খারাবী, ইয়াতীমের সম্পদ ভক্ষণ প্রভৃতি কর্মের নিন্দাবাদ।
(৩) সংক্ষিপ্ত বাক্য অথচ অতি উচ্চাঙ্গের সাহিত্য সমৃদ্ধ।
(৪) নবী মুহাম্মাদ (সা.)-কে সান্তনা দেয়া ও উপদেশ গ্রহণ করার জন্য ব্যাপকভাবে নবী-রাসূলদের কাহিনীর অবতারনা, এবং কীভাবে তাঁদের সম্প্রদায়ের লোকেরা তাঁদেরকে মিথ্যাবাদী বলেছে ও কষ্ট দিয়েছে তার বর্ণনা।
৫৪. প্রশ্ন: মাদানী সূরার মৌলিক বৈশিষ্ট কী কী?
উত্তর: (১) ইবাদত, আচার-আচরণ, দন্ডবিধি, জিহাদ, শান্তি, যুদ্ধ, পারিবারিক নিয়ম-নীতি, শাসন প্রণালী অন্যান্য বিধি-বিধানের আলোচনা।
(২) আহলে কিতাব তথা ইহুদী খৃষ্টানদেরকে ইসলামের প্রতি আহ্বান।
(৩) মুনাফেকদের দ্বিমুখী নীতির মুখোশ উম্মোচন এবং ইসলামের জন্য তারা কত ভয়ানক তার আলোচনা।
(৪) সংবিধান প্রণয়ণের ধারা ও তার লক্ষ্য-উদ্দেশ্য নির্ধারণ করার জন্য দীর্ঘ আয়াতের অবতারণা।
৫৫. প্রশ্ন: মাদানী সূরা পরিচয়ের নিয়ম কী?
উত্তর: (১) যে সকল সূরায় কোনো কিছু ফরজ করা হয়েছে বা দন্ডবিধির আলোচনা করা হয়েছে।
(২) যে সকল সূরায় মুনাফেকদের সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
(৩) যে সকল সূরায় আহলে কিতাবদের সঙ্গে বিতর্ক করা হয়েছে।
(৪) যে সকল সূরা ‘ইয়া আইয়্যুহাল্লাযীনা আমানূ’ দ্বারা আরম্ভ হয়েছে।
৫৬. প্রশ্ন: মাক্কী সূরার সংখ্যা কতটি?
উত্তর: ৮৬টি সূরা।
৫৭. প্রশ্ন: মাদানী সূরার সংখ্যা কতটি?
উত্তর: ২৮টি সূরা।
৫৮. প্রশ্ন: পবিত্র কোরআনের কোন সূরার প্রতিটি আয়াতে ‘আল্লাহ শব্দ আছে?
উত্তর: সূরা মুজাদালা। (৫৮ নম্বর সূরা)।
৫৯. প্রশ্ন: পবিত্র কোরআনের কোন কোন সূরা ‘আল হামদুলিল্লাহ দ্বারা শুরু হয়েছে?
উত্তর: সূরা ফাতিহা, সূরা আনআম, সূরা কাহাফ, সূরা সাবা ও সূরা ফাতির। (সূরা নম্বর যথাক্রমে, ১,৬,১৮,৩৪ ও ৩৫)।
৬০. প্রশ্ন: পবিত্র কোরআনে ছয়জন ব্যক্তির নাম উল্লেখ আছে যারা সকলেই নবীর পুত্র নবী ছিলেন।
উত্তর: (১) হজরত ইব্রাহিম (আ.) এর পুত্র ইসমাঈল
(২) হজরত ইব্রাহিম (আ.) এর পুত্র ইসহাক,
(৩) ইসহাকের পুত্র ইয়াকূব
(৪) ইয়াকূবের পুত্র ইউসুফ,
(৫) যাকারিয়ার পুত্র ইয়াহইয়া ও
(৬) দাউদের পুত্র সুলাইমান (আলাইহিমুস্ সালাম)
৬১. প্রশ্ন: পবিত্র কোরআনে জাহান্নামের ৬টি নাম উল্লেখ হয়েছে। উহা কী কী?
উত্তর: (১) জাহান্নাম (সূরা নাবা: ২১)।
(২) সাঈর (সূরা নিসা: ১০)
(৩) হুতামা (হুমাযা: ৪)
(৪) লাযা (সূরা মাআরেজ: ১৫)
(৫) সাক্বার (সূরা মুদ্দাসসির: ৪২)
(৬) হাভিয়া (সূরা কারিয়া: ৯)
৬২. প্রশ্ন: কোরআনের কোন সূরায় মুবাহালার আয়াত রয়েছে?
উত্তর: সূরা আলে ইমরান- আয়াত নম্বর- ৬১।
মুবাহালা: হক ও বাতিলের মাঝে দ্বন্দ্ব হলে, বাতিল পন্থীর সামনে যাবতীয় দলীল-প্রমাণ উপস্থাপন করার পরও সে যদি হঠকারিতা করে, তবে তাকে মুবাহালার জন্য আহ্বান করা হবে। তার নিয়ম হচ্ছে: উভয় পক্ষ নিজের স্ত্রী, সন্তান-সন্ততিকে উপস্থিত করবে, অতঃপর প্রত্যেক পক্ষ বলবে, আমরা যদি বাতিল পন্থা ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকি, তবে মিথ্যাবাদীদের ওপর আল্লাহর লানত (অভিশাপ)। এটাকেই বলে মুবাহালা।
৬৩. প্রশ্ন: পবিত্র কোরআনের কোন সূরার কোন আয়াতে ব্যভিচারের দন্ডবিধির আলোচনা আছে?
উত্তর: সূরা নূর- আয়াত নম্বর- ২।
৬৪. প্রশ্ন: পবিত্র কোরআনের কোন সূরার কত নম্বর আয়াতে ওজুর ফরজ সমূহ উল্লেখ করা হয়েছে?
উত্তর: সূরা মায়েদা- আয়াত নম্বর- ৬।
৬৫. প্রশ্ন: পবিত্র কোরআনের কোন সূরার কোন আয়াতে চুরির দন্ডবিধি উল্লেখ হয়েছে?
উত্তর: সূরা মায়েদা- আয়াত নম্বর- ৩৮।
৬৬. প্রশ্ন: পবিত্র কোরআনের কোন সূরার কোন আয়াতে মিথ্যা অপবাদের শাস্তির বিধান উল্লেখ হয়েছে?
উত্তর: সূরা নূর- আয়াত নম্বর- ৪।
৬৭. প্রশ্ন: পবিত্র কোরআনের কোন সূরার কোন আয়াতে মুমিন নারী-পুরুষকে দৃষ্টি অবনত রেখে চলাফেরা করতে বলা হয়েছে?
উত্তর: সূরা নূর- আয়াত নম্বর ৩০-৩১।
৬৮. প্রশ্ন: পবিত্র কোরআনের কোন সূরার কোন আয়াতে মীরাছ (উত্তরাধীকার সম্পদ বন্টন) সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে?
উত্তর: সূরা নিসা- আয়াত নম্বর- ১১, ১২ ও ১৭৬।
৬৯. প্রশ্ন: পবিত্র কোরআনের কোন সূরার কোন আয়াতে বিবাহ হারাম এমন নারীদের পরিচয় দেয়া হয়েছে?
উত্তর: সূরা নিসা- আয়াত নম্বর- ২৩, ২৪।
৭০. প্রশ্ন: পবিত্র কোরআনের কোন সূরার কোন আয়াতে জাকাত বন্টনের খাত সমূহ আলোচনা করা হয়েছে?
উত্তর: সূরা তওবা- আয়াত নম্বর- ৬০।
৭১. প্রশ্ন: পবিত্র কোরআনের কোন সূরার কোন আয়াতে সিয়াম সম্পর্কিত বিধি-বিধান উল্লেখ হয়েছে?
উত্তর: সূরা বাক্বারা- আয়াত নম্বর ১৮৩-১৮৭।
৭২. প্রশ্ন: পবিত্র কোরআনের কোন সূরার কোন আয়াতে বাহনে আরোহনের দোয়া উল্লেখ করা হয়েছে?
উত্তর: সূরা যুখরুফ- আয়াত নম্বর- ১৩।
৭৩. প্রশ্ন: পবিত্র কোরআনের কোন সূরার কোন আয়াতে নবী (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর প্রতি দরূদ পড়ার আদেশ করা হয়েছে?
উত্তর: সূরা আহযাব- আয়াত নম্বর ৫৬।
৭৪. প্রশ্ন: কোন সূরার কোন আয়াতে হুনায়ন যুদ্ধের কথা আলোচনা করা হয়েছে?
উত্তর: সূরা তওবা- আয়াত নম্বর- ২৫, ২৬।
৭৫. প্রশ্ন: কোন সূরায় বদর যুদ্ধের ঘটনাবলী উল্লেখ করা হয়েছে?
উত্তর: সূরা আনফাল। (আয়াত নম্বর : ৫-১৯, ৪১-৪৮, ৬৭-৬৯)।
৭৬. প্রশ্ন: কোন সূরায় বনী নযীরের যুদ্ধের ঘটনা উল্লেখ আছে?
উত্তর: সূরা হাশর।(আয়াত নম্বর ২-১৪)।
৭৭. প্রশ্ন: কোন সূরায় খন্দক যুদ্ধের ঘটনা উল্লেখ আছে?
উত্তর: সূরা আহযাব (আয়াত নম্বর ৯-২৭)।
৭৮. প্রশ্ন: কোন সূরায় তাবুক যুদ্ধের ঘটনা উল্লেখ আছে?
উত্তর: সূরা তওবা (আয়াত নম্বর ৩৮-১২৯)।
৭৯. প্রশ্ন: কোন সূরায় নবী (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) হিজরতের ঘটনা উল্লেখ আছে?
উত্তর: সূরা তওবা (আয়াত নম্বর ৪০)।
৮০. প্রশ্ন: কোন সূরার কোন আয়াতে হারূত-মারূতের ঘটনা উল্লেখ আছে?
উত্তর: সূরা বাক্বারা- আয়াত নম্বর- ১০২।
৮১. প্রশ্ন: কোন সূরার কোন আয়াতে কারূনের কাহিনী উল্লেখ আছে?
উত্তর: সূরা ক্বাসাস, আয়াত ৭৬-৮৩।
৮২. প্রশ্ন: কোন সূরার কোন আয়াতে সুলায়মান (আ.) এর সঙ্গে হুদহুদ পাখীর ঘটনা উল্লেখ আছে?
উত্তর: সূরা নমল আয়াত নম্বর ২০, ৪৪।
৮৩. প্রশ্ন: কোন সূরার কোন আয়াতে কিবলা পরিবর্তনের ঘটনা উল্লেখ আছে?
উত্তর: সূরা বাক্বারা- আয়াত নম্বর ১৪২-১৫০।
৮৪. প্রশ্ন: কোন সূরায় নবী সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ইসরা-মেরাজের ঘটনা উল্লেখ আছে?
উত্তর: সূরা বানী ইসরাঈল (আয়াত নম্বর ১) ও সূরা নজম (আয়াত: ৮-১৮)
৮৫. প্রশ্ন: কোন সূরায় হস্তি বাহিনীর ঘটনা উল্লেখ আছে?
উত্তর: সূরা ফীল।
৮৬. প্রশ্ন: কোন সূরার কোন আয়াতে যুল ক্বারানাইন বাদশাহর ঘটনা উল্লেখ আছে?
উত্তর: সূরা কাহাফ- আয়াত নম্বর- ৮৩-৯৮।
৮৭. প্রশ্ন: কোন সূরার কোন আয়াতে ত্বালুত ও জালুতের ঘটনা উল্লেখ আছে?
উত্তর: সূরা বাক্বারা- আয়াত নম্বর- ২৪৬-২৫২।
৮৮. প্রশ্ন: কোন সূরার কোন আয়াতে মসজিদে আক্বসার কথা উল্লেখ আছে?
উত্তর: সূরা বানী ইসরাঈল- আয়াত নম্বর-১।
৮৯. প্রশ্ন: কোন সূরার কোন আয়াতে পিতা-মাতার ঘরে প্রবেশের জন্য অনুমতি নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে?
উত্তর: সূরা নূর- আয়াত নম্বর- ৫৮, ৫৯।
৯০. প্রশ্ন: সর্বপ্রথম কোন সাহাবী মক্কায় উচ্চ:স্বরে কোরআন পাঠ করেন?
উত্তর: আবদুল্লাহ বিন মাসউদ (রা.)।
৯১. প্রশ্ন: পবিত্র কোরআনের কোন সূরাটি হজরত ওমর (রা.) এর ইসলাম গ্রহণের কারণ ছিল?
উত্তর: সূরা ত্বাহা।
৯২. প্রশ্ন: পবিত্র কোরআনের মধ্যে কোনো পরিবর্তন-পরিবর্ধন হবে না। আল্লাহ নিজেই তাঁর হেফাজতের দায়িত্ব নিয়েছেন। কথাটি কোন সূরার কত নম্বর আয়াতে আছে?
উত্তর: সূরা হিজ্র ৯ নম্বর আয়াত।
সূত্র: ডেইলি বাংলাদেশ