শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

ফটো ফিচার: জন্মদিনে রোনালদোর জীবনের অজানা ১০ তথ্য

ফটো ফিচার: জন্মদিনে রোনালদোর জীবনের অজানা ১০ তথ্য

সংগৃহীত

একুশ শতকের ফুটবলে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো নাকি লিওনেল মেসি ‘কে সেরা’? চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী এ দুই তারকা ফুটবলারের সমর্থকেরা বিষয়টি নিয়ে হরহামেশাই তর্কে জড়িয়ে যান।

তবে যাই হোক একটা সময় ইউরোপ শাসন করা দুই ফুটবলার এখন পৃথিবীর দুই প্রান্তে। একজন খেলছেন সৌদি প্রো লিগের ক্লাব আল নাসরে। অন্যজন যুক্তরাষ্ট্রের ক্লাব ইন্টার মায়ামির জার্সিতে মাঠ মাতাচ্ছেন।

এটা সত্য যে, জাতীয় দলের জার্সিতে বিশ্বকাপ জিততে না পারলেও ফুটবলের মাঠ দাপিয়ে বেরিয়েছেন রোনালদো। ক্যারিয়ারের গোধূলি লগ্নেও জাতীয় দল থেকে ক্লাব ফুটবলে রাজত্ব করছেন তিনি। আর তাইতো গত বছরের শেষ বেলায় পেশাদার ফুটবলে ১২০০ গোলের কীর্তি গড়েছেন। এমনকি পর্তুগালের হয়ে ২০০ এর বেশি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন সিআর সেভেন।

১৯৮৫ সালের আজকের এই দিনে (৫ ফেব্রুয়ারি) পৃথিবীর আলো দেখেন সময়ের অন্যতম সেরা ফুটবলার রোনালদো। পর্তুগালের ছোট্ট দ্বীপশহর মাদেইরার ড. নেইলো মেনডোঙ্কা হাসপাতালে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। এরপর সেখানেই বেড়ে ওঠা। তার বাবা ছিলেন মালি আর মা রাঁধুনি। স্বাভাবিকভাবেই রোনালদোর ছেলেবেলা কেটেছে দুঃখ-দুর্দশায়। কিন্তু মালির ছেলে হয়েও দারিদ্র‍্যতাকে উতরে ফুটবল গ্রেট তকমা পেয়েছেন এ পর্তুগিজ তারকা।

১০ বছর বয়সে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। ছবি- সংগৃহীত

১০ বছর বয়সে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। ছবি- সংগৃহীত

অন্যরা যখন মায়ের আঁচলে পৃথিবীর ভালো-মন্দ বুঝতে শেখেন, সেই মুহূর্তে ফুটবলের সংস্পর্শে আসেন রোনালদো। মাত্র তিন বছর বয়সেই ফুটবলের হাতেখড়ি হয় তার। কৈশোরে তার প্রিয় দল ছিল ‘বেনফিকা’। পরবর্তীকালে বেনফিকার প্রতিপক্ষ ‘স্পোর্টিং ক্লাবে দি পর্তুগালে’ যোগ দেন তিনি। 

পরে ২০০৩ সালে ১২.২৪ মিলিয়ন পাউন্ডের বিনিময়ে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে যোগ দেন রোনালদো। তাকে ক্লাবটির ঐতিহ্যবাহী ৭ নম্বর জার্সি দেওয়া হয়। এ জার্সি পরে এক সময় মাঠ কাঁপিয়েছেন জর্জ বেস্ট, ব্রায়ান রবসন, এরিক ক্যান্টোনা ও ডেভিড বেকহ্যামের মতো তারকারা।

এরপর ২০০৯ সালে ৮০ মিলিয়ন পাউন্ডের বিনিময়ে ওল্ড ট্রাফোর্ডের ক্লাব থেকে স্প্যানিশ ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদে পাড়ি দেন রোনালদো। সেখান থেকে সিরি আ জায়ান্ট জুভেন্টাস হয়ে এখন সৌদি ক্লাব আল নাসরে খেলছেন। বিশেষজ্ঞদের অনেকের মতে, রোনালদো বর্তমান সময়ের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় এবং তিনি সর্বকালের সেরা ফুটবলারদেরও একজন।

৪০তম জন্মদিনে পর্তুগিজ কিংবদন্তির জীবনের অজানা ১০ তথ্য জেনে নেয়া যাক-

 

মা-বাবার সঙ্গে রোনালদো। ছবি- সংগৃহীত

মা-বাবার সঙ্গে রোনালদো। ছবি- সংগৃহীত

১. ৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৫ সাবে পর্তুগালের সান্টো অ্যান্টোনিও শহর। মারিও ডোলোরেস দম্পতির ঘরে জন্ম ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর। পুরো নাম ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো দস সান্তোস আভেইরো। রোনালদো নামটা রেখেছিলেন তার বাবা, সাবেক আমেরিকান প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যানের নামের সঙ্গে মিল রেখে।

শৈশবের ক্লাবের হয়ে মাঠ মাতাচ্ছেন সিআর সেভেন। ছবি- সংগৃহীত

শৈশবের ক্লাবের হয়ে মাঠ মাতাচ্ছেন সিআর সেভেন। ছবি- সংগৃহীত

২. ২০০৪ সালে ইন্দোনেশিয়ায় সুনামি থেকে বেঁচে ফেরা একটা ছেলের ছবি ছড়িয়ে পড়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়। যার গায়ে ছিল পর্তুগালের জার্সি। সেই ছেলের সঙ্গে দেখা করতে ইন্দোনেশিয়া উড়ে গিয়েছিলেন রোনালদো। নিয়েছেন তার পড়াশোনার পুরো দায়িত্ব।

 

 

 

স্পোর্টিং ক্লাবে দি পর্তুগালের জার্সিতে রোনালদো। ছবি- সংগৃহীত

স্পোর্টিং ক্লাবে দি পর্তুগালের জার্সিতে রোনালদো। ছবি- সংগৃহীত

৩. রোনালদোর অবাক করা স্পট জাম্পে হেড আমর সকলেই দেখেছি। একটা গবেষণায় দেখা গেছে, রোনালদো যখন লাফান তখন একটা উড়ন্ত চিতার চেয়েও বেশি শক্তি তৈরি হয়ে তার শরীরে।

দ্বিতীয় দফায় ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে ফেরেন রোনালদো। ছবি- সংগৃহীত

দ্বিতীয় দফায় ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে ফেরেন রোনালদো। ছবি- সংগৃহীত

৪. দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় গড়ে ৪৪ সেন্টিমিটার লাফাতে পারেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। দৌড়ে এসে ৭৮ সেন্টিমিটার। যেটা একজন বাস্কেটবল খেলোয়াড়ের চেয়েও বেশি।

গত বছর গ্লোব অ্যাওয়ার্ড জেতেন রোনালদো। ছবি- সংগৃহীত

গত বছর গ্লোব অ্যাওয়ার্ড জেতেন রোনালদো। ছবি- সংগৃহীত

৫. অন্যদের চেয়ে হৃৎপিণ্ড একটু বেশি দ্রুত চলত ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর। যার কারণে অস্ত্রোপচারও করাতে হয়েছিল। মাত্র ১৫ বছর বয়সে হৃৎপিণ্ডে অস্ত্রোপচার করাতে হয়েছিল সিআর সেভেনের।

বান্ধবী জর্জিনা ও সন্তানদের নিয়ে রোনালদো। ছবি- সংগৃহীত

বান্ধবী জর্জিনা ও সন্তানদের নিয়ে রোনালদো। ছবি- সংগৃহীত

৬. বর্তমানে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো বিশ্ব জুড়ে অনেক উঠতি খেলোয়াড়ের রোল মডেল। কিন্তু যখন রোনালদো ছোট ছিল তার প্রিয় খেলোয়াড় ছিলেন আরেক পর্তুগিজ কিংবদন্তি লুইস ফিগো।

চোটে জর্জরিত রোনালদো ডাগআউটে দাঁড়িয়ে নির্দেশনা দিচ্ছেন। ছবি- সংগৃহীত

চোটে জর্জরিত রোনালদো ডাগআউটে দাঁড়িয়ে নির্দেশনা দিচ্ছেন। ছবি- সংগৃহীত

৭. নিজের শরীরে কোনো উলকি আঁকেননি রোনালদো। কারণ তিনি নিয়মিত রক্তদান করেন। যাদের শরীরে উলকি আছে, তাদের রক্ত দেওয়ার জন্য ছয় মাস বা এক বছর অপেক্ষা করতে হয়।

জাতীয় দলের হয়ে ইউরো জেতেন রোনালদো। ছবি- সংগৃহীত

জাতীয় দলের হয়ে ইউরো জেতেন রোনালদো। ছবি- সংগৃহীত

৮. বিশ্বের প্রথম তারকা যার ইনস্টাগ্রাম অনুসারী ২০ কোটি ছাড়িয়েছিল। বর্তমানে ইনস্টাগ্রামে তার ফলোয়ার্সের সংখ্যা ৬২০ মিলিয়নের কাছাকাছি। ইনস্টাগ্রাম থেকে বছরে ১৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি উপার্জন করেন তিনি।

২০২২ সালের ডিসেম্বরে সৌদি ক্লাব আল নাসরে পাড়ি দেন রোনালদো। ছবি- সংগৃহীত

২০২২ সালের ডিসেম্বরে সৌদি ক্লাব আল নাসরে পাড়ি দেন রোনালদো। ছবি- সংগৃহীত

৯. নিজেকে ফিট রাখতে কঠিন পরিশ্রম করেন রোনালদো। জিমে অমানুষিক পরিশ্রম করেন তিনি। আর এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ওয়েটলিফটিং। রোনালদো নিজের ট্রেনিং সেশনে গড়ে প্রায় ২৩ হাজার ৫৫০ কেজি ওজন তোলেন। যা প্রায় ১৬টি টয়োটা গাড়ির ওজনের সমান।

মায়ের সঙ্গে রোনালদো। ছবি- সংগৃহীত

মায়ের সঙ্গে রোনালদো। ছবি- সংগৃহীত

১০. কানাডার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে রোনালদোর ওপর আলাদা একটি কোর্স পড়ানো হয়। ব্রিটিশ কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ওকান্যাগান ক্যাম্পাসের ওই কোর্সের মূল প্রতিপাদ্য সমাজ ও সংস্কৃতিতে রোনালদোর প্রভাব।

সূত্র: ডেইলি বাংলাদেশ

সর্বশেষ: