শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

তাড়াশে রোপা-আমনে ব্যাপক ফলনের স্বপ্ন দেখছে কৃষক

তাড়াশে রোপা-আমনে ব্যাপক ফলনের স্বপ্ন দেখছে কৃষক

শস্য ভান্ডারখ্যাত সিরাজগঞ্জের তাড়াশ চলনবিলের বিভিন্ন মাঠে রোপা আমনের সবুজ সমারোহের মাঝে স্বপ্ন দেখছে কৃষক। দক্ষিনা বাতাসে মনোমুগ্ধকর নাগিনীর মতো দুলছে দিগন্ত জোড়া ধানের ক্ষেতগুলো।

এ উপজেলায় রোপা আমন মৌসুম শুরু হয় মুলত আগষ্টের মাঝামাঝি থেকে সেপ্টেম্বরের শেষ পর্যন্ত, কিন্তু এবছরে বন্যার পানি কম থাকায় অনেক মাঠে জুলাইয়ের মাঝামাঝি থেকে ধান লাগানো শুরু হয়। সরজমিনে দেখা যায় তাড়াশের মাধাই নগর ইউনিয়ন ও তাড়াশ সদর ইউনিয়নের মাঠের জমিগুলোতে কৃষক রোপা আমন জাতের ধানের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।

দৈনিক আজকের সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধির সাথে কথা হয় মাধাইনগর ইউনিয়নের ওয়াসিন দক্ষিণ মাঠে ক্ষেত পরিচর্যাররত কৃষক আলাউদ্দিনের সাথে, তিনি বলেন চলতি মৌসুমে জুলাইয়ের শেষে ১৫ বিঘা জমিতে কাটারী, স্বর্না ৫ ও ৪৯ জাতের ধান লাগিয়েছি, ইতি মধ্যে দুইবার নিড়ানি দিয়েছি ধান উঠতি যৌবনা দেখার মতো হয়েছে, প্রতিবিঘা জমিতে রাসায়নিক সার প্রয়োগ বিষয়ে বলেন, ডি এ পি ২০ কেজি, টি এস পি ১৫ কেজি, এম ও পি ১০ কেজি, ইউরিয়া ১৫ কেজি থিয়োভিট ১ কেজি এবং কীটনাশক নির্দেশনা মোতাবেক, সেচ ব্যবস্থা বৃষ্টির পানি পাশাপাশি সেচযন্ত্র, প্রতি বিঘায় সবমিলিয়ে ৫০০০টাকার মতন খরচ হয়।

অপরদিকে দক্ষিণ মথুরাপুর মাঠ, সোনাপাতিল দক্ষিণ-পশ্চিমের মাঠের কৃষকরা সবেমাত্র জমি তৈরি ও ধান লাগাচ্ছে। এবিষয়ে কৃষক মুনসুর আলী, জব্বার প্রাং, ওয়াহাব আলী তারা বলেন, কৃত্রিম জলাবদ্ধতার কারণে আমরা সঠিক সময়ে সবার সাথে চাষাবাদ শুরু করতে পারিনা সবার পরে আমাদের ধান লাগাতে হয়।

তাড়াশ উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের তথ্যমতে, উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের তালম, দেশীগ্রাম, মাধাইনগর, বারুহাস, তাড়াশ সদর, মাগুড়া বিনোদ, সগুনা ও নওগাঁ ইউনিয়নে চলতি মৌসুমে ব্রি-৩৪, ব্রি-৫৮, ব্রি-২৮,কাটারীভোগ ও পাইজাম জাতের রোপা আমন ধান লাগিয়েছে কৃষক।

এ বছর ওই ৮টি ইউনিয়নে ১২ হাজার হেক্টর জমিতে রোপা আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। ইতোমধ্যে সরকারিভাবে কার্ডধারী কৃষকদের বীজ সার আর্থিক প্রনোদনা প্রদান করা হয়েছে। উপজেলার বারুহাস ইউনিয়নের বিনসাড়া গ্রামের কৃষক বজলুর রহমান বলেন, আবাহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর ব্রি-৩৪, ব্রি-৫৮, ব্রি-২৮,কাটারীভোগ ও পাইজাম জাতের রোপা আমন চাষ করেছি, সারের সংকট নাই, মাঝে মাঝে বৃষ্টি হচ্ছে যা ফসলের জন্য পারফেক্ট। তিনি আরও বলেন, রোপা আমন ধানের উৎপাদন খরচও কম, ধানের ভালো দাম পাওয়ার আশা নিয়ে কৃষক রোপা ধান লাগাতে ঝুঁকে পড়েছেন। এসব জাতের ধান একর প্রতি ৫০-৬০ মণ হয়ে থাকে।

তাড়াশ উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, পুরো উপজেলায় রোপা চাষে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের ব্যাপক ভাবে উৎসাহিত ও সহযোগিতা প্রদান করা হয়েছে, সরকারি প্রদত্ব বীজ সার প্রনোদনা প্যাকেজ সহ যাবতীয় সুযোগ সুবিধা প্রদান করা হয়েছে, পাশাপাশি প্রতিটি ব্লকের উপসহকারী কর্মকর্তারা কৃষকদের সার্বক্ষণিক পরামর্শ সহ ক্ষেত পরিদর্শন করে যা যা করণীয় তার সব করছে। এ বছর উপজেলায় এখন পর্যন্ত ১২ হাজার হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষমাএা ধরা হয়েছে।

আলোকিত সিরাজগঞ্জ

সর্বশেষ: