বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

২৫০ বছরের ঐতিহ্য নিয়ে তাড়াশে বসেছে দই মেলা

২৫০ বছরের ঐতিহ্য নিয়ে তাড়াশে বসেছে দই মেলা

আড়াইশ’ বছরের ঐতিহ্য নিয়ে সিরাজগঞ্জের তাড়াশে শুরু হয়েছে দই মেলা। স্বরস্বতী পূঁজা উপলক্ষে বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী এ মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মেলাকে ঘিরে এলাকায় সাজসাজ রব পড়ে গেছে। আগের দিন তাড়াশ ঈদগাহ মাঠে বিখ্যাত ঘোষদের দই আসার মধ্য দিয়ে শুরু হয় মেলা। মেলায় দইয়ের পাশাপাশি ঝুড়ি, মুড়ি, মুড়কি, চিড়া, মোয়া, বাতাসা, কদমা, খেজুরের গুড়সহ রসনাবিলাসী নানা খাবার বেচাকেনা হয়।

চলনবিল অঞ্চলের এই দই মেলা নিয়ে রয়েছে নানা গল্প-কাহিনী। তাড়াশ উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি রজত ঘোষ জানান, জমিদারি আমলে তাড়াশের তৎকালীন জমিদার পরম বৈঞ্চব বনোয়ারী লাল রায় বাহাদুর প্রথম রশিক রায় মন্দিরের মাঠে দই মেলার প্রচলন করেছিলেন।

এলাকায় এমনও জনশ্রুতি রয়েছে যে- জমিদার রাজা রায় বাহাদুর দই ও মিষ্টান্ন পছন্দ করতেন। তাই জমিদার বাড়িতে আসা অতিথিদের আপ্যায়নে এ অঞ্চলে ঘোষদের তৈরি দই পরিবেশন করতেন। আর সে থেকেই জমিদার বাড়ির সামনে রশিক রায় মন্দিরের মাঠে স্বরস্বতী পূজা উপলক্ষে তিন দিনব্যাপী দই মেলার প্রচলন শুরু করেন। সেই থেকে প্রতি বছর শীত মৌসুমের মাঘ মাসে স্বরসতী পূজার দিন শ্রী পঞ্চমী তিথিতে দই মেলা বসছে। 

কথিত আছে- তৎকালীন সময়ে প্রতি বছর মেলায় আগত সবচেয়ে ভালো সুস্বাদু দই তৈরিকারক ঘোষকে জমিদারের পক্ষ থেকে উপঢৌকন দেওয়ার রেওয়াজও ছিল।

এদিকে মেলায় আসা এ অঞ্চলের দইয়ের স্বাদের কারণে নামেরও ভিন্নতা রয়েছে। যেমন- ক্ষীরসা দই, শাহী দই, চান্দাইকোনার, শেরপুরের দই, বগুড়ার দই, টক দই, ডায়াবেটিক দই, শ্রীপুরী দই এ রকম হরেক নামে ও দামের হেরফেরে শতশত মণ দই বিক্রি হয়।

বিশেষ করে বগুড়ার শেরপুর, রায়গঞ্জের চান্দাইকোনা, ঘুড়কা, নাটোরের গুরুদাসপুরের শ্রীপুর, উল্লাপাড়ার ধরইলের দই, পাবনার চাটমোহরের হান্ডিয়ালের দই, ডায়াবেটিক, তাড়াশের দই প্রচুর বেচাকেনা হয়। 

মহাদেব ঘোষ, বিমল ঘোষ, সুকোমল ঘোষসহ একাধিক ঘোষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সম্প্রতি দুধের দাম, জ্বালানি, শ্রমিক খরচ, দইপাত্রের বেড়ে যাওয়ায় দইয়ের দামও কেজিতে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা বেড়েছে। তবে মেলা দিনব্যাপী হলেও চাহিদা থাকার কারণে কোনো ঘোষের দই অবিক্রিত থাকে না।

আলোকিত সিরাজগঞ্জ