বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১

সিরাজগঞ্জের যমুনা নদীতে জেগে উঠেছে হাজার হাজার একর আবাদি জমি

সিরাজগঞ্জের যমুনা নদীতে জেগে উঠেছে হাজার হাজার একর আবাদি জমি

সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার মধ্যদিয়ে প্রবাহিত যমুনা নদীতে ড্রেজিং এবং খনন না করায় নদীর বুকজুড়ে জেগে উঠেছে হাজার হাজার একর আবাদি জমি।

শুধু তাই নয় নদীর বুকে পলি পড়ায় হাজারও নৌ-শ্রমিক এবং জেলেরা বেকার হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। অনেকে বাপ-দাদার ওই পেশা ছেড়ে দিয়ে বিভিন্ন পেশায় জড়িয়ে পড়েছেন।

সরেজমিনে জানা যায়, কাজিপুর সদর, মাইজবাড়ী, গান্ধাইল, শুভগাছা, খাসরাজবাড়ী, নাটুয়ারপাড়া, তেকানী, মনসুরনগর, চরগিরিশ ও নিশ্চিন্তপুর ইউনিয়নের উপর দিয়ে প্রবাহিত যমুনা নদী এখন মরা খালে পরিণত হয়েছে।

এর বুকজুড়ে জেগে উঠেছে হাজার হাজার একর আবাদি জমি। জেগে ওঠা চরে বিভিন্ন ফসলের চাষাবাদ করে সংসার পরিচালনা করছেন অনেকে। কিন্তু ভরা নদীতে যে সব নৌ-শ্রমিক নৌকা চালিয়ে এবং জেলেরা মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতেন, তারা হয়ে পড়েছেন বেকার। জেলেরা তাদের উপকরণ নৌকা এবং জাল বিক্রি করে দিয়ে ভিন্ন পেশায় জড়িয়ে পড়েছেন।

নাটুয়াপাড়া ইউনিয়নের কৃষক সেলিম বলেন, নদীতে যখন পানি পরিপূর্ণ থাকে তখন জমিজমার কোনো হদিস থাকে না। শীত আসলেই নদীর বুকজুড়ে জেগে উঠে হাজার হাজার একর আবাদি জমি। জেগে ওঠা জমিতে বিভিন্ন ফসলের আবাদ করে খুব ভালভাবে সংসার পরিচালনা করা যায়।

কথা হয় কাজিপুর সদর ইউনিয়নের জেলে বিজয় দাস ও নাটুয়ারপাড়া ইউনিয়নের পরিমলের সাথে। তারা বলেন, যমুনায় পানি নেই। নদী ভরাট হয়ে যাওয়ায় এখন আর জাল ফেলে মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে অন্য পেশায় যেতে বাধ্য হয়েছি।

কাজিপুরের মেঘাই নৌ-ঘাটের শ্রমিক আল-আমিন, বাদশা জানান, আজ থেকে ১০-১২ বছর আগে গোটা বছরই নৌকা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতাম। এখন যমুনা নদী বিভিন্ন শাখা নদী এবং নালায় পরিণত হয়েছে। নৌকা চালানোর মতো কোনো জায়গা নেই। তাই নৌকা বিক্রি করে দিয়ে বিভিন্ন পেশায় কাজ করে সংসার পরিচালনা করছি।

কাজিপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খলিলুর রহমান সিরাজী জানান, যমুনা নদীর নাব্যতা হ্রাস পাওয়ায় ১০টি ইউনিয়নের চরাঞ্চলের কমপক্ষে এক হাজার নৌ-শ্রমিক এবং জেলে আজ বেকার হয়ে পড়েছে।

ওই সব নৌ-শ্রমিক ও এবং জেলেরা বাপ-দাদার পেশা ছেড়ে দিয়ে অতিকষ্টে জীবনযাপন করছেন। যমুনা নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনলে হয়তো ওই সব শ্রমিক ফের তাদের পেশায় জড়িয়ে পড়তে পারবে। এজন্য নদী খনন করা জরুরি।

কাজীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জাহিদ হাসান সিদ্দিকী জানান, নাব্য সংকট কাজীপুরের জন্য রুটিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের ব্যবস্থা ও সহযোগিতা করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।

আলোকিত সিরাজগঞ্জ