শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ৩ কার্তিক ১৪৩২

খাবার টেবিলের গল্প

খাবার টেবিলের গল্প

সংগৃহীত

শহরের ব্যস্ত জীবনে একই বাড়িতে থেকেও পরিবারের সদস্যদের একসঙ্গে বসা যেন একটা দুর্লভ মুহূর্ত হয়ে দাঁড়ায়। সারাদিন ছুটোছুটির পর সবাই ঘরে ফেরে সন্ধ্যায়। দিনের নানা ব্যস্ততার ফাঁকে একমাত্র যেটা প্রায় প্রতিদিনই একসঙ্গে কাটে, সেটা হলো রাতের খাবারের সময়।

খাবার টেবিলকে ঘিরেই জমে ওঠে দিনের গল্প, হাসি-মজা, খুনসুটি আর ছোট ছোট মধুর মুহূর্ত। তাই এই জায়গাটা শুধু খাওয়ার জন্য নয়; বরং সম্পর্ক গড়ে তোলার জায়গাও বটে।

একটা খাবার টেবিল কেমন হবে, সেটা নির্ভর করে অনেক কিছুর ওপর। নবদম্পতির ঘরে হয়তো ছোট আর আধুনিক নকশার টেবিল মানায়, আবার পরিবারে যদি বয়স্ক কেউ থাকেন, তাহলে চেয়ার আর টেবিল হতে হবে আরামদায়ক।

টেবিল ঘরের আয়তনের সঙ্গে মানানসই হওয়াটাও জরুরি। ছোট ঘরে বিশাল টেবিল যেমন বিশৃঙ্খলা তৈরি করে, তেমনি বড় ঘরে অতিরিক্ত ছোট টেবিলও অস্বস্তিকর হতে পারে।

ঘরের ধরন অনুযায়ী টেবিলের গঠনও বদলে যায়। কেউ পছন্দ করেন গোল টেবিল, কেউবা আয়তাকার বা বর্গাকৃতির। সদস্যসংখ্যার ওপর নির্ভর করে টেবিলের সাইজ নির্ধারিত হয়। ছোট পরিবার হলে চার সিটের টেবিলই যথেষ্ট, কিন্তু সদস্য বেশি হলে প্রয়োজন পড়ে বড় টেবিলের। আবার যারা বন্ধু-আত্মীয়দের বেশি ডেকে খাওয়াতে ভালোবাসেন, তাদের জন্য টেবিল হওয়া উচিত প্রশস্ত ও দীর্ঘ।

সবসময় চেয়ারই যে একমাত্র বসার ব্যবস্থা, তা নয়। জায়গা বাঁচাতে কেউ কেউ টেবিলের পাশে রাখেন বেঞ্চ। এতে একই সারিতে একসঙ্গে কয়েকজন বসতে পারেন। আবার জায়গা যদি খুবই কম হয়, তাহলে ফোল্ডিং ডাইনিং টেবিল হতে পারে দারুণ সমাধান। দরকারের সময় খোলা যায়, আবার খাওয়া শেষ হলে ভাঁজ করে জায়গা ফাঁকা রাখা যায়।

নতুন সংসারে আলাদা করে খাবার টেবিল কেনার সামর্থ্য বা জায়গা না থাকলেও চিন্তার কিছু নেই। এখন এমন টেবিল পাওয়া যায়, যেটা একসঙ্গে কাজের টেবিল আর খাওয়ার টেবিল হিসেবেও ব্যবহার করা যায়। কেউ কেউ নিচে স্টোরেজও যোগ করছেন—যেখানে রাখা যায় টিস্যু, প্লেট বা ছোটখাটো প্রয়োজনীয় জিনিস।

আর যদি আপনি একটু ভিন্ন কিছু চান, তাহলে জাপানি ধাঁচে নিচু টেবিল বানিয়েও ব্যবহার করতে পারেন। কয়েকটি মজবুত পাত্র বা কাঠের টুকরোর ওপর একটি বোর্ড বা গ্লাস বসিয়ে তৈরি হয়ে যায় অনন্য এক খাবার টেবিল। নিচে পাতা থাকে শতরঞ্জি বা ম্যাট, আর বসার জন্য বড় বালিশ।

এমন পরিবেশে খাবারের পাশাপাশি সময় কাটানোর অভিজ্ঞতাটাও হয়ে ওঠে অন্যরকম। তবে পরিবারের কেউ যদি বয়সে বড় হন, তাদের জন্য নিচু টেবিলের বদলে উঁচু, আরামদায়ক টেবিলই বেছে নেওয়া ভালো।

খাবার টেবিলের গল্প শুধু আসবাবের কথা নয়—এটা একটি পরিবারের আবেগ, সম্পর্ক আর সময় ভাগাভাগির জায়গা। তাই সেটিকে ঘিরে যত্ন, ভালোবাসা আর একটু ভাবনা থাকলেই এই ছোট্ট কোণ হয়ে উঠতে পারে ঘরের সবচেয়ে আপন জায়গা।

সূত্র: কালবেলা

সর্বশেষ:

শিরোনাম: