সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩১ ভাদ্র ১৪৩২

ইসরাফিল (আ.) শিঙ্গা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন যেভাবে

ইসরাফিল (আ.) শিঙ্গা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন যেভাবে

সংগৃহীত

পৃথিবীর জীবন, পৃথিবীতে মানুষের বসবাস— সবকিছু শেষ হবে কিয়ামতের মাধ্যমে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন— তারা শুধু এই অপেক্ষাই করছে যে, কেয়ামত অকস্মাৎ তাদের কাছে এসে পড়ুক। বস্তুত কেয়ামতের লক্ষণসমূহ তো এসেই পড়েছে। সুতরাং কেয়ামত এসে পড়লে তারা উপদেশ গ্রহণ করবে কেমন করে? (সুরা মুহাম্মদ, আয়াত : ১৮)

পবিত্র কোরআনের সূরা কারিয়ার শুরুতে আল্লাহ তায়ালা কিয়ামত দিবসের বিভীষিকার আলোচনা তুলে ধরেছেন। কিয়ামতের বিভীষিকার কথা তুলে ধরতে গিয়ে তিনি বলেছেন, সেদিন মানুষ বিক্ষিপ্ত পঙ্গপালের মতো হয়ে যাবে এবং এদিক সেদিন ছুটাছুটি করবে। অর্থাৎ তখন মনে হবে মানুষ যেন উন্মত্ত কীটপতঙ্গে মতো ঝাঁপ দিচ্ছে ধ্বংসের আগুনে। অত্যধিক আতঙ্ক ও অস্থিরতার কারণে মানুষ তখন দিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে আগুনে আত্মহুতিদান করা পতঙ্গের মতো হয়ে যাবে।

কিয়ামতের বর্ণনা করতে গিয়ে আরও বলা হয়েছে, তখন পাহাড় পর্বতমালা চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে এমনভাবে শূন্যে উড়তে থাকবে যে, দেখে মনে হবে আকাশে ভেসে বেড়াচ্ছে ধুনিত রঙ-বেরঙের পশম মতো।

কিয়ামতের বর্ণনার পর সেদিন মানুষের অবস্থা এবং পরিণতি কেমন হবে তা তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে, সেদিন যার আমলের পাল্লা ভারি হবে সে লাভ করবে সন্তোষজনক জীবন। আর যার পাল্লা হালকা হবে সে জাহান্নামের যোগ্য বলে বিবেচিত হবে। তাকে উল্টোমুখে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।

কিয়ামতের সূচনা হবে হজরত ইসরাফিল আ.-এর শিঙ্গায় ফুঁৎকারের মাধ্যমে। পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে,

 وَنُفِخَ فِي ٱلصُّورِ فَصَعِقَ مَن فِي ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَمَن فِي ٱلۡأَرۡضِ إِلَّا مَن شَآءَ ٱللَّهُۖ ثُمَّ نُفِخَ فِيهِ أُخۡرَىٰ فَإِذَا هُمۡ قِيَامٞ يَنظُرُونَ  وَأَشۡرَقَتِ ٱلۡأَرۡضُ بِنُورِ رَبِّهَا وَوُضِعَ ٱلۡكِتَٰبُ وَجِاْيٓءَ بِٱلنَّبِيِّ‍ۧنَ وَٱلشُّهَدَآءِ وَقُضِيَ بَيۡنَهُم بِٱلۡحَقِّ وَهُمۡ لَا يُظۡلَمُونَ 

আর শিঙ্গায় ফুঁক দেওয়া হবে। ফলে আল্লাহ যাদেরকে ইচ্ছা করেন তারা ছাড়া আসমানসমূহে যারা আছে এবং পৃথিবীতে যারা আছে সকলেই বেহুঁশ হয়ে পড়বে। তারপর আবার শিঙ্গায় ফুঁক দেওয়া হবে, তখন তারা দাঁড়িয়ে তাকাতে থাকবে। 

আর জমিন তার রবের নূরে আলোকিত হবে, আমলনামা উপস্থিত করা হবে এবং নবী ও সাক্ষীগণকে আনা হবে, তাদের মধ্যে ন্যায়বিচার করা হবে। এমতাবস্থায় যে, তাদের প্রতি জুলম করা হবে না। (সুরা আয-যুমার, আয়াত : ৬৮-৬৯)

অন্য আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন,

یَّوۡمَ یُنۡفَخُ فِی الصُّوۡرِ وَ نَحۡشُرُ الۡمُجۡرِمِیۡنَ یَوۡمَئِذٍ زُرۡقًا

যেদিন সিঙ্গায় ফুঁ দেয়া হবে আর আমি অপরাধীদেরকে একত্রিত করব (ভয়ে ভীত-সন্ত্রস্ত) দৃষ্টিহীন অবস্থায়। (সুরা ত্বহা, আয়াত : ১০২)

ইসরাফিল (আ.)-এর শিঙ্গায় ফুঁৎকারের মাধ্যমে কিয়ামতের সূচনা হবে। এক হাদিসে মহানবী (সা.) বলেছেন—

ইসরাফিল (আ.) শিংগা মুখে ভরে দাঁড়িয়ে আছেন, মাথা নত করে প্রভুর আদেশের অপেক্ষায় আছেন যে, কখন তাঁকে আদেশ করা হবে এবং তিনি ফুঁ মারবেন। (তিরমিজি) 

ইসরাফিল (আ.)-এর প্রথম ফুঁতে সকলেই মারা যাবে। আর দ্বিতীয় ফুঁতে আল্লাহর আদেশে সকলেই জীবিত হবে এবং হাশরের মাঠে জমায়েত হবে। 

সূত্র: ঢাকা পোষ্ট

সর্বশেষ:

শিরোনাম: