রোববার, ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

পান চাষে লাভবান রাজবাড়ীর কৃষকরা!

পান চাষে লাভবান রাজবাড়ীর কৃষকরা!

রাজবাড়ীতে পান চাষে লাভবান কৃষকরা। বর্তমানে এখানকার কৃষকদের উৎপাদিত পান স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, সিঙ্গাপুর ও মালোয়েশিয়াসহ বিশ্বের ৮ দেশে রপ্তানি হচ্ছে। দেশে ও বিদেশে পানের চাহিদা থাকায় দিন দিন পান চাষির সংখ্যা বাড়ছে।

জানা যায়, চলতি মৌসুমে রাজবাড়ী জেলার প্রায় ৫ শতাধিক চাষি পান চাষ করছেন। এই জেলার ৪ উপজেলার মধ্যে শুধু বালিয়াকান্দির কৃষকরা পান চাষ করেন। কৃষি বিভাগ থেকে প্রায় শত কোটি টাকা পান বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পানের বরজে পানের সবুজ পাতায় ভরে গেছে। কৃষকরা পান গাছের পরিচর্যা করছেন। এখানকার চাষিরা মিষ্টি ও সাচিসহ বিভিন্ন জাতের পান চাষ করেন। এখানকার উৎপাদিত পান দেশের চাহিদা মিটিয়ে ভারত, পাকিস্তান সহ বিভিন্ন দেশে সরবরাহ করা হয়েছে। চলতি মৌসুমে বালিয়াকান্দি উপজেলার আড়কান্দি, বেতেঙ্গা, চর আড়কান্দি, ইলিশকোল, বেতেঙ্গা, খালকুলা,বহরপুর এলাকায় ব্যাপক পানের আবাদ হয়েছে।

বহরপুর ইউনিয়নের পানচাষি আব্দুল মাজেদ বলেন, আমাদের এখানে মিষ্টি পান আর সাচি পানের বরজ রয়েছে। আমাদের এখানকরা পান স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে বিদেশের প্রায় ৮ টি দেশে রপ্তানি করা হয়। আমরা সরকারি ভাবে সহযোগিতা পেলে আরো বেশি উৎপাদন করতে ও পান বিক্রি করে আয় করতে পারবো।

পানচাষি গনেশ মিত্র বলেন, আমরা পূর্ব পুরুষের আমল থেকে পানের চাষ করে আসছি । সেই ঐতিহ্যটা ধরে রাখতে আমরাও পান চাষ করি। আমাদের এখানকার পান দেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলায় সরবরাহ করা হয়।

চাষি আ. আলীম বলেন, আমাদের এ অঞ্চলে সাচি ও মিষ্টি পানের প্রচুর চাষ করা হয়। প্রতি শতক জমিতে প্রায় ৫০০ পান গাছ রোপন করা যায়। যা থেকৈ সারাবছর পান পাওয়া যায়। এখানকরা মিষ্টি পান রাজবাড়ী জেলাসহ পার্শ্ববর্তী কয়েক জেলার চাহিদা মিটিয়ে ভারত, পাকিস্তান, ভুটান, মালদ্বীপ, শ্রীলংকা, নেপাল, সৌদি আরব, মালয়েশিয়া রপ্তানি করা হয়। এতে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন হয়।

পানচাষি ও ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, প্রতিটি পান গাছ থেকে প্রায় ৫০টি পান পাতা পাওয়া যায়। আর ৮০ টি পানে হয় এক পণ এবং ৪০ পণে এক কুড়ি। বর্তমানে ভালো বড় এক কুড়ি পান ৮ হাজার টাকায় বিক্রি করা যায়। এই পানের দেশের পাশাপাশি বিদেশেও জনপ্রিয়তা রয়েছে।

বালিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি বিভাগ মতে, এবছর প্রায় ৮৫ হেক্টর জমিতে পানের চাষ করা হয়েছে। প্রতি বছর জেলায় ৭০ কোটি টাকার বেশি পানের বাজার তৈরি হয়। উৎপাদন খরচের সমান লাভ হওয়ায় পান চাষে দিন দিন আগ্রহী হচ্ছেন চাষিরা।

বহরপুর পান বাজারের ব্যবসায়ী সুশান্ত দত্ত বলেন, বর্তমানে ১ বিরা (৮০টি পান) বড় পানের দাম ২৫০-৩০০ টাকা আর মাঝারি আকারের ১ বিরা পান ১৫০ টাকা ও ছোটো আকারের পান ৫০ টাকায় বিক্রি করা হয়। আর ভালো মানের ১ কুড়ি (৪০ বিরা) পান ৮ হাজার টাকায় বিক্রি হয়।

বালিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. রফিকুল ইসলাম, চলতি বছর রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলায় ৮৫ হেক্টর জমিতে পান চাষ হয়েছে। এখানকার কৃষকরা সাচি, দেশি ও মিঠা পান আবাদ করেন। কৃষকরা প্রতি শতকে ৪০০-৫০০ টি পান গাছ রোপন করেন। প্রতিটি গাছে ১০০-১৫০টি পাতা পাওয়া যায়। ধারনা করা হচ্ছে এবছর শতকোটি টাকার পান বিক্রি করা হবে।

আলোকিত সিরাজগঞ্জ

সর্বশেষ: