সংগৃহীত
‘মম এক হাতে বাঁকা বাঁশের বাঁশরী, আর হাতে রণতূর্য’ বিদ্রোহী কবিতায় এভাবেই দ্রোহ ও প্রেমে উজ্জীবিত করেছিলেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম। ঠিক একইভাবে ‘মোর প্রিয়া হবে এসো রানী, দেবো খোঁপায় তারার ফুল’ গানের কথায় প্রিয়তমার প্রতি গভীর অনুরাগ, আবেগ আর ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছিলেন কাজী নজরুল ইসলাম। আজ ১১ জ্যৈষ্ঠ দ্রোহ, প্রেম, মানবতার কবি ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৫তম জন্মবার্ষিকী। ১৮৯৯ ইংরেজি, ১৩০৬ বঙ্গাব্দের এই দিনে অবিভক্ত ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন কাজী নজরুল ইসলাম।
তিনি ছিলেন একাধারে কবি, ঔপন্যাসিক, নাট্যকার, সংগীতজ্ঞ, সাংবাদিক, সম্পাদক, রাজনীতিবিদ ও দার্শনিক। সাহিত্যের সব শাখায় তাঁর বিচরণ থাকলেও তিনি মূলত কবি হিসেবেই সবচেয়ে বেশি পরিচিত ছিলেন।
স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের ২৪ মে কবিকে সপরিবার বাংলাদেশে নিয়ে আসেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাংলা সাহিত্য এবং সংস্কৃতিতে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৭৪ সালের ৯ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিদ্রোহী কবি নজরুলকে সম্মানসূচক ডি.লিট উপাধিতে ভূষিত করে।
১৯৭৬ সালে সরকার কবিকে প্রদান করে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব। একই বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি কবিকে একুশে পদকে ভূষিত করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বাঙালির চেতনার কবি নজরুল। ‘মসজিদেরই পাশে আমায় কবর দিও ভাই, যেন গোর থেকে মুয়াজ্জিনের আজান শুনতে পাই’ মৃত্যু চেতনার এমন গানে মসজিদের পাশে কবিকে সমাহিত করার আবেদন জানিয়েছিলেন বলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে তাঁকে সমাহিত করা হয়।
জাতি আজ বর্ণাঢ্য আয়োজনে কবির জন্মদিন উদ্যাপন করবে। সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে থাকছে নানা আয়োজন।জাতীয় পর্যায়ে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে আজ জাতীয় জাদুঘরে শুরু হচ্ছে তিন দিনের নজরুল উৎসব। এ ছাড়া ছায়ানটে গতকাল শুরু হয়েছে তিন দিনের নজরুলজয়ন্তী। বাংলা একাডেমি ও শিল্পকলা একাডেমিও নানা আয়োজনে কবির জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন করবে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠান দুটির জনসংযোগ বিভাগ।
অন্যদিকে, কবির জন্মদিন উপলক্ষে কবির স্মৃতিবিজড়িত কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, মানিকগঞ্জ, মময়মনসিংহ ও চুয়াডাঙ্গায় থাকছে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালা।
সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন
