![ফুল চাষে বদলাতে পারে ঠাকুরগাঁওয়ের অর্থনীতি ফুল চাষে বদলাতে পারে ঠাকুরগাঁওয়ের অর্থনীতি](https://www.alokitosirajgonj.com/media/imgAll/2024February/Screenshot_14-2402121040.png)
সংগৃহীত
ফুল ভালোবাসে না এমন মানুষ পাওয়া দুষ্কর। প্রকৃতিতে যা কিছু শুভ ও সুন্দর, তার মধ্যে ফুলকে অন্যতম প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। যখন এই ফুল চাষই হয়ে ওঠে জীবন নির্বাহের প্রধান মাধ্যম, তখন অর্থনীতির চাকা তো ঘুরে যাবেই।
উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁও। এ অঞ্চলে অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি ফুল চাষের ব্যাপক সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে। ধীরে ধীরে বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষ করে বেশ কয়েকজন কৃষক তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন করছেন। এ অঞ্চলের আবহাওয়া ও জমির মান ভালো থাকায় ফুল চাষ হতে পারে ঠাকুরগাঁওয়ের অর্থনীতির নতুন সম্ভাবনা।
তেমনিভাবে ঠাকুরগাঁওয়ে প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিকভাবে শুরু হয়েছে বিভিন্ন ধরনের ফুল চাষ। গোলাপ, গাঁদা, রজনীগন্ধাসহ বেশকিছু জাতের ফুল উৎপাদন করে স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় ফুল বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন ঠাকুরগাঁও সদরের নারগুন ও বেগুনবাড়ি ইউনিয়নের কয়েকজন কৃষি উদ্যোক্তা। আর ফুল চাষকে ঘিরে সৃষ্টি হয়েছে অনেকের কর্মসংস্থান।
জেলার বিভিন্ন নার্সারি ঘুরেও দেখা যায়, নার্সারি পর্যায়ে স্বল্প পরিসরে কিছু ফুল চাষ ও চারা উৎপাদন করে এই জেলার কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। ফুল চাষ লাভজনক হওয়ায় অন্যান্য ফসলের চেয়ে অল্প সময়ে বেশি লাভের আশায় কৃষকরা এখন ফুল চাষের দিকে বেশি ঝুঁকছেন।
তাদের দেখে আগ্রহী হয়ে উঠছেন অন্যান্য এলাকার স্থানীয় কৃষকরা। আর ফুল চাষকে ঘিরে সৃষ্টি হয়েছে স্থানীয় বেকারদের কর্মসংস্থান। এছাড়া ফুলের উৎপাদন ভালো হওয়ায় আশপাশের অন্যান্য চাষিরা আগ্রহী হয়ে উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে পরামর্শ নিচ্ছেন। আর নানা রংয়ের বিভিন্ন জাতের চাষাবাদকৃত ফুটন্ত ফুল দেখতে ও ঘ্রাণ নিতে ছুটে আসছেন অনেকেই।
ঠাকুরগাঁয়ের বেগুন বাড়ি ইউনিয়নের একজন ফুল চাষি আলিউর রহমান। গোলাপ, গাঁদা, রজনীগন্ধাসহ বিভিন্নজাতের উন্নতমানের ফুল চাষ করছেন তিনি । স্থানীয় শ্রমিকদের যত্নে চাষাবাদকৃত চোখজুড়ানো ফুটন্ত এসব ফুল দ্রুতই বেড়ে উঠছে। সরবরাহ করা হচ্ছে বাজারে। সামাজিক, রাজনৈতিকসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ফুলের কদর থাকায় একটা সময় অন্যান্য জেলা থেকে স্থানীয় বাজারের চাহিদা পূরণ করা হলেও এখন নিজ জেলায় উৎপাদন হচ্ছে বিভিন্ন জাতের ফুল।
৪ বছর আগে প্রথমে অল্প পরিসরে ফুল চাষ করলেও, বর্তমানে প্রায় ২ একর জমিতে বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষ করে ভাগ্যের পরিবর্তন করছেন তিনি।
ওয়ালিউর রহমানের বাগানের ফুল ঠাকুরগাঁওয়ের চাহিদা মিটিয়ে জেলা শহরের বাইরে ও দেশের বিভিন্ন জেলায় বর্তমানে ফুল রপ্তানি করছেন। তার এই ফুল চাষের ঠাকুরগাঁও জেলায় অর্থনীতিতে নতুন মাত্রা তৈরি হবে আশা করছেন ।
এ বিষয়ে আলিউর রহমান বলেন, আমি প্রথমে অল্প পরিমাণে ফুল চাষ করেছিলাম চার বছর আগে। ফুল চাষে লাভবান হয় বর্তমানে আমার প্রায় দুই একর জমিতে বিভিন্ন ধরনের ফুলের চাষ রয়েছে। ১৪ ফেব্রুয়ারি এবং একুশে ফেব্রুয়ারিকে ঘিরে আমার ফুল চাষে বেশ লাভের আশা করছি। ঠাকুরগাঁও জেলার জমি ফুল চাষের জন্য উপযোগী। অন্যান্য কৃষকরা যদি ফুল চাষের দিকে ঝোঁকে তাহলে এই জেলায় অর্থনীতির নতুন সম্ভাবনা তৈরি হবে।
ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সিরাজুল ইসলাম জানান, অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি কৃষকরা ফুল চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। কৃষি বিভাগ ফুল চাষিদের বিভিন্ন রকম পরামর্শ ও সেবা প্রদান করছেন, সেই সঙ্গে কৃষকদের ফুল চাষে উৎসাহিত করছেন।
অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি এ জেলায় ফুল চাষ ছড়িয়ে দিতে পারলে একদিকে যেমন লাভবান হবেন কৃষক, অন্যদিকে কৃষি অর্থনীতিতে যোগ হবে নতুনমাত্রা। এমনটাই জানান কৃষি বিভাগের এই শীর্ষ কর্মকর্তা। বর্তমানে ঠাকুরগাঁও জেলায় প্রায় ৫ এককর জমিতে ফুল চাষ হচ্ছে।
সূত্র: ঢাকা পোস্ট