শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

মালচিং পদ্ধতিতে সবজি চাষে ঝুঁকছেন শিবচরের কৃষকরা!

মালচিং পদ্ধতিতে সবজি চাষে ঝুঁকছেন শিবচরের কৃষকরা!

মাদারীপুরের তরুণদের মাঝে দিন দিন জনপ্রিয়তা পাচ্ছে সবজি চাষ। তরুণরা চাকরি ও ব্যবসার পাশাপাশি আধুনিক পদ্ধতিতে বিভিন্ন জাতের সবজি চাষে আগ্রহী হয়েছেন। বিশেষ করে মালচিং পদ্ধতিতে চাষ করে অনেক তরুণ সফল হয়েছেন। ধীরে ধীরে এই পদ্ধতিতে সবজি চাষ কৃষক সহ তরুনদেরও আকর্ষিত করছে।

জানা যায়, মাদারীপুর জেলার শিবচরের চরাঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকার পতিত জমি এখন চাষের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। নিজেদের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বাণিজ্যিকভাবে সবজি চাষ করেছেন কৃষক সহ তরুন ও যুবকরা। এতে ব্যবহার হচ্ছে আধুনিক মালচিং পদ্ধতি। সম্প্রতি বিভিন্ন জাতের সবজি চাষে মাটি তৈরিতে পলিথিনের ব্যবহার বাড়ছে। এই পদ্ধতিতে উৎপাদন অনেক বেশি বলে জানান একাধিক তরুণ কৃষক। তাই দিন দিন এই পদ্ধতিতে চাষ ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।

সরেজমিনে উপজেলার শিবচরের সন্যাসীরচর, দত্তপাড়াসহ বেশ কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কৃষকরা আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ করছেন। কৃষকরা ফসল ফলানোর পাশাপাশি বিভিন্ন জাতের শাক-সবজি চাষ করছেন। জৈব সারের প্রয়োগে মাটি তৈরী, সারিবদ্ধভাবে মাটি উঁচু করে পলিথিনের শিট বিছিয়ে দিচ্ছেন এবং নির্দিষ্ট দূরত্বে বীজ বপন করে তাতে টমেটো, ফুলকপি, বাধাকপি, করলা, ঢেঁড়স, স্কোয়াশ, ব্রুকলি, নানা জাতের বেগুন, মরিচ, ক্যাপসিকাম ফলানো হচ্ছে। সবজিকে পোকামাকড় থেকে রক্ষা করতেও ব্যবহার হচ্ছে আধুনিক পদ্ধতি।

উপজেলার রাজারচর এলাকার সবজিচাষী সুমন আহমেদ বলেন, আমি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করি। তার পাশাপাশি গত ৫ বছর আগে পরিক্ষামূলক সবজি চাষ করেছিলাম। বর্তমানে আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহারে বাণিজ্যিকভাবে বড় পরিসরে নানা ধরনের সবজি চাষ করছি।

তিনি আরো বলেন, কৃষির প্রতি টান থেকেই শুরু করেছি। এখন বানিজ্যিকভাবে আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার করে শিবচরে বিদেশি সবজির মধ্যে ব্রুকোলি, স্কোয়াশ, রেড ক্যাভেজ প্রথম চাষ করি। ভালো ফলনও পেয়েছি। এছাড়াও ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটো, বেগুন, করলার চাষ করছি।

উপজেলার সন্যাসীরচর মোল্লাকান্দি এলাকার কৃষক লুৎফর রহমান বলেন, কৃষি অফিসের পরামর্শে মালচিং পদ্ধতিতে সবজি চাষ করে সফলতা পেয়েছি। এতে জমিতে মাটি কিছুটা উঁচু করে তার ওপর পলিথিনের শিট বিছিয়ে দিতে হয়। এ পদ্ধতিতে মাটির তাপমাত্রা স্বাভাবিক থাকে। এতে করে মাটিতে পোকামাকড়ের আক্রমণ খুবই কম হয়। আর ফলনও বেশি পাওয়া যায়।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে শিবচর উপজেলায় মালচিং পদ্ধতিতে ৬ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন ধরনের সবজির চাষাবাদ করা হয়েছে। শিবচরে ৪২ জন কৃষক এ পদ্ধতিতে চাষাবাদ করছেন।

স্থানীয় আরো কৃষকরা জানান, আধুনিক পদ্ধতিতে প্রথমেই বেশি খরচ হয়। পরে আর বেশি খরচ করতে হয় না। এই পদ্ধতিতে চাষ করলে গাছে আগাছাও কম হয়। বারবার সার দেওয়া ও পানির সেচের ঝামেলা থাকে না। তাই এই পদ্ধতিতে চাষে ঝুঁকি কম আর লাভবান হওয়া যায়।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানান, মালচিং পদ্ধতি চাষাবাদ একটি আধুনিক পদ্ধতি। সবুজ কৃষির জন্য ওই পদ্ধতিগুলো অত্যন্ত কার্যকর। এতে উৎপাদন খরচ কম হয়। আমরা এ পদ্ধতিটি কৃষকের মাঝে ছড়িয়ে দিতে কাজ করছি।

আলোকিত সিরাজগঞ্জ