সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ২৮ আশ্বিন ১৪৩২

এক গাছ থেকে বারবার পাওয়া লাউ শাক বেচে লাভবান গোমতী চরের কৃষক

এক গাছ থেকে বারবার পাওয়া লাউ শাক বেচে লাভবান গোমতী চরের কৃষক

সংগৃহীত

কুমিল্লার গোমতী নদীর বিস্তীর্ণ চরে এখন সবুজের সমারোহ। চরের মধ্যে সারি সারি জমিতে চাষ হয়েছে লাউ শাকের। চাহিদা থাকায় বিক্রি করে চরের কৃষকেরা ভালো দাম পাচ্ছেন।

গোমতী নদীর কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার ভান্তির চরে গতকাল বুধবার সরেজমিনে দেখা গেছে, এখানে লাউ শাকের চাষ সবচেয়ে বেশি হয়েছে। কিছু জমিতে মিষ্টি কুমড়া, লাল শাক ও মুলা চাষ করা হয়েছে।

ভান্তির চরের পাশাপাশি পাশের কামারখাড়া, বালিখাড়া, কাহেতরাসহ কয়েকটি এলাকায় গোমতীর চরে প্রচুর পরিমাণে লাউ শাক চাষ করা হয়েছে।

ভান্তির চরে গিয়ে দেখা গেল ফসলের পরিচর্যায় কৃষকদের ব্যস্ততা। পুরুষদের সঙ্গে নারীরাও কাজ করছেন। চরের কৃষকেরা বলছেন, অল্প সময়ে কম খরচে চাষাবাদ করা যায়। একটি গাছ থেকে বারবার শাক সংগ্রহ করা যায়। বাজারে সারা বছরই লাউ শাকের চাহিদা থাকে। ফলে এই শাক বিক্রি করে কৃষকেরা লাভবান হন।

ভান্তি গ্রামের কৃষক ফারুক হোসেন জানান, তিনি তাঁর জমি থেকে ইতিমধ্যে কয়েক দফা শাক বিক্রি করেছেন। আবার কিছু জমিতে লাউয়ের বীজ বপন করেছেন। স্ত্রীসহ প্রায় ২০ শতাংশের একটি জমিতে লাউ গাছের আগাছা পরিষ্কার করার ফাঁকে ফাঁকে কথা বলছিলেন তিনি। বলেন, এই শাকের বাজারদর ভালো। ৫ থেকে ৭টি ডগা দিয়ে তৈরি করা একটি আঁটি বাজারে বিক্রি হয় ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। তাঁরা খেতে বিক্রি করেন ২৫ টাকায়। তবে তাঁরা লাউ ধরা পর্যন্ত অপেক্ষা করেন না। লাউ চাষে ঝামেলা আছে, মাচা তৈরি করতে হয়। শুধু শাকের জন্য লাউ চাষে মাচা করার ঝামেলা নেই। লাউ শাক মাটিতেই বেড়ে ওঠে। একবার বপন করলে অন্তত দুই মাস ধরে বিক্রি করা যায়। এ জন্য চরের কৃষকেরা এখন লাউ শাক চাষে বেশি আগ্রহী।

চাহিদা থাকায় লাউ শাক বিক্রি করে চরের কৃষকেরা ভালো দাম পাচ্ছেন। কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার ভান্তির চরে

ফারুক হোসেন জানান, ৪০ শতাংশ জমিতে লাউ শাক চাষ করতে তাঁর ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। কয়েক দফায় বিক্রি করে পান ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা। এতে ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা লাভ থাকে। বীজ লাগানোর এক মাসের মধ্যেই শাক বিক্রি শুরু করা যায়। জমির পরিচর্যায় তেমন কষ্টও নেই।

স্থানীয় উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা শারমিন সুলতানা প্রথম আলোকে বলেন, গোমতীর চরের মাটি অত্যন্ত উর্বর। বর্তমানে চরের বেশির ভাগ জমিতে লাউ শাকের চাষ হয়েছে। এই লাউ শাক স্থানীয় বাজার ছাড়াও কুমিল্লা শহর ও পাশের উপজেলাগুলোর বাজারে সরবরাহ করা হচ্ছে। এ ছাড়া দেশের বৃহৎ সবজির বাজার কুমিল্লার নিমসার বাজারের মাধ্যমে ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে। এতে চরের কৃষকেরা লাভবান হচ্ছেন।

একবার বপন করলে অন্তত দুই মাস ধরে লাউ শাক বিক্রি করা যায়। এ জন্য চরের কৃষকেরা এখন লাউ শাক চাষে বেশি আগ্রহী। কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার ভান্তির চরে

কৃষি বিভাগের মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা কৃষকদের সার্বক্ষণিক পরামর্শ দিয়ে সহায়তা দিচ্ছেন বলে জানান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লার উপপরিচালক মো. মিজানুর রহমান।

সূত্র: প্রথম আলো

সর্বশেষ:

শিরোনাম: