মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

আজ তাড়াশে আড়াই,শ বছরের পুরাতন ঐতিহ্যবাহী দই মেলা

আজ তাড়াশে আড়াই,শ বছরের পুরাতন ঐতিহ্যবাহী দই মেলা

চলনবিল অধুষ্যিত তাড়াশে স্বরস্বতী পূঁজা উপলক্ষে আজ বৃহস্পতি বার দিন ব্যাপী দইয়ের মেলা  অনুষ্ঠিত হচ্ছে। গতকাল বুধবার দেশের বিভিন্ন জেলা  থেকে নামিদামি ঘোষদের দই আসার মধ্য দিয়ে তাড়াশের প্রায়  ২০০’শ ৫০ বছরের ঐতিহ্যবাহী দইয়ের মেলা বেচা কেনা শুর হয়েছে । 


দিনব্যাপী এ মুল মেলায় দই সহ রসনা বিলাসী খাবার রেকর্ড পরিমান বিক্রী হয়ে থাকে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। ঐতিহ্যবাহী চলনবিলের তাড়াশে দই মেলা নিয়ে রযেছে নানা গল্প কাহিনী। তাড়াশ উপজেলা পুজাঁ উদযাপন পরিষদের সভাপতি তপন কুমার গোস্বামী জানান, তাড়াশের জমিদারী আমলে তৎকালীন জমিদার বনোয়ারী লাল রায় বাহাদুর প্রথম দই মেলার প্রচলন শুরু করেছিলেন। 


সাধারনত জনশ্রতি আছে জমিদার রাজা রায় বাহাদুর দই ও মিষ্টান্ন পছন্দ করতেন। এ ছাড়া জমিদার বাড়িতে আসা অতিথিদের আপ্যায়নে এ অঞ্চলে ঘোষদের তৈরি দই পরিবেশন করা হতো। আর সে থেকেই জমিদার বাড়ীর সম্মুখে রশিক লাল রায় মন্দিরের পার্শ্বের মাঠে স্বরস্বতী পুঁজা উপলক্ষে ৩ দিন ব্যাপী  দই মেলা বসত। প্রতি বছর শীত মৌসুমের মাঘ মাসে শ্রী পঞ্চমী তিথিতে দই মেলায় বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, নাটোরসহ দেশের বিভিন্ জেলা থেকে ঘোষেরা দই এনে মেলায় পসরা বসিয়ে বিকিকিনি করতেন। 
কথিত আছে সবচেয়ে ভাল সুস্বাদু দই তৈরি কারক ঘোষকে জমিদারের পক্ষ থেকে উপঢৌকন প্রদান করা রেওয়াজ ছিল। তবে জমিদার আমল থেকে শুর হওয়া তাড়াশের দইয়ের মেলা এখনও মাঘ মাসের শ্রী পঞ্চমী তিথিতে উৎসব আমেজে বসার বাৎসরিক রেওয়াজ এখনও আছে  এবং তা ৩ দিনের স্থলে ১ দিন ব্যাপী হয়ে থাকে। দইয়ের মেলায় আসা এ অঞ্চলের দইয়ের স্বাদের কারনে নামেরও ভিন্নতা রয়েছে।


 যেমন-ক্ষীরসা দই,  শাহী দই ,শেরপুরের দই, বগুড়ার দই, টক দই, শ্রীপুরী, ডায়বেটিস দই সহ এ রকম হরেক নামে দামের হেরফেরে বিক্রি হয় দই। বিশেষ করে বগুড়ার শেরপুর, চান্দাইকোনা, শ্রীপুর, সিরাজগঞ্জের তাড়াশের দই প্রচুর বেচাকেনা হয়। 
স্থানীয় একাধিক ঘোষের সাথে কথা বলে জানা যায়, দুধের দাম, জ্বালানী, শ্রমিক খরচ, দই পাত্রের মূল্য বৃদ্ধির কারনে দইয়ের দামও বৃদ্ধিও পাচ্ছে। তবে চাহিদা থাকার কারনে কোন ঘোষের দই অবিক্রিত থাকে না। যার কারনে মেলার আগেই ঘোষেরা দই তৈরীতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।

আলোকিত সিরাজগঞ্জ