শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

চোখ জুড়িয়ে যায় সিরাজগঞ্জের শিমুল ফুলে

চোখ জুড়িয়ে যায় সিরাজগঞ্জের শিমুল ফুলে

রেললাইনের দুধারে এক হাজার শিমুল গাছ। ফসলের মাঠ সবুজে ছেয়ে আছে। মৃদুমন্দ হাওয়া বইছে। ভেসে আসছে শিমুল ফুলের ঘ্রাণ। কোথাও টুকটুকে লাল, কোথাও হলুদ, কোথাও কমলা। দেখে মনে হয়, কে যেন মুঠো মুঠো রং ছড়িয়ে দিয়েছে চারপাশে। প্রকৃতির এই রং, রূপ, বৈচিত্র্যের কারণ ঋতুরাজ বসন্ত।

সিরাজগঞ্জের সলপ এমন রূপে সেজেছে এখন। মৌমাছির গুঞ্জন আর পাখির কলকাকলিতে মুখর এলাকা। এ যেন কোকিলের সুমিষ্ট কুহুতানে ফাগুনের উত্তাল হাওয়া দিচ্ছে দোলা। গাছে গাছে জেগে উঠেছে সবুজ পাতা। মুকুল আর শিমুল ফুল দেখে বোঝা যায় শীত বিদায় নিয়ে এসেছে ফাগুন।

রেললাইনের দুপাশে প্রতিটি শিমুল গাছ ছেয়ে আছে লাল টুকটুকে ফুলে। ফাগুনের এই আগুন লাগা একেকটি শিমুল গাছ যেন প্রকৃতির আপন আভায় সেজে উঠেছে। পত্রবিহীন প্রতিটি শিমুল গাছে ছেয়ে থাকা লাল টুকটুকে ফুলগুলো মন কাড়ে সবার। তাই তো প্রকৃতির এমন দৃশ্য উপভোগ করতে রেললাইনে ভিড় করছেন প্রকৃতিপ্রেমীরা।

এমন অপরূপ দৃশ্য দেখতে আসা সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী সুস্মিতা আরা জাগো নিউজকে বলেন, ‘শিমুল ফুলের সমারোহ দেখতেই শহর থেকে কয়েকজন বন্ধু ঘুরতে এসেছি। এখানে এসে সত্যিই প্রকৃতির প্রেমে পড়েছি।’

ঋতুরাজ বসন্তের আগমনে আবহমান গ্রামবাংলার প্রকৃতি রাঙিয়ে দেয় শিমুল ফুল। তবে কালের বিবর্তনে সিরাজগঞ্জে চোখ ধাঁধানো গাঢ় লাল রঙের অপরূপ সাজে সজ্জিত শিমুল গাছ এখন কমে যাচ্ছে। এক যুগ আগেও জেলার বিভিন্ন উপজেলার গ্রামের অধিকাংশ বাড়ির আনাচে-কানাচে, রাস্তায়, পতিত ভিটায় প্রচুর শিমুল গাছ দেখা যেত। গাছে গাছে প্রস্ফুটিত শিমুল ফুলই স্মরণ করিয়ে দিতো এসেছে বসন্ত। এ ছাড়া প্রাকৃতিকভাবে তুলা আহরণের অন্যতম অবলম্বন শিমুল গাছ।

জানা যায়, এ গাছের সব অংশেই রয়েছে ভেষজগুণ। শীতের শেষে শিমুলের পাতা ঝরে পড়ে। বসন্তের শুরুতেই গাছে ফুল ফোটে। আর এ ফুল থেকেই হয় ফল। চৈত্র মাসের শেষের দিকে ফল পুষ্ট হয়। বৈশাখ মাসের দিকে ফলগুলো পেকে শুকিয়ে যায়। বাতাসে আপনা-আপনিই ফল ফেটে প্রাকৃতিকভাবে তুলার সঙ্গে উড়ে দূর-দূরান্তে ছড়িয়ে পড়া বীজ থেকেই নতুন গাছের জন্ম হয়। অন্য গাছের মতো এ গাছ কেউ শখ করে রোপণ করে না। নেওয়া হয় না কোনো যত্ন। প্রাকৃতিকভাবেই গাছ বেড়ে ওঠে। এ গাছের প্রায় সব অংশই কাজে লাগে। এর ছাল, পাতা ও ফুল গবাদিপশুর খুব প্রিয় খাদ্য।

বর্তমানে মানুষ এ গাছ কারণে-অকারণে কেটে ফেলছে। অতীতে নানা ধরনের প্যাকিং বাক্স তৈরি ও ইটভাটার জ্বালানি, দিয়াশলাইয়ের কাঠি হিসেবে ব্যবহার হলেও সেই তুলনায় রোপণ করা হয়নি। ফলে আজ কমে যাচ্ছে শিমুল গাছ।

সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বাসিন্দা নজরুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘আগে গ্রামে প্রচুর শিমুল গাছ ছিল। এখন আর তেমন দেখা যায় না। তাই এখন শিমুল তুলার দাম অনেক বেড়ে গেছে। এর মূল কারণ শিমুল ফল ফেটে তুলা ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন স্থানে। শিমুল গাছকে বাড়তি ঝামেলা হিসেবে দেখছে গ্রামবাংলার মানুষ।’

সিরাজগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বাবলু কুমার সূত্রধর জাগো নিউজকে বলেন, ‘দেশের কোথাও বাণিজ্যিকভাবে শিমুল গাছ বা তুলা চাষ করা হয় না। এটি প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠে। যে কারণে শিমুল গাছ হারিয়ে যাচ্ছে।

আলোকিত সিরাজগঞ্জ

শিরোনাম:

স্টেশনে যাত্রীরাই কাটতে পারবেন ট্রেনের টিকিট
এপ্রিলের ১৯ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ১২৮ কোটি ডলার
পুলিশকে সাহায্য করবে ক্রাইম জিপিটি!
পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে স্কুলজীবনের মজার স্মৃতিতে প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা
কাজিপুরে ভার্মি কম্পোস্ট সার বানিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু
১৪ কিলোমিটার আলপনা বিশ্বরেকর্ডের আশায়
আলো ছড়াচ্ছে কুষ্টিয়ার বয়স্ক বিদ্যালয়
মেয়েদের স্কুলের বেতন না দিয়ে ধোনিদের খেলা দেখলেন তিনি
‘ডিজিটাল ডিটক্স’ কী? কীভাবে করবেন?
তাপপ্রবাহ বাড়বে, পহেলা বৈশাখে তাপমাত্রা উঠতে পারে ৪০ ডিগ্রিতে
নেইমারের বাবার দেনা পরিশোধ করলেন আলভেজ
দেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীর