বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১

তাড়াশে কুমড়ো বড়ি তৈরি করে সচ্ছলতা ফিরেছে ১০ পরিবারে

তাড়াশে কুমড়ো বড়ি তৈরি করে সচ্ছলতা ফিরেছে ১০ পরিবারে

সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলায় কুমড়ো বড়ি তৈরি ও বিক্রয় করে জীবিকা চলছে ১০ থেকে ১২ টি পরিবারের। এ বড়ি সারা বছর তৈরী করা গেলেও এটা শীতের সময়টাতে বেশী তৈরী হয়। কারণ এটি শীতের সময় রান্না করে খেতে বেশী শুস্বাদু লাগে। তাড়াশের কারিগরদের হাতে তৈরি এ কুমড়ো বড়ি পাইকারদের হাত বদলে যাচ্ছে সারাদেশে।

কুমরো বড়ি কারিগর থেকে জানা গেছে, কুমরো বড়ি তৈরি করতে প্রথমে ডাউল ভিজিয়ে গুড়ো করে ছোট ছোট বড়ি করে টিনের তৈরি সিটের উপর শুকানো হয় এবং পরে সয়াবিন তেল এর মাঝে ভেজে খাওয়ার উপযোগী করে তৈরি করা হয় বড়ি। এ বড়ি সাধারণতো দুটো নামে চেনা হয় এ এলাকায় । কেউ কেউ বলেন ডাউলের বড়ি কেউ আবার বলেন কুমড়ো বড়ি। তবে সাধারণত কুমাররা এ বড়ি বেশি তৈরি করেন তাই কুমড়ো বড়ি নামেই বলেই বেশি পরিচিত।

শুক্রবার সকালে সরেজমিনে তাড়াশ উপজেলার নওগাঁ গ্রামে গিয়ে দেখা যায় ১০ থেকে ১২ টি পরিবার কুমরো বড়ি তৈরি করে রোদে শুকাচ্ছে । আর এ বড়িগুলো রোদে শুকানো হলেই বিক্রি করা হবে বিভিন্ন হাট-বাজারে। এমনকি এ বড়ি তৈরির চাতাল বা খোলা থেকেও সরাসরি পাইকারগণ ক্রয় করে নিয়ে যান।

তবে সময় পরিবর্তে বদলে গেছে বড়ি তৈরির পদ্ধতি। আগের দিনে ডাউল শিল পাটায় পরিবারের মেয়েরা সারা রাত ভর গুড়ো করে তা সারা দিন রোদ্রে শুকানোর পর কুমরো বড়ি তৈরি করতো। কিন্তু বর্তমানে সরকারের উন্নয়ন ভাবনায় দেশ ডিজিটালের সাথে সাথে কুমরো বড়ি তৈরি করার যন্ত্রও যেন ডিজিটাল হয়েছে। এখন ডাউল গুড়ো করার মেশিনের সাহায্যে ঘন্টার মধ্যই অনেক ডাউল গুড়ো করে বড়ি তৈরি করা যায়।

কুমড়ো বড়ি তৈরির কারিগরদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তাদের এ কুমরো বড়ি তৈরি করার আগে পারিবারিক অবস্থায় তেমন স্বচ্ছল ছিল না। সংসারে অভাব অনাটনে হাহাকার যেন লেগেই থাকতো। কিন্তু বর্তমানে কুমড়ো বড়ি তৈরি করে তারা এখন অনেকটাই স্বাবলম্বী ।

কুমড়ো বড়ি তৈরির কারিগর মুনছুর আলী ও আল আমিন হোসেন জানান, কুমড়ো বড়ি তৈরী করতে প্রথমে প্রচুর পরিশ্রম করতে হতো। কিন্তু এখন মেশিনের মাধ্যমে ডাল গুড়ো করা হয়, শুধু হাতের মাধ্যমে বড়ি তৈরি করতে রোদে শুকতে হয়। আর এ কাজে আমাদের সহযোগীতা করে পরিবারের নারী সদস্যগণও।  একদিনে এক চাতালে ১২০ থেকে ১৩০ কেজী কুমরো বড়ি তৈরি হয়ে থাকে। প্রতি কেজি বড়ি চাতাল থেকে পাইকারী ১৩০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হয়।

এ ব্যাপারে তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা মোঃ মেজবাউল করিম বলেন, কুমরো বড়ি তৈরি করে এ উপজেলায় অনেক বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান হয়ে বেকারত্ব দূর হচ্ছে। তারা চাইলে আমাদের যুবউন্নয়ন অধিদপ্তর হতে প্রশিক্ষণ নিয়ে ব্যবসা বৃদ্ধি করতে পারে। অথবা উপজেলা প্রশাসনের কাছে যে কোন সহযোগীতা প্রয়োজন মনে করলে তারা আবেদন করতে পারেন।

আলোকিত সিরাজগঞ্জ

সর্বশেষ: