
সংগৃহীত
কম খাওয়ার মানে হলো ক্ষুধার্ত থেকেই খাওয়া শেষ করা। কিন্তু যদি এমন হয় যে আপনি কম খেয়েও নিজেকে ক্ষুধার্ত বোধ না করেন? মূল কথা হলো নিজেকে ক্ষুধার্ত রাখা নয় বরং এমন খাবার খাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া যা আপনাকে দীর্ঘ সময়ের জন্য পেট ভরে রাখার অনুভূতি দেয়। কী, কখন এবং কীভাবে খাবেন তার ওপর নির্ভর করে আসলে আপনি কম খেয়েও ক্ষুধা দূর করতে পারবেন কি না।
১. পানি বা স্যুপ দিয়ে খাবার শুরু করুন
খাওয়ার ২০ মিনিট আগে এক গ্লাস পানি পান করলে স্বাভাবিকভাবেই ক্ষুধা দমন হয়। পানি পেটে কিছু জায়গা দখল করে, যার ফলে পেট ভরে থাকার অনুভূতি তৈরি হয় এবং অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা কম থাকে। অথবা এক বাটি হালকা স্যুপ খেতে পারেন। কম ক্যালোরিযুক্ত স্যুপ কেবল হাইড্রেটই করে না বরং পেট ভরানোর অনুভূতিও জাগায়, যা খাবারের বাকি সময় আপনাকে খাবারের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
২. খাবারে প্রোটিন যোগ করুন
প্রোটিন হলো ক্ষুধা নিবারণের একটি শক্তি। ডিম, টক দই, মসুর ডাল, টোফু, মাছ এবং মুরগির মাংসের মতো খাবার হজম হতে বেশি সময় নেয়, রক্তে শর্করার পরিমাণ স্থিতিশীল করে এবং ক্ষুধা কমায়। গবেষণায় দেখা গেছে যে, যারা প্রোটিন গ্রহণ বাড়ায় তারা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সামগ্রিকভাবে কম ক্যালোরি খায় কারণ তারা দীর্ঘ সময় ধরে তৃপ্ত থাকে। প্রতিটি খাবারে, বিশেষ করে সকালের নাস্তায় প্রোটিন যোগ করার লক্ষ্য রাখুন।
৩. ফাইবার সমৃদ্ধ খাবারের দিকে মনোযোগ দিন
ক্যালোরি যোগ না করেই ফাইবার আপনাকে পেট ভরিয়ে দেয়। সমস্ত শস্য, ফল, শাক-সবজি, মটরশুটি এবং বাদাম এক্ষেত্রে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। এগুলো হজমকে ধীর করে দেয়, দীর্ঘ সময়ের জন্য পেট ভরিয়ে রাখতে সাহায্য করে এবং এমনকী অন্ত্রের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে। উদাহরণস্বরূপ, সাদা ভাতের পরিবর্তে লাল চালের ভাত বা সাদা রুটি বাদ দিয়ে হোল গ্রেইন ব্রেড খেলে অল্পতেই পেট ভরে যাবে।
৪. ধীরে ধীরে এবং মনোযোগ সহকারে খান
আমাদের মস্তিষ্কের পেট ভরে গেছে তা বুঝতে প্রায় ২০ মিনিট সময় লাগে। তাড়াহুড়া করে খাওয়ার ফলে আপনি অতিরিক্ত খাবার খেয়ে ফেলতে পারেন। মনোযোগ সহকারে খান, ধীরে ধীরে চিবিয়ে খান এবং আপনি যা খাচ্ছেন তার স্বাদ নিন। এটি কেবল খাবার উপভোগ করতে সাহায্য করে না, বরং অতিরিক্ত খাবার খাওয়া থেকেও বিরত রাখে।
৫. ছোট প্লেট এবং বাটি ব্যবহার করুন
দৃশ্যমান তথ্য আমাদের খাওয়ার পরিমাণের ওপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গবেষণা থেকে জানা গেছে যে, ছোট প্লেট থেকে খাওয়ার ফলে খাবারের অংশ বড় দেখাবে, যা মস্তিষ্ককে প্রতারণা করবে যে আরও বেশি খাওয়া হয়েছে। খাবারের অংশ কমাতে আপনার প্লেটের আকার কমিয়ে পরীক্ষা করুন।
৬. স্বাস্থ্যকর চর্বি এড়িয়ে যাবেন না
স্বাস্থ্যকর চর্বি ক্ষুধা মেটাতে পারে। অ্যাভোকাডো, বাদাম, অলিভ অয়েল এবং বীজের মতো খাবার সবই পূর্ণ থাকে এবং হজম হতে সময় নেয়। শুধুমাত্র খাবারের পরিমাপ সম্পর্কে সাবধান থাকুন, কারণ চর্বিতে ক্যালোরি বেশি থাকে, তাই অল্প পরিমাণে খাবারই এক্ষেত্রে যথেষ্ট।
৭. খাবারের সময়সূচীতে সামঞ্জস্য বজায় রাখুন
অনিয়মিত খাবারের সময় ক্ষুধার হরমোনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারে, যার ফলে পরে অতিরিক্ত খাবার খেতে হতে পারে। নির্দিষ্ট সময়সূচীতে ক্ষুধা তৈরি করার জন্য আপনার শরীরকে প্রশিক্ষণ দিন। সেজন্য খাবারের সময়সূচী ঠিক রাখতে হবে। এটি ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে এবং হঠাৎ ক্ষুধার যন্ত্রণা রোধ করে যা অতিরিক্ত খাবার খেতে বাধ্য করতে পারে।
সূত্র: ঢাকা পোষ্ট