শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

শীতের সবজিতে উষ্ণতা, কমেছে মাছ-মাংসের দাম

শীতের সবজিতে উষ্ণতা, কমেছে মাছ-মাংসের দাম

সংগৃহীত

টানা কয়েক সপ্তাহ নিত্যপণ্যের বাজারে দেখা গেছে স্বস্তি। সবজি, মাছ, মাংসের সরবরাহও ছিল চাহিদার তুলনায় বেশি। ফলে দাম নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলেন ক্রেতা-বিক্রেতারাও। তবে গত ২-৩ দিনের বৈরী আবহাওয়া ও বৃষ্টির কারণে চলতি সপ্তাহে সরবরাহ কমে গেছে। এ কারণে বাজারে শীতকালীন সবজিতে বিরাজ করছে উষ্ণতা, বেড়েছে প্রায় প্রতিটি সবজির দাম।

শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ানবাজার, কাঁঠালবাগান, পলাশী, মিরপুর, মালিবাগ, রামপুরার বিভিন্ন পাইকারি ও খুচরা বাজার ঘুরে ও ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার দিনভর টানা বৃষ্টির কারণে আড়তে সবজির সরবরাহ কমে গেছে। এ কারণে দামও কিছুটা বেড়েছে। তবে এই সময়ে মাংসের দাম কমার প্রভাব পড়েছে মাছের বাজারে। সপ্তাহের ব্যবধানে বিভিন্ন জাতের মাছের দাম কিছুটা কমেছে।

সরেজমিন দেখা গেছে, বাজারে এসেছে নতুন আলু। গত সপ্তাহের তুলনায় আলুর দাম কেজিপ্রতি ৫-১০ টাকা বেড়ে ৬৫-৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পুরোনো আলু ৪৫ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৫৫ টাকা। কয়েকদিন আগেও যে লাউ বিক্রি হতো ৪০ টাকায়, সেটি এখন বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৭০ টাকায়। ৩০ টাকা দামের ফুলকপি বেড়ে হয়েছে ৪০ টাকা।

দুই জাতের বেগুনেই কেজিপ্রতি দাম বেড়েছে ৫ থেকে ১০ টাকা। শিমের কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা থেকে হয়েছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। ২০ টাকা কেজির মুলা বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা। বেড়েছে কাঁচামরিচের দামও। ৮০ টাকা কেজির কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়। বাজারে সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে ধনিয়া পাতার। ৬০ টাকা কেজির ধনিয়া পাতা তিনগুণ বেড়ে হয়েছে ১৮০ টাকা।

গত সপ্তাহের মতোই একই দামে ১০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে টমেটো। রসুন, আদারও দাম বেড়েছে। এ দুটি পণ্য ১৮০ টাকা থেকে বেড়ে ১৯০ থেকে ২০০ টাকা হয়েছে। ১২০ টাকার দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়। আমদানি করা পেঁয়াজ কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে হয়েছে ১১০ টাকা।

সপ্তাহের ব্যবধানে চালের দামও কিছুটা বেড়েছে। প্রতি কেজি মোটা চাল ২-৩ টাকা বেড়ে হয়েছে ৫৪-৫৫ টাকা। আটার দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। খোলা আটা কিনতে এখন ক্রেতাকে গুনতে হচ্ছে কেজিতে ৪৮ থেকে ৫০ টাকা। আর প্যাকেট আটার কেজি ৫৮ থেকে ৬০ টাকা। খোলা ময়দার দাম কিছুটা কমেছে। ৬০ টাকা কেজির খোলা ময়দা বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা এবং প্যাকেট ময়দার দাম কমে ৬০ থেকে ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

দীর্ঘসময় ধরে খোলা চিনির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকায়। বাজারে প্যাকেটজাত চিনির সরবরাহ নেই বললেই চলে। প্যাকেটজাত চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা কেজি দরে।

বাজারে এখন মাছের সরবরাহ ভালো। মাংসের দাম কমার প্রভাব পড়েছে মাছের দামেও। গত সপ্তাহের মতো এ সপ্তাহেও কিছুটা কমেছে চাষের মাছের দাম। মাঝারি মানের চাষের পাঙাশ বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায়। বড় আকারের চাষের তেলাপিয়া ২২০ থেকে ২৫০ টাকা, ছোট আকারের ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা। আর মান ও আকারভেদে চাষের রুই মাছের কেজি পাওয়া যাচ্ছে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায়। তবে চিংড়ির দাম তেমন কমেনি। প্রতি কেজি চিংড়ি কিনতে ক্রেতাকে গুনতে হচ্ছে ৭০০ থেকে ১০০০ টাকা। শোল মাছের দাম কিছুটা বেড়ে ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকা হয়েছে। ইলিশ মাছ কেজিপ্রতি দাম হাঁকানো হচ্ছে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত।

ভিড় দেখা গেছে মাংসের দোকানগুলোতে। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার দোকানে গরুর মাংস এখন ৬৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। যা এক মাস আগের চেয়ে কেজিপ্রতি অন্তত দেড়শো টাকা কম। গত সপ্তাহে মুরগির দাম কমলেও এ সপ্তাহে কিছুটা বেড়েছে। ব্রয়লার মুরগির কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে হয়েছে ১৮০ টাকা এবং সোনালি জাতের মুরগির কেজি ২৮০ টাকা, লেয়ার মুরগি ২৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

খুচরা বাজারে প্রতিটি ডিমের দাম সর্বোচ্চ ১২ টাকা নির্ধারণ করা হয়। যখন ডিমের হালি ছিল ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। এরপর বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার ডিম আমদানির অনুমতি দেয়। দাম কমে ডিমের হালি এখন ৪০-৪২ টাকায় নেমেছে। বাজারগুলোতে প্রতি ডজন ফার্মের মুরগির বাদামি রঙের ডিম বিক্রি হচ্ছে ডজনপ্রতি ১২০ টাকায়। অর্থাৎ প্রতিটি ১০ টাকা পিস। তবে পাড়া-মহল্লার খুচরা দোকানে এ দাম এখনো ১২৫ থেকে ১৩০ টাকা। ফার্মের মুরগির সাদা রঙের ডিম বিক্রি হচ্ছে ডজনপ্রতি ১১০ টাকায়। এছাড়া হাঁসের ডিমের হালি এখন ৬০ থেকে ৭০ টাকা পর্যন্ত।

সূত্র: ডেইলি বাংলাদেশ

সর্বশেষ: