শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

মিশ্র বিদেশি ফল চাষে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন ডালিমের

মিশ্র বিদেশি ফল চাষে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন ডালিমের

বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত ডালিম আজাদ। সম্প্রতি মেহেরপুর সদর উপজেলার উজলপুর গ্রামে। ভাগ্য ফেরাতে ২০০৭ সালে মালয়েশিয়া পাড়ি জমান মেহেরপুর সদর উপজেলার উজলপুর গ্রামের ডালিম আজাদ। ২০১৮ সালে চলে আসেন দেশে। শুরু করেন নিজ জমিতে ফলের চাষ। কিন্তু তখন দেখা মেলেনি সাফল্যের। পরে ২০২০ সালে শুরু করেন মিশ্র বিদেশি জাতের ফল চাষ।

বর্তমানে ডালিম আজাদের চার বিঘা জমিতে চাষ হচ্ছে মাল্টা, দার্জিলিং কমলা, থাই পেয়ারা, আঙুর ও বিচিহীন লেবুর। আগেরবার সাফল্যের মুখ দেখতে না পারলেও, এবার সাফল্যের হাতছানি দেখছেন ডালিম আজাদ। তাঁর আশা, এ বছরেই অন্তত পাঁচ লাখ টাকার ফল বিক্রি হবে তাঁর বাগান থেকে।

ডালিম বলেন, দেশে ফিরে শুরু করি দেশি ফলের চাষাবাদ। কিন্তু লাভের মুখ দেখতে পারিনি। পরে নিজের চার বিঘা জমিতে মিশ্র বিদেশি ফলের বাগান করার সিদ্ধান্ত নিই। শুরু করি চারার সন্ধান। ২০২০ সালে চারার সন্ধান পাই যশোরের মনিরামপুরে। সেখান থেকে কিনি ৩০০টি দার্জিলিং কমলা, ৩০০টি বারি-১ জাতের মাল্টা ও ৯টি আঙুরের চারা। প্রতিটি চারার দাম পড়ে ১৪০ টাকা করে। আর নরসিংদী থেকে ১৪০টি বিচিহীন লেবুর চারা সংগ্রহ করি। দাম পড়েছিল প্রতিটির ৭৫ টাকা করে। ৬০০টি পেয়ারার চারা সংগ্রহ করি মেহেরপুরের বারাদি হর্টিকালচার সেন্টার থেকে।

ডালিম জানান, ২০১৯ সালে উজলপুর গ্রামের মাঠে ৪ বিঘা জমিতে চাষ করেন এসব ফলের চারা। শুধুমাত্র চারাতে খরচ হয়েছিল ১ লাখ ৫ হাজার টাকা। আর চাষাবাদ ও ২য় বছরে ফল আসা পর্যন্ত জমিতে খরচ হয় প্রায় ২ লাখ টাকা। প্রথম বছর গাছে ফুল আসলেও ভেঙে দেন। যাতে গাছ শক্তি পায়। পরের বছরে ভালো ফলন হয়। ২০২১ বছর ফুল থেকে অল্প পরিমাণ ফল সংগ্রহ করেন। শুধুমাত্র পেয়ারা, ভাতে খাওয়া লেবু ও অল্প কিছু মাল্টা বিক্রি করে আয় করেন দেড় লাখ টাকা। এ জমি থেকে ৫ লাখ টাকার ফল বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা 
করছেন তিনি।

ডালিম আজাদ বলেন, ‘এখন ফল সংগ্রহের পাশাপাশি গ্রাপটিং করে চারা উৎপাদন করে চাষিদের কাছে বিক্রির চিন্তা করছি। এ ছাড়া বিদেশি ফল হওয়ায় মাল্টা ও দার্জিলিং কমলা বাগানে মাঝে মাঝে পোকার আক্রমণ দেখা দেয়। তখন বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক প্রয়োগ করে রোগ নিরাময়ের চেষ্টা করি। তবে এবার প্রচণ্ড খরতাপে বাগানের কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। তাপমাত্রা কমে গেলে গাছ থেকে ভালো ফলন পাব, আশা করছি।’

সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাসরিন পারভিন বলেন, ‘জেলায় এবার ১৫ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন বিদেশি জাতের ফলের বাগান হয়েছে। তবে বৃষ্টি কম হওয়ায় ও প্রচণ্ড খরতাপে বিদেশি ফল চাষে কিছুটা বাধাগ্রস্ত হচ্ছেন চাষিরা। কৃষি বিভাগ থেকে নানা ধরনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’

আলোকিত সিরাজগঞ্জ

সর্বশেষ: