কয়েক বছর আগেও বাংলাদেশের মানুষ জানতো ‘ড্রাগন ফল’ হলো একটি বিদেশি ফল। সময়ের সাথে সাথে দেশে এর চাষ এতোটাই বেড়েছে যে, ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চাষ করে নিজের জীবনই বদলে দিয়েছেন স্থানীয় যুবক আল-আমিন হোসেন (২৫)।
সোমবার (৪ জুলাই) আল-আমিন জানান, ড্রাগন ফল বিক্রি করে প্রতি চালানে প্রায় ৯ লক্ষাধিক টাকা আয় করেন তিনি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বর্গা ও নিজের জমিতে ড্রাগন চাষ করে বাম্পার ফলন পেয়েছেন শিক্ষিত এ যুবক।
তিনি জানান, চাকরীর পেছনে না ছুটে আমি ডিজিটাল মিডিয়া এবং ইউটিউবে কৃষিভিত্তিক ভিডিও দেখে আমার পিতা মো. ইয়াকুব আলীর সহযোগিতায় বছরব্যাপী ফল উৎপাদনের জন্য ২০২০ সালে ১১ শতাংশ জমিতে এই ড্রাগন ফলের চারা সংগ্রহ করে বাগান শুরু করি। সঠিকভাবে পরিচর্যা করার কারণে খুব কম সময়ের মধ্যেই ড্রাগনের ফল আসতে শুরু করে। বর্তমানে আমার ১ একর এক শতাংশ জমিতে এই ড্রাগন ফলের বাগান আছে। তার মধ্যে থাই রেড, ভিয়েতনাম রেড, আমেরিকা বিউটি, হোয়াইট, হলুদ এবং পিং রোজ উল্লেখযোগ্য।
আল-আমিন হোসেন বলেন, আগে এইসব জমিতে পান চাষ করা হতো। কিন্তু, পান চাষে লোকসান হওয়ায় পানের বরজ ভেঙ্গে দিয়ে এই দ্বীর্ঘমেয়াদী ড্রাগন ফলের চাষ শুরু করি। এই ড্রাগন ফলের বাগান থেকে আমার প্রতি চালানে প্রায় ৯ লক্ষাধিক টাকা আয় হয়।
এদিকে একই গ্রামের মসলেম মণ্ডলের ছেলে কৃষক মনোয়ার হোসেন জানান, আমার মনে হয়, এই চাষটা ভালোই। পানের বরজ চাষ করে লস খাচ্ছি। অর্থের যোগান পেলে এখনই এই ড্রাগন ফলের বাগান করতাম। ভবিষ্যতে টাকা হলে ড্রাগন ফলের বাগান করবো।
হরিণাকুণ্ড কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে, হরিণাকুণ্ড উপজেলার রথখোলা, ভেড়াখালী, নারায়নকান্দী, খলিশাকুণ্ডু বড়ভাড়া এবং শিতলী গ্রামে এই ড্রাগন চাষ হচ্ছে। মোট ২ দশমিক ৮ হেক্টর ড্রাগন ফল চাষের আওতায় আছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাফিজ হাসান জানান, এ অঞ্চলে বারী ড্রাগন ১, কিংক রোজ, রেড ভেল ভেট জাতের ড্রাগনের চাষ হচ্ছে বেশী। ড্রাগন গাছে একটানা ৫ থেকে ৬ মাস ফল পাওয়া যায়। অধিক পুষ্টিগুণ সম্পন্ন এই ফল চোখকে সুস্থ্য রাখে, রক্তের কোলেস্টেরল কমায় এবং উচ্চ রক্তচাপ কমানো, হার্টের রোগসহ নানা ধরণের রোগ প্রতিরোধ করে।
হরিণাকুণ্ড উপজেলার মাটি ড্রাগন চাষের উপযোগী উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, উপজেলার সবচেয়ে বড় বাগান আছে চারাতলাতে। আমরা অসচ্ছল ড্রাগন চাষীদের নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিয়ে থাকি বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
আলোকিত সিরাজগঞ্জ