মঙ্গলবার, ১৯ আগস্ট ২০২৫, ৩ ভাদ্র ১৪৩২

ভর্তি

পাস করা বিপুল শিক্ষার্থী একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হতে আবেদনই করেনি

পাস করা বিপুল শিক্ষার্থী একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হতে আবেদনই করেনি

সংগৃহীত

আসন্ন শিক্ষাবর্ষে (২০২৫-২৬) কলেজ ও মাদ্রাসায় একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য আবেদন করেছে পৌনে ১১ লাখ ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থী। যদিও এবার এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাস করেছে ১৩ লাখের বেশি শিক্ষার্থী। এর মধ্যে কারিগরিতে উত্তীর্ণ এক লাখের মতো পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বাদ দিয়ে হিসাব করলেও এক লাখের বেশি পরীক্ষার্থী একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হতে আবেদনই করেনি।

ঢাকার নটর ডেম কলেজসহ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছাড়া দেশের বাকি সব কলেজ ও মাদ্রাসায় কেন্দ্রীয়ভাবে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির বাছাই কাজটি করা হয়। ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের অধীন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের কারিগরি সহায়তায় কেন্দ্রীয়ভাবে অনলাইনে ভর্তির কাজটি হয়। ভর্তির জন্য কোনো পরীক্ষা হয় না। এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থী বাছাই করা হয়। এই প্রক্রিয়ায় নির্ধারিত আবেদন ফি জমা দিয়ে সর্বনিম্ন ৫টি ও সর্বোচ্চ ১০টি কলেজ বা মাদ্রাসার জন্য পছন্দক্রম দিয়ে আবেদন করতে হয়। একজন শিক্ষার্থী যতগুলো কলেজে আবেদন করেছে, তার মধ্য থেকে শিক্ষার্থীর মেধা, কোটা (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) ও পছন্দক্রমের ভিত্তিতে ভর্তির জন্য একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তার অবস্থান নির্ধারণ করা হবে। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীন ভর্তির কাজটি আলাদাভাবে হয়ে থাকে।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, সময় বাড়িয়ে গত ৩০ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত (১১ আগস্ট ছিল শেষ সময়) ভর্তির আবেদন গ্রহণ শেষ হয়েছে। তাতে দেখা যায় সব মিলিয়ে ১০ লাখ ৭৩ হাজার ৩৩৬ ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থী আবেদন করেছে। যাচাই-বাছাই শেষে প্রথম পর্যায়ে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের ফলাফল প্রকাশ করা হবে আগামী বুধবার।

প্রথম পর্যায়ের ভর্তি হতে প্রায় সব শিক্ষার্থী আবেদন করে থাকে। কিন্তু পছন্দক্রম ও মেধার মধ্যে সামঞ্জস্য না থাকায় অনেকেই কাঙ্ক্ষিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির জন্য নির্বাচিত হয় না। আবার নানা কারণে প্রথম পর্যায়ে কিছুসংখ্যক শিক্ষার্থী আবেদনও করে না। এ জন্য দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়েও ভর্তির আবেদনের সুযোগ রাখা হয়েছে ভর্তির এই প্রক্রিয়ায়।

সাধারণত, প্রথম পর্যায়ে ভর্তি হতে প্রায় সব শিক্ষার্থী আবেদন করে থাকে। কিন্তু পছন্দক্রম ও মেধার মধ্যে সামঞ্জস্য না থাকায় অনেকেই কাঙ্ক্ষিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির জন্য নির্বাচিত হয় না। আবার নানা কারণে প্রথম পর্যায়ে কিছুসংখ্যক শিক্ষার্থী আবেদনও করে না। এ জন্য দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়েও ভর্তির আবেদনের সুযোগ রাখা হয়েছে ভর্তির এই প্রক্রিয়ায়। দ্বিতীয় পর্যায়ে আবেদন গ্রহণ করা হবে ২৩ থেকে ২৫ আগস্ট। এই ধাপের ফলাফল প্রকাশ করা হবে ২৮ আগস্ট। এরপর আবার ৩১ আগস্ট ও আগামী ১ সেপ্টেম্বর তৃতীয় পর্যায়ে আবেদন করা যাবে। এভাবে বাছাই প্রক্রিয়ায় শেষ করে ৭ থেকে ১৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ভর্তির কাজ শেষ করা হবে। তারপর ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে একাদশ শ্রেণিতে ক্লাস শুরু হবে।

১০ জুলাই এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়। এবার গড় পাসের হার এবং ফলাফলের সর্বোচ্চ সূচক জিপিএ-৫—দুটিই কমেছে। সব পরীক্ষার্থী ফেল করেছে, এমন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বেড়েছে। কমেছে শতভাগ পাস করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যাও। এবার ১১টি শিক্ষা বোর্ডে মোট পরীক্ষার্থী ছিল ১৯ লাখ ৪ হাজার ৮৬ জন। এর মধ্যে পাস করেছে ১৩ লাখ ৩ হাজার ৪২৬ জন। মানে ছয় লাখের বেশি পরীক্ষার্থী পাস করতে পারেনি।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, সারা দেশে কেবল কলেজ ও মাদ্রাসাগুলোতে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তিযোগ্য আসন আছে ২৬ লাখ ৬৬ হাজারের বেশি। এই তথ্য বলছে, যদি সব শিক্ষার্থী ভর্তিও হয়, তাহলেও একাদশ শ্রেণিতে বিপুল আসন ফাঁকা থাকবে।

এবার বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীর ভর্তির জন্য আবেদন না করার কারণ জানতে চাইলে আন্তশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক খন্দোকার এহসানুল কবির প্রথম আলোকে বলেন, ঠিক কী কারণে এত শিক্ষার্থী প্রথম পর্যায়ে ভর্তির জন্য আবেদন করেনি, তা এই মুহূর্তে তিনি বলতে পারবেন না। আরও দুই ধাপে আবেদন করার সুযোগ আছে। তাই আবেদনের পুরো প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর প্রকৃত সংখ্যা ও কারণ জানা যাবে।

সূত্র: প্রথম আলো

সর্বশেষ: