মঙ্গলবার, ১৯ আগস্ট ২০২৫, ৩ ভাদ্র ১৪৩২

জাবিতে ছাত্রদলের নেতাদের উদ্দেশে ‘গেট আউট’ স্লোগান

জাবিতে ছাত্রদলের নেতাদের উদ্দেশে ‘গেট আউট’ স্লোগান

সংগৃহীত

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে তৈরি হওয়া কোন্দল মেটাতে এসে নেতাকর্মীদের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ার মুখে পড়েছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। কমিটি ঘোষণার ৯ দিন পর শাখা ছাত্রদলের শীর্ষ নেতারা কেন্দ্রীয় নেতাদের সহায়তায় ক্যাম্পাসে প্রবেশ করলে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের তীব্র প্রতিরোধের মুখে পড়েন তারা।

রোববার (১৭ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়া সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা শীর্ষ নেতাদের উদ্দেশ্যে, ‘বাবর-অনিক, গেট আউট, সুপার ফাইভ, গেট আউট’, ইত্যাদি স্লোগান দেন বলে জানা যায়। দুপুরের পর কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির নানা অনিয়ম তুলে ধরে রাত ১২টার মধ্যে কমিটি ভেঙে দিতে আলটিমেটাম দেন বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা।

প্রত্যক্ষদর্শী ও শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের সূত্রে জানা যায়, পূর্বনির্ধারিত ঘোষণা অনুযায়ী কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির, সিনিয়র সহসভাপতি আবু আফসান মোহাম্মদ ইয়াহিয়াসহ কেন্দ্রীয় কয়েকজন নেতা ক্যাম্পাসে আসেন। দুপুর ১২টার দিকে কেন্দ্রীয় নেতারা ও শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জহিরউদ্দিন বাবর, সদস্য সচিব ওয়াসিম আহমেদ প্রমুখ ক্যাফেটেরিয়ার শিক্ষক লাউঞ্জে অবস্থান করছিলেন। অন্য নেতাকর্মীরা ক্যাফেটেরিয়ায় ছিলেন।

কিছুক্ষণ পর ছাত্রদলের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মীর আরেকটি দল বাইকে মহড়া দিয়ে ক্যাফেটেরিয়ার নিচে আসেন। এসময় আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব বহিরাগতদের নিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেছেন—এমন অভিযোগে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এ সময় বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা বহিরাগত কয়েকজনকে ধাওয়া দেন। এরপর তারা ক্যাফেটেরিয়ার শিক্ষক লাউঞ্জে কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করেন। তখন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের অনুসারীরা গেট আটকে দাঁড়িয়ে যান। এ সময় দুপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। দুপক্ষ পরস্পরের বিরুদ্ধে গালিও দেয়।

পরে ঘটনাস্থলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম আসে এবং উভয় পক্ষকে থামানোর চেষ্টা করে। কিছুক্ষণ পর বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা ক্যাফেটেরিয়ার শিক্ষক লাউঞ্জে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। তখন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের শীর্ষ পাঁচ নেতা ও তাদের অনুসারীরা ক্যাফেটেরিয়ার শিক্ষক লাউঞ্জ থেকে বের হয়ে নিচের তলায় অবস্থান নেন।

শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা জানান, ৮ আগস্ট শাখা ছাত্রদলের বর্ধিত কমিটি ও ১৭টি হলের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এ কমিটিতে ছাত্রলীগ, ছাত্রশিবির ও ছিনতাইকারীরা স্থান পেয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এর প্রতিবাদে কয়েক দিন মহড়া দিয়ে শীর্ষ নেতাদের ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা। অন্যদিকে কমিটি দেওয়ার পর থেকে শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক, সদস্য সচিবসহ শীর্ষ পাঁচ নেতা ক্যাম্পাসে অনুপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জহিরউদ্দিন বাবর বলেন, ‘যারা বিশৃঙ্খলা করেছেন, তাদের মধ্যে আমাদের সংগঠনের বহিষ্কৃত কিছু নেতাকর্মী রয়েছেন। এর পাশাপাশি একটি স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী এটার সঙ্গে জড়িত। একটি কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে, সেখানে কিছু অসংগতি থাকলেও থাকতে পারে। সেগুলো আমরা সমাধানের চেষ্টা করছি। কিন্তু এটার সুযোগ নিয়ে একটি গোষ্ঠী বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করছে।’

ক্যাম্পাসে বহিরাগত প্রবেশের বিষয়ে জহিরউদ্দিন বলেন, সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতারা ক্যাম্পাসে এলে সেখানে বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা তাদের সঙ্গে দেখা করতে আসতেই পারেন।

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ছাত্রদলের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে দুপক্ষের মধ্যে একটু ঝামেলা সৃষ্টি হয়েছিল। প্রক্টরিয়াল টিম সেটা নিবৃত্ত করতে সক্ষম হয়েছে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। সবাইকে শান্ত পরিবেশ বজায় রাখতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

সূত্র: ঢাকা পোষ্ট

সর্বশেষ: