সংগৃহীত
জাতিসংঘের অধিবেশনে ড. ইউনুসের অংশগ্রহণ নিয়ে রাশিয়া আপত্তি তুলেছে কারণ তিনি শেখ হাসিনা সরকারের বৈধ পদত্যাগপত্র দেখাতে পারেন নি — এমন একটি তথ্য সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। আরও দাবি করা হচ্ছে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন জাতিসংঘের অধিবেশনে যাবেন না বলেও ‘হুমকি’ দিয়েছেন। এর সাথে সমর্থন জানিয়েছেন চীন এবং ভারতের প্রেসিডেন্ট। কিন্তু অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে, মূলধারার দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে এমন কোনো তথ্য নেই।
ড. ইউনূসের সাথে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতের বৈঠক থেকে বরং এর বিপরীত বার্তা পাওয়া যায়। ড. ইউনূসকে অভিনন্দন জানিয়ে তার সাথে কাজ করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত। সবকিছু বিবেচনায় ভাইরাল এই তথ্যটিকে ফ্যাক্টওয়াচ মিথ্যা সাব্যস্ত করছে।
উপরের ছবিটি লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, সেখানে সূত্র হিসেবে বলা হচ্ছে, “রাশিয়ার পত্রিকা প্রকাশিত খবর অনুযায়ী” । রাশিয়ার কোন পত্রিকা সে বিষয়ে নির্দিষ্ট করে কিছু বলা হয় নি। রাশিয়ার বেশ কিছু পত্রিকা এবং টিভি অনুসন্ধান করে এমন কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায় নি।
পুনরায় অনুসন্ধানে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্ডার মান্টিস্কি’র (Mr. Alexander Mantytskiy) সাথে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সাক্ষাতের একটি তথ্য পাওয়া যায়। ২৭ আগস্ট, ২০২৪ এর এই সাক্ষাতকারে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত প্রফেসর ইউনূসকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার জন্য অভিনন্দন জানান। রাশিয়ান দূতাবাস থেকে আরোও বলা হয়, দুই দেশের বন্ধুত্বের চেতনা থেকেই যৌথভাবে কাজ করবে দুই দেশ। সেখানে সুনির্দিষ্টভাবে জ্বালানি, কৃষি এবং শিক্ষা খাতের কথা উল্লেখ করা হয়।
অন্যদিকে, রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম আরটি’ও একই কথা জানায়। জানা যায়, তাদের এই সাক্ষাতকারে দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন চুক্তি সম্পর্কে আলোচনা করা হয় এবং আন্তর্জাতিক পরিসরে ঢাকার প্রতি মস্কোর সমর্থন থাকবে বলেও জানা যায়।
এছাড়া জাতিসংঘের অধিবেশনে ড. ইউনূসের অংশগ্রহণ নিয়ে রাশিয়ার কোনো আপত্তি আছে বলেও কিছু জানা যায় নি। এ বিষয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট অধিবেশনে অংশ নেবেন না বলে “হুমকি” দিয়েছেন- এমন তথ্যের পক্ষেও কোনো প্রমাণ খুঁজে পাওয়া যায় নি।
সুতরাং, বিষয়টি পরিষ্কার যে ভাইরাল এই দাবিটি ভিত্তিহীন। এর পক্ষে নির্দিষ্ট কোনো তথ্যসূত্র কিংবা কোনো ধরণের প্রমাণ দেখানো হয় নি। এছাড়া আমাদের অনুসন্ধানেও এর পক্ষে কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায় নি।