সংগৃহীত
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চায় বাংলাদেশ। কিন্তু সেই সম্পর্ক হবে ন্যায্যতা এবং সমতার ভিত্তিতে। তিনি প্রতিবেশীর সঙ্গে পারস্পরিক সম্মান এবং ন্যায্যতার ভিত্তিতে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
গতকাল রোববার (৮ সেপ্টেম্বর ) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে অবস্থিত প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে ছাত্র সংগঠক এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের ছাত্র প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক মতবিনিময়সভায় প্রধান উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা বাসসের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম পিটিআই, টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়া এ তথ্য জানিয়েছে।
রোববার অন্তর্বর্তী সরকারের এক মাস পূর্তি উপলক্ষে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়া ১৫০ জন ছাত্র প্রতিনিধি সরকারপ্রধানের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
পরে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম সাংবাদিকদের জানান, শিক্ষার্থীদের এক প্রশ্নের উত্তরে ভারত-বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিষয়ে বর্তমান সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেছেন ড. ইউনূস।
মাহফুজ আলম প্রধান উপদেষ্টার উদ্ধৃত দিয়ে বলেন, আমাদের ভারতের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে হবে। তবে তা হওয়া উচিত ন্যায় ও ন্যায্যতার ভিত্তিতে।
বৈঠকের পর সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে মাহফুজ আরও বলেন, এ সময় প্রধান উপদেষ্টা জানান বাংলাদেশ প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখার ক্ষেত্রে পারস্পরিক শ্রদ্ধা-সম্মান এবং ন্যায্যতা ও সমতা সব সময় গুরুত্ব দেয়।
প্রধান উপদেষ্টা আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়াতে দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থাকে (সার্ক) পুনরুজ্জীবিত করার ওপর জোর দেন।
প্রসঙ্গত, সরকারী চাকরিতে বিতর্কিত কোটা পদ্ধতি নিয়ে সরকারবিরোধী ছাত্র-জনতা গণঅভ্যুত্থানের পর শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার কয়েকদিন পর ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়।
গত সপ্তাহে, ইউনূস ভারতের সাথে সুসম্পর্কের আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেছিলেন কিন্তু জোর দিয়ে বলেছেন, নয়াদিল্লিকে এই ধারণা অবশ্যই ত্যাগ করতে হবে যে শুধুমাত্র হাসিনার নেতৃত্বেই দেশের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত হবে।
এদিকে, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন রোববার ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের মন্তব্যে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। এ সময় তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, ভবিষ্যতে দুই প্রতিবেশীর মধ্যে সংঘাতের কোনো তাৎক্ষণিক হুমকি দেখছেন না।
রাজনাথ সিংয়ের মন্তব্যে বাংলাদেশ উদ্বিগ্ন কিনা, এ প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা সাংবাদিকদের জানান,
উদ্বিগ্ন হওয়ার চেয়ে ‘বিস্মিত বেশি’। আমি বুঝতে পারছি না কেন তিনি (সিং) এমন মন্তব্য করেছেন... আমরা এর পিছনে কোন যৌক্তিক কারণ খুঁজে পাচ্ছি না।
গত বৃহস্পতিবার লখনউতে একটি যৌথ কমান্ডার সম্মেলনে ভাষণ দেওয়ার সময়, ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং ইউক্রেন ও গাজার সংঘাতের পাশাপাশি বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি ‘ভবিষ্যতবাণী’ করার জন্য এবং ‘অপ্রত্যাশিত’ মোকাবেলার জন্য শীর্ষ সামরিক কর্তাদের প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান।
সূত্র: ডেইলি বাংলাদেশ