বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জীবননগরে বাদাম চাষে কৃষকের মুখে হাসি

জীবননগরে বাদাম চাষে কৃষকের মুখে হাসি

চুয়াডাঙ্গার বাদাম গ্রামখ্যাত জীবননগর উপজেলার কৃষ্ণপুরে এ বছর বাদামের বাম্পার ফলন হয়েছে। দাম ও ফলন ভালো পাওয়ায় কৃষাণ-কৃষাণীর মুখে হাসি ফুটেছে।

চায়না জাতের বিনা বাদাম-৪ ও বিনা বাদাম-৮-এর ফলন সবচেয়ে বেশি হয়েছে। বাজারে এসবের চাহিদাও ভালো। বাদাম একটি লাভজনক ফসল ও অল্প সময়ে ঘরে তোলা সম্ভব হওয়ায় এ ফসল চাষের প্রতি উপজেলার প্রান্তিক চাষিদের দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে। কৃষ্ণপুর গ্রামের কৃষাণ-কৃষাণীরা বাদাম উত্তোলন ও পরিষ্কার করে তা বাজারজাত করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

উপজেলা কৃষি বিভাগের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘উপজেলায় চলতি মওসুমে লক্ষ্যমাত্রা ৩০ হেক্টর ছাড়িয়ে ৩৫ হেক্টর জমিতে বাদামের আবাদ হয়েছে। সবচেয়ে বেশি বাদামের চাষ হয়েছে উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামে। এ গ্রামের ৭০ ভাগ কৃষক তাদের জমিতে বিনা-৪ ও বিনা-৮ জাতের বাদামের পাশাপাশি দেশীয় জাতের বাদামের আবাদ করেছেন।’

উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের বাদাম গ্রামখ্যাত কৃষ্ণপুরের বাদাম চাষি জেহের আলী, আব্দুল হালিম, সাজ্জাদ হোসেন, ইসলাম বিশ্বাস, শহিদুল ইসলাম খানসহ একাধিক কৃষক বলেন, আমাদের গ্রামের মাঠের জমি বাদাম চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী হওয়ায় প্রতি বছর আমরা অন্য ফসলের পাশাপাশি বাদাম চাষ করে ব্যাপক লাভবান হই। এলাকার বেশির ভাগ জমিতেই বাদামের আবাদ হয়েছে।

এসব কৃষকদের দাবি প্রতি বিঘা জমিতে বাদাম চাষ করতে আট থেকে দশ হাজার টাকা খরচ হয়। বাদাম বপন থেকে উৎপাদন পর্যন্ত তিন মাস সময় লাগে। আগে বাদাম উৎপাদন করতে তিন মাসের বেশি সময় লাগত। বর্তমানে আধুনিক প্রযুক্তির কারণে সময় অনেক কম লাগছে। অন্যদিকে অতীতে চেয়ে বর্তমানে রোগ কমে যাওয়ায় উৎপাদন অনেক বেশি হয়। ফলে এ এলাকার কৃষকদের বাদাম চাষে আগ্রহ বাড়ছে।

কৃষ্ণপুর গ্রামের এমন কোনো কৃষক নেই যার কমপক্ষে ১০ কাঠা জমিতে বাদামের আবাদ হয়নি। এক বিঘা জমি চাষ করে কৃষকরা ৪০ থেকে ৫০ হাজার পর্যন্ত আয় করছেন।

এ বছর বাদামের ফলন ও দাম ভালো হওয়ায় কৃষকরা অত্যন্ত খুশি। বিনা বাদাম-৪, বিনা বাদাম-৮-এর ফলন ভালো, আকারে বড় ও দেখতে ঝকঝকে হওয়ায় বাজারে চাহিদাও ভালো। গ্রামের কৃষাণীরা বাদাম গাছ থেকে বাদাম ছাড়িয়ে প্রতিদিন ২৫০-৩০০ টাকা আয় করছেন।

বাদাম চাষি জেহের আলী বলেন, এ বছর আমার ১২ বিঘা জমিতে বাদামের আবাদ আছে। ইতোমধ্যেই অধিকাংশ বাদাম মাঠ থেকে তুলে বাড়ি আনা হয়েছে। নারী শ্রমিক দিয়ে তা গাছ থেকে ছাড়িয়ে পরিষ্কার করা হচ্ছে। বিঘা জমিতে আমার চাষ থেকে শুরু করে উৎপাদন পর্যন্ত ৭০-৮০ হাজার টাকা খরচ হলেও তা থেকে কমপক্ষে আড়াই লাখ টাকা আয় আসবে বলে আশা করছি। আমাদের মাঠটি জেলায় আলু ও বাদামের গ্রাম হিসাবে পরিচিত। আমরা একই জমিতে আগামী ১০-১৫ দিনের মধ্যে আলু ও ভুট্টা চাষের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমাদের মাঠের জমিতে চাষ হয় না এমন কোনো ফসল নেই। কিন্তু একটি মহল আমাদের এ সোনাফলা মাঠকে মরুভূমি আখ্যা দিয়ে সেখানে একটি বিদেশী কোম্পানির সোলার পাওয়ার প্লান্ট নির্মাণের জন্য পায়তারা চালিয়ে আসছে। আর ওই জমি রক্ষা করতে গিয়ে এলাকার নিরীহ কৃষকরা এখন জেল-জুলুমের শিকার হচ্ছে।

কৃষক আব্দুল হালিম বলেন, আমাদের গ্রামের উৎপাদিত বাদাম এলাকার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়। প্রতি মওসুমে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকারি ব্যবসায়ীরা এসে বাদাম কিনে নিয়ে যান। আবার অনেক কৃষক একটু বেশি দামের আশায় নিজেই বিভিন্ন জেলা শহরে নিয়ে বিক্রি করে থাকেন।

উপজেলা কৃষি অফিসার শিরিন সারমিন বলেন, উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর মাঠের জমিতে উৎপাদন হয় না এমন কোনো ফসল নেই। তবে আমার জানা মতে ওই মাঠে ব্যাপকভাবে পেঁয়ারা, বাদাম, ভুট্টা ও আলুর চাষ হয়। বাদাম চাষে কৃষকের খরচ কম, ফলন ও দাম ভাল পাওয়ায় কৃষ্ণপুরসহ এলাকার কৃষকদের মধ্যে বাদাম চাষে দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে। কৃষ্ণপুর মাঠের জমি কৃষি ভাণ্ডার মাঠ হিসেবে এলাকায় পরিচিত। এ মাঠে চলতি মওসুমে ৩৫ হেক্টর জমিতে বাদামের চাষ হয়েছে। বিনা-৪ ও বিনা-৮ জাতের বাদাম উচ্চ ফলনশীল হওয়ায় এবং বাজারে চাহিদার কারণে দাম ভাল পাওয়ায় এ বাদাম চাষে আগ্রহী হচ্ছে কৃষকেরা। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বাদাম চাষিদের সব ধরণের সহযোগিতা ও পরামর্শ প্রদান করে আসছেন।

আলোকিত সিরাজগঞ্জ

সর্বশেষ:

শিরোনাম:

শাহজাদপুরে আশ্রয়ণ প্রকল্পের উপকারভোগীদের সাথে মতবিনিময় সভা
সিরাজগঞ্জে পুরোদমে চলছে কৃষিবান্ধব সোলার প্রকল্পের কাজ
সিরাজগঞ্জে বীর মুক্তিযোদ্ধাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন
বেলকুচিতে বিএসটিআই অনুমোদন না থাকায় টেক্সটাইল মিলকে জরিমানা
বেলকুচিতে পুষ্টি বিষয়ক সমন্বয় কমিটির দ্বি-মাসিক সভা অনুষ্ঠিত
স্থানীয় সরকারমন্ত্রীর সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূতের বৈঠক
চীনের সঙ্গে রাজনৈতিক-অফিসিয়াল যোগাযোগ বাড়াতে প্রস্তুত বাংলাদেশ
ভারতের কাছে পাঁচটি খাদ্যপণ্যের নিশ্চিত সরবরাহ চায় বাংলাদেশ
এপ্রিলে বাংলাদেশে আসছেন কাতারের আমির
গবেষণায় আরো জোর দিতে বললেন কৃষিমন্ত্রী
রংপুর ও ভোলার চরের মানুষদের সুখবর দিলেন পরিবেশমন্ত্রী
স্থানীয় সরকারমন্ত্রীর সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূতের বৈঠক