মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

আইফেল টাওয়ার বা স্ট্যাচু অব লিবার্টির মতো স্থাপনা হবে বাংলাদেশে

আইফেল টাওয়ার বা স্ট্যাচু অব লিবার্টির মতো স্থাপনা হবে বাংলাদেশে

বাংলাদেশে আইফেল টাওয়ার ও স্ট্যাচু অব লিবার্টির মতো একটি আইকনিক স্থাপনা নির্মাণ করা হবে, যাতে ওই আইকনিক স্থাপনা দিয়ে বিশ্ব দেশকে চেনে। এ বিষয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে কমিটি কাজ করছে। বুধবার স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের বিভিন্ন কর্মসূচী নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভাপতি মোজাম্মেল হক বলেন, এক কথায় যেন এটার নাম শুনে বোঝে- এটা বাংলাদেশ। আইফেল টাওয়ার শুনলেই বোঝে- এটা প্যারিসে, স্ট্যাচু অব লিবার্টি দেখলেই বোঝে- ওই দেশ। এ রকম একটা কিছু আমরা রাখতে চাই। বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশকে চিনতে পারে, এমন কিছু সিম্বলিক করা হবে।

তিনি বলেন, ‘বিজ্ঞজনদের নিয়ে কমিটি করেছি, তারা সাজেশন দেননি। আমরা পরবর্তীতে করব, হয়তো দুই-চার বছরও লাগতে পারে। মুজিববর্ষ ও সুবর্ণজয়ন্তীকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য এটা করা হবে। ওটা দিয়েই যেন চেনে- এটা বাংলাদেশের।’

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী জানান, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনে এবার আগামী ২৫ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত জাতীয় জাদুঘর মিলনায়তন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও হাতিরঝিলে আন্তর্জাতিক সেমিনার, আলোচনা সভা, মুক্তিযুদ্ধ কনসার্ট, নাট্যানুষ্ঠান, যাত্রাপালা, ড্রোন শো, লাইন এ্যান্ড লেজার শো, আতশবাজি ছাড়াও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে। ২৫ মার্চ সারাদেশে ৯টা থেকে ৯টা ১ মিনিট পর্যন্ত ব্ল্যাকআউট পালন করা হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতাপদকে ভুল করার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সরকার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে খতিয়ে দেখছে। এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী আরও বলেন, চলতি বছর সাহিত্যে স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য মোঃ আমির হামজাকে মনোনীত করার বিষয়টি এ সংক্রান্ত কমিটির ব্যর্থতা। এটি তার নিজের ব্যক্তিগত এবং কমিটির যৌথ ব্যর্থতা।

সাংবাদিকদের উদ্দেশে আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, যে কোন শক্তির চেয়ে কলমের শক্তি বেশি। এটা আপনারা প্রমাণ করেছেন। আপনাদের লেখনির মধ্য দিয়ে সত্য প্রকাশ হয়েছে। আমরা ভুল করলে ভুল সংশোধন করি। ভুল হতে পারে, মানুষ হিসেবে আমরা ভুলের উর্ধে নই। তবে আমাদের আরও সতর্ক থাকা উচিত ছিল।

আমির হামজাকে নিয়ে অনেক ‘ভুল তথ্য’ কমিটির কাছে জমা পড়েছিল বলেও জানান মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী। তিনি বলেন, অনেক ভুল তথ্য দেয়া হয়েছিল, সমস্ত সত্য গোপন করা হয়েছিল। কারা ভুল তথ্য দিয়েছেন খতিয়ে দেখব। কমিটির ফোরামে এটা আলোচনা হবে। আমাদের যেটা ভুল হয়েছে সেটা সংশোধন করেছি। আমরা কেউ চাইব না বারবার ভুল করতে।

স্বাধীনতা পুরস্কার-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির আহ্বায়ক আরও বলেন, কমিটির দায়িত্ব পালনে নিশ্চয়ই ভুলত্রুটি হয়েছে। নইলে এ ভুল হলো কেন? এটা যেমন আমার ব্যক্তিগত ব্যর্থতা এবং তেমনই কমিটিরও যৌথ ব্যর্থতা। গত ১৫ মার্চ ২০২২ সালের স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য ১০ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি ও একটি প্রতিষ্ঠানকে মনোনীত করে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে তালিকা প্রকাশ করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। সেখানে সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য মোঃ আমির হামজাকে স্বাধীনতা পুরস্কার দিতে মনোনীত করা হয়।

এরপরই বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মহলে সমালোচনা ও বিতর্কের ঝড় ওঠে। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমেও সংবাদ প্রকাশ হয়। প্রশ্ন ওঠে- বাংলা সাহিত্যে আমির হামজার ভূমিকা ও তার অতীত কর্মকা- নিয়ে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আমির হামজার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে বলে জানানো হয় সরকারের পক্ষ থেকে।

দেশের সুশীল ও সাহিত্যাঙ্গনে এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে সাহিত্যে স্বাধীনতা পুরস্কারে মনোনীত হওয়া বিতর্কিত ব্যক্তি মোঃ আমির হামজার পুরস্কার (মরণোত্তর) বাতিল করে গত ১৮ মার্চ রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কারের জন্য মনোনীত ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের নামের নতুন তালিকা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

আলোকিত সিরাজগঞ্জ