মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

সিরাজগঞ্জে সরিষার আবাদে বাম্পার ফলন, মধু সংগ্রহে ব্যাস্ত মৌচাষিরা

সিরাজগঞ্জে সরিষার আবাদে বাম্পার ফলন, মধু সংগ্রহে ব্যাস্ত মৌচাষিরা

সিরাজগঞ্জে সরিষার আবাদে এবার বাম্পার ফলন হয়েছে। মাঠের পর মাঠ সরিষার হলুদ ফুলের সমারোহে ভরে উঠেছে। হলুদ রঙে যেন হলুদ শাড়ি পরিধান করেছে সরিষার ক্ষেত। ফুলে ভরা সরিষা ক্ষেতের পাশে মধু সংগ্রহে এখন ব্যাস্ত মৌচাষিরা। এতে এ অঞ্চলের কৃষকদের মুখে হাসিও ফুটেছে। জেলা কৃষিসম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, জেলার ৯টি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে প্রায় ৫৩ হাজার হেক্টর জমিতে এই সরিষার চাষাবাদ করেছে কৃষকরা।

এরমধ্যে জেলার উল্লাপাড়া, রায়গঞ্জ, তাড়াশ, শাহজাদপুর ও সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে এই সরিষার চাষাবাদ বেশি হয়েছে। আবহাওয়া অনূক’লে থাকলে সরিষা চাষিরা এবার লাভবান হবেন। এদিকে এবার জেলায় ২’শ মেট্রিক টন মধু সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। গত মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে মৌচাষিরা মধু সংগ্রহে সরিষা ক্ষেতে পোষা মৌমাছির বাক্স পেতেছেন। একেকটি বাক্সে ৮-১০টি মোম দিয়ে তৈরি মৌচাকের ফ্রেম রাখা হয়।এসব মৌ বাক্সের ভেতরে রাখা হয়েছে একটি রানি মৌমাছি। রানি মৌমাছির কারণে ওই বাক্সে মৌমাছিরা আসতে থাকে ভালবাসার টানে। ফুল থেকে মৌমাছিরা মধু এনে বাক্সের ভেতরের চাকে জমা করে। চাকের বাক্সের মাঝখানের নিচে ছিদ্র করে রাখা হয়। সে পথ দিয়ে মৌমাছিরা আসা-যাওয়া করতে থাকে। আর এই মৌ বাক্সে জমা করা মধু সংগ্রহ করে মৌচাষিরা। প্রায় তিন কিলোমিটারের মধ্যে মধু সংগ্রহ করতে পারে এ মৌমাছিরা। সকাল ৯ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত এভাবে মৌচাষিরা মধু সংগ্রহ করে। মৌ চাষের মাধ্যমে মৌচাষিরা একদিকে যেমন আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। সরিষা ফুলের এই খাঁটি মধু সুস্বাদু হওয়ায় দেশের বিভিন্ন স্থানসহ বিদেশেও রপ্তানী করা হয়ে থাকে।

স্থানীয় মৌচাষিরা বলছেন, সরিষা ক্ষেতে বছরের প্রায় ৪ মাস মধু আহরণ করে থাকি। বাকি সময় কৃত্রিম পদ্ধতিতে চিনি খাইয়ে মৌমাছিদের পোষে রাখা হয়। ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত সরিষা থেকে মধু সংগ্রহের উপযুক্ত সময়। তখন জেলায় সর্বত্রই ভালো সরিষা ফুল ফোটে। আকার ভেদে একটি বাক্সে ২০ থেকে ৪০ কেজি পর্যন্ত মধু পাওয়া যায়।

সংগ্রহ করা প্রতি কেজি মধু আড়াই‘শ থেকে ৩‘শ টাকায় বিক্রি করা হয়। জেলার বিভিন্ন স্থানে এ বছর ৮/৯ টি মৌচাষির দল রয়েছে চলতি মৌসুমে বিপুল টাকার মধু সংগ্রহ করা হবে।জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক হাবিবুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, সরিষা ক্ষেতের পাশে মৌমাছির চাষ হলে সরিষার ফলনও ভালো হয়। বিনা খরচে সরিষা ক্ষেত থেকে মধু সংগ্রহ লাভজনক ব্যবসা। এতে কৃষক যেমন একদিকে মধু বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন অন্যদিকে ক্ষেতে মধু চাষ করায় সরিষার ফলনও বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইতিমধ্যেই মৌচাষিরা ১০৫ মেট্রিক টন মধু সংগ্রহ করেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

 

আলোকিত সিরাজগঞ্জ