বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

করোনা টিকার পেটেন্ট উন্মুক্তের প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন

করোনা টিকার পেটেন্ট উন্মুক্তের প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন করোনাভাইরাসের টিকার পেটেন্ট সবার জন্য উন্মুক্ত করার প্রস্তাবে সমর্থন দিয়েছেন। এর মধ্য দিয়ে দরিদ্র দেশগুলোর জীবনরক্ষাকারী করোনার টিকা পাওয়ার পথ প্রশস্ত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। স্থানীয় সময় বুধবার বাইডেন প্রশাসনের পক্ষ থেকে  এ ঘোষণা আসে বলে সংবাদমাধ্যম এএফপির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

ভারতে করোনার সংক্রমণ ব্যাপক হারে বেড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) সঙ্গে টিকার পেটেন্ট নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে আলোচনা চালিয়ে আসছিল ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকাসহ বেশ কয়েকটি দেশ।

ভারতের ভাষ্যমতে, টিকার পেটেন্ট সংরক্ষণের ক্ষেত্রে বৈশ্বিকভাবে ছাড় দেয়া হলে টিকা প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো আরো বেশি টিকা উৎপাদন করতে পারবে। তবে এ তৎপরতার বিপক্ষে অবস্থান ফার্মা জায়ান্টদের।

যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যবিষয়ক প্রতিনিধি ক্যাথরিন টাই বলেন, ব্যবসার ক্ষেত্রে ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টির অধিকার গুরুত্বপূর্ণ। তবে মহামারির ইতি টানতে করোনার টিকার পেটেন্ট সংরক্ষণ ছাড়ের পক্ষ নিয়েছে ওয়াশিংটন।

টাই এক বিবৃতিতে বলেন, করোনার কারণে বিশ্ব এখন চরম স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। করোনায় বিভিন্ন দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থায় যে বিপর্যয় নেমে এসেছে, তা মোকাবিলা করতে বিশেষ পদক্ষেপই দরকার।

টাই বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের জন্য পর্যাপ্ত করোনার টিকা সরবরাহ নিশ্চিতের পাশাপাশি টিকা উৎপাদন ও বিতরণ সম্প্রসারণের চেষ্টা জারি রাখবে বাইডেন প্রশাসন। এ ছাড়া টিকার উৎপাদন বাড়াতে প্রয়োজনীয় কাঁচামাল সরবরাহ বাড়াতেও কাজ করা হবে।

করোনার টিকা বিশ্বের ধনী দেশগুলোর মজুত করা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সমালোচনা চলছে। পেটেন্টে ছাড় দিতে প্রচণ্ড চাপে ছিলেন বাইডেন।

করোনার টিকা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তকে ‘ঐতিহাসিক’ হিসেবে অভিহিত করেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মহাপরিচালক টেডরোস আধানম গেব্রিয়েসুস। তিনি বলেন, করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এটি স্মরণীয় মুহূর্ত হয়ে থাকবে।

কয়েক মাস ধরে করোনার টিকার ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি সংরক্ষণ সাময়িকভাবে তুলে নিতে ডব্লিউটিওর কাছে আবেদন জানিয়ে আসছে বেশ কয়েকটি দেশ।

তবে এ আবেদনের প্রচণ্ড বিরোধিতা করে আসছে ফার্মাসিউটিক্যাল জায়ান্ট ও সংশ্লিষ্ট দেশগুলো।

তাদের ভাষ্যমতে, টিকার উৎপাদন বাড়াতে প্রধান প্রতিবন্ধকতা পেটেন্ট নয়। পেটেন্ট সংরক্ষণে ছাড় দেয়া হলে তা উদ্ভাবনকে বাধাগ্রস্ত করবে।

এ উদ্যোগকে ‘হতাশাজনক’ উল্লেখ করে জেনেভাভিত্তিক আন্তর্জাতিক ওষুধ উৎপাদন সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়, পেটেন্টের ক্ষেত্রে ছাড় জটিল পরিস্থিতি সমাধানের সহজ ও ভুল পদক্ষেপ। তবে পেটেন্ট ছাড়ের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডসহ বেশ কয়েকটি দেশ।

অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন একে ‘অভাবনীয় খবর’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, এ উদ্যোগের ফলে তার দেশ স্থানীয় পর্যায়ে করোনার টিকা প্রস্তুত করতে পারবে।

আলোকিত সিরাজগঞ্জ