বিদায় হজের ভাষণের মর্মকথা
আলোকিত সিরাজগঞ্জ
প্রকাশিত: ২৮ জুন ২০২২

বিদায় হজের ভাষণ নবিজীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়, মানবতার ঐতিহাসিক দলিল, ইসলামের পরিপূর্ণতার স্বীকৃতি এবং মুসলিম উম্মাহর কল্যাণে কোরআন-সুন্নাহর সংক্ষিপ্ত সারমর্ম। তাকওয়ার ভিত্তিতে মানবতাবোধসম্পন্ন জাতি গঠনে এ ভাষণের গুরুত্ব অপরিসীম।
বিদায় হজ : রাসুলুল্লাহ (সা.) নবুয়তপ্রাপ্তির পর মক্কায় অবস্থানকালে দুইবার হজ পালন করলেও মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করার পর দশম হিজরিতে একবারই হজ করেন। সেটিই ছিল তাঁর জীবনের একমাত্র আনুষ্ঠানিক হজ এবং শেষ হজ, যা বিদায় হজ নামে পরিচিত।
কাতাদা (রহ.) থেকে বর্ণিত, আমি আনাস (রা.)-কে জিজ্ঞেস করলাম, আল্লাহর রাসুল (সা.) কতবার ওমরাহ আদায় করেছেন? তিনি বলেন, চারবার। তন্মধ্যে হুদায়বিয়ার ওমরাহ জুলকাদা মাসে, যখন মুশরিকরা তাঁকে মক্কায় প্রবেশ করতে বাধা দিয়েছিল। পরবর্তী বছরের জুলকাদা মাসের ওমরাহ, যখন মুশরিকদের সঙ্গে চুক্তি সম্পাদিত হয়েছিল। জিরানার ওমরাহ, যেখানে নবী (সা.) গনিমতের মাল, সম্ভবত হুনায়নের যুদ্ধে বণ্টন করেন। আমি বললাম, আল্লাহর রাসুল (সা.) কতবার হজ করেছেন? তিনি বলেন, একবার। (বুখারি, হাদিস : ১৭৭৮)
বিদায় হজের ভাষণের প্রেক্ষাপট : রাসুলুল্লাহ (সা.) বিদায় হজে লক্ষাধিক সাহাবির সামনে দশম হিজরির জিলহজ মাসের ৯ তারিখ বিকেলে আরাফাতের ময়দানে এবং পরদিন ১০ জিলহজ কোরবানির দিন বক্তব্য পেশ করেছিলেন। এই দুই দিনে দেওয়া তাঁর বক্তব্য বিদায় হজের ঐতিহাসিক ভাষণ হিসেবে পরিচিত। নবী (সা.)-এর দৃঢ় আশঙ্কা ছিল যে এটাই তাঁর জীবনের সর্বশেষ হজ ও সর্বশেষ বিশ্ব সম্মেলন। জীবনের সর্বশেষ সম্মেলন হিসেবে তিনি পুরো দ্বিন-ইসলামের সারাংশ তুলে ধরেছেন এই ভাষণে। এটিই ছিল তাঁর নবুয়তিজীবনের উপসংহার। ভাষণ শেষে ভাবের আতিশয্যে নবী (সা.) নীরব হন। জান্নাতি নূরে তাঁর চেহারা আলোকদীপ্ত হয়ে ওঠে। এই মুহূর্তে নাজিল হয়—‘আজকের এই দিনে তোমাদের দ্বিনকে পূর্ণ করে দিলাম। তোমাদের ওপর আমার নিয়ামত পূর্ণ করে দিলাম। ইসলামকেই তোমাদের ওপর দ্বিন হিসেবে মনোনীত করলাম। ’ (সুরা : মায়েদা, আয়াত : ৩)
ভাষণের আলোচিত বিষয় : রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর বিদায় হজের ভাষণ বিভিন্ন হাদিস, তাফসির, ইতিহাস ও জীবনীগ্রন্থে আংশিক এবং খণ্ড খণ্ড আকারে সংকলিত হয়েছে। বুখারি, মুসলিমসহ সব হাদিসগ্রন্থে বিদায় হজের ভাষণের উদ্ধৃতি অন্তর্ভুক্ত আছে। তবে ইমাম আহমদ বিন হাম্বল (রহ.) সংকলিত ‘মুসনাদ’ গ্রন্থে বিদায় হজের ভাষণসংক্রান্ত সর্বাধিকসংখ্যক উল্লেখ রয়েছে। মুসলিম শরিফের একটি বর্ণনা নিম্নরূপ—জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) লোকদের উদ্দেশে ভাষণ দিলেন। তিনি বললেন, তোমাদের রক্ত ও তোমাদের সম্পদ তোমাদের জন্য হারাম (মর্যাদাপূর্ণ) যেমন তা হারাম (মর্যাদাপূর্ণ) তোমাদের এ দিনে, তোমাদের এ মাসে এবং তোমাদের এ শহরে। সাবধান! জাহেলি যুগের সব ব্যাপার (অপসংস্কৃতি) আমার উভয় পায়ের নিচে। জাহেলি যুগের রক্তের দাবিও বাতিল হলো। আমি সর্বপ্রথম যে রক্তপণ বাতিল করছি, তা হলো আমাদের বংশের রবিআ ইবনু হারিসের পুত্রের রক্তপণ। সে শিশু অবস্থায় বানু সাদ এ দুগ্ধপোষ্য ছিল, তখন হুজাইল গোত্রের লোকেরা তাকে হত্যা করে। জাহেলি যুগের সুদও বাতিল হলো। আমি প্রথমে যে সুদ বাতিল করছি তা হলো আমাদের বংশের আব্বাস ইবনু আব্দুল মুত্তালিবের সুদ। তার সব সুদ বাতিল হলো। তোমরা স্ত্রীলোকদের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করো। তোমরা তাদের আল্লাহর আমানত হিসেবে গ্রহণ করেছ এবং আল্লাহর কলেমার মাধ্যমে তাদের লজ্জাস্থান নিজেদের জন্য হালাল করেছ। তাদের ওপর তোমাদের অধিকার এই যে তারা যেন তোমাদের শয্যায় এমন কোনো লোককে স্থান না দেয় যাকে তোমরা অপছন্দ করো। যদি তারা এরূপ করে তাহলে হালকাভাবে প্রহার করো। আর তোমাদের ওপর তাদের ন্যায়সংগত ভরণপোষণের ও পোশাক-পরিচ্ছদের বিধান আছে। আমি তোমাদের মাঝে এমন এক জিনিস রেখে যাচ্ছি, যা দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরে থাকলে তোমরা পথভ্রষ্ট হবে না। তা হচ্ছে আল্লাহর কিতাব। ‘আমার সম্পর্কে তোমরা জিজ্ঞাসিত হলে তখন তোমরা কি বলবে?’ তারা বলল, ‘আমরা সাক্ষ্য দেব যে আপনি (আল্লাহর বাণী) পৌঁছিয়েছেন, আপনার হক আদায় করেছেন এবং সদুপদেশ দিয়েছেন। ’ তারপর তিনি তর্জনী আকাশের দিকে তুলে লোকদের ইশারা করে বললেন, ‘ইয়া আল্লাহ! তুমি সাক্ষী থেকো। ’ তিনি তিনবার এরূপ বলেন। (মুসলিম, হাদিস : ৩০০৯)
ভাষণের নির্দেশনা : বিদায় হজের ভাষণে রাসুলুল্লাহ (সা.) অন্যায়ভাবে মানুষের রক্তপাত বন্ধ, সুদের কুফল, বর্ণবৈষম্যের ভয়াবহতা, স্বজনপ্রীতির বিরূপ প্রভাব, জাহেলি যুগের মানসিকতা পরিহার করার বিষয়ে জোরালো নির্দেশনা প্রদান করেছেন। নারীর অধিকার সংরক্ষণ ও তাদের মর্যাদার বিষয় তুলে ধরেছেন। সাম্যের ভিত্তিতে শ্রেণিবৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা, রাষ্ট্রের সব নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, ন্যায় ও ইনসাফভিত্তিক বিচারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা, শ্রমিকের অধিকার রক্ষা, পরমতসহিষ্ণু হওয়া, সর্বোপরি মানব সভ্যতাবিরোধী সব বর্বরতা পরিহার করে একনিষ্ঠভাবে কোরআন-সুন্নাহ অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছেন। ভাষণে বিশেষভাবে গুরুত্ব পেয়েছে উম্মাহর ঐক্যের বিষয়টি। তিনি বলেন, হে লোকসকল! জেনে রেখো, তোমাদের রব একজন এবং তোমাদের পিতাও একজন। জেনে রেখো, অনারবের ওপর আরবের কোনো শ্রেষ্ঠত্ব নেই এবং আরবের ওপরও অনারবের কোনো শ্রেষ্ঠত্ব নেই। কালোর ওপর সাদার এবং সাদার ওপর কালোরও কোনো শ্রেষ্ঠত্ব নেই। মর্যাদা ও শ্রেষ্ঠত্বের একমাত্র ভিত্তি তাকওয়া। আমি কি তোমাদের কাছে পৌঁছিয়েছি? উপস্থিত সাহাবারা বলেন, হ্যাঁ, আল্লাহর রাসুল পৌঁছিয়েছেন। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ২৩৪৮৯)
পরিশেষে বলা যায়, বিদায় হজের ভাষণ ইসলামের প্রকৃত মূল্যবোধ অনুযায়ী তাকওয়া ও মানবতার সমন্বিত দিকনির্দেশনা। এর যথার্থ অনুসরণ তাকওয়ার ভিত্তিতে মানবতাবোধসম্পন্ন আদর্শ ব্যক্তি, সমাজ ও জাতি গঠন নিশ্চিত করবে, ইনশাআল্লাহ।
লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, আরবি বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

- আগস্টেও রেমিট্যান্সে ইতিবাচক ধারা
- উল্লাপাড়ায় ফুলজোড় নদীর সড়ক সেতুতে ৩০ গ্রামের স্বস্তি
- ভুটানের সঙ্গে শুল্কমুক্ত বাণিজ্য শুরু হচ্ছে
- বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে ১৮টি অ্যারাবিয়ান ঘোড়া উপহার দিল কাতার
- ৩ বছরে ৫ লাখ কর্মী নেবে মালয়েশিয়া, মূল বেতন ৩৭ হাজার
- কক্সবাজারে পর্যটক হয়রানি ঠেকাতে ট্যুরিস্ট পুলিশের ৮ নির্দেশনা
- বঙ্গমাতা নারীদের অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবেন: স্পিকার
- নতুন গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কারে জরিপ চলছে : প্রধানমন্ত্রী
- ঢেউয়ের তোপে সাগরে মাছ ধরা ট্রলারডুবি, নিখোঁজ ৮ জেলে
- ভেনামি চিংড়ি চাষে অনুমতি পেয়েছে ১২ প্রতিষ্ঠান!
- টাঙ্গাইলে শুরু হয়েছে কফি চাষ, অপার সম্ভাবনা দেখছেন সংশ্লিষ্টরা!
- পরীর ‘সুখবর’
- গরমে স্বস্তি দেবে ড্রাগন শরবত
- ব্রাজিলের ২০২২ বিশ্বকাপের জার্সি প্রকাশ
- সিরাজগঞ্জে হারিয়ে যাচ্ছে শীতল পাটির শিল্প
- ঢাকায় বাস ভাড়ার তালিকা প্রকাশ করল বিআরটিএ
- বাংলাদেশকে আরো ১৫ লাখ টিকা দিলো যুক্তরাষ্ট্র
- নানা আয়োজনে সিরাজগঞ্জে বিশ্ব আদিবাসী দিবস পালিত
- ৬ ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার নির্দেশ
- জাতীয় মাইলফলক হতে চলেছে বিডিএস
- মানবাধিকার রক্ষায় জাতীয় কমিশনকে নির্দেশ রাষ্ট্রপতির
- শিশুদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া আরও ১৫ লাখ ভ্যাকসিন দেশে
- অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত, বেড়েছে রেমিট্যান্স ও রফতানি
- সৌরবিদ্যুতে সচল দুই হাজার কোটি টাকার কারখানা
- মন্ত্রী পদমর্যাদা পাচ্ছেন ঢাকার দুই মেয়র
- ব্যাংকগুলোকে বিদেশে থাকা কালোটাকা সাদা করার সুযোগ প্রচারে নির্দেশ
- বঙ্গমাতার জন্মদিনে ২৫০০ নারীর উপায় অ্যাকাউন্টে শেখ হাসিনার উপহার
- বঙ্গমাতার সিদ্ধান্ত স্বাধীনতা অর্জনে সহায়তা করেছে
- সিরাজগঞ্জের পাসপোর্ট অফিসের সামনে থেকে ৪ দালাল আটক
- উল্লাপাড়ায় পুলিশের অভিযানে ৪ ভ্রাম্যমাণ জুয়াড়ি আটক
- ৪৩ লাখ টাকায় বিক্রি হলো ৭ ফুটে এই মাছ, জানা গেল কতো ওজোন ছিলো
- প্লেনের খাবারে মিলল সাপের কাটা মাথা, ভিডিও ভাইরাল
- দক্ষিণাঞ্চলে দ্বিগুণ বেড়েছে ইলিশ উৎপাদন
- দেড় হাজার কোটি টাকার পেয়ারার বাজার, উৎপাদনে এগিয়ে দুই বিভাগ
- পদ্মার ১৫ কেজির বিগহেড বিক্রি ১১ হাজার টাকায়
- সারা রাত মাছ না পেয়ে হতাশ, ভোরে জালে উঠল বিশাল বাগাড়
- সৌদি খেঁজুরের চাষ করে সফলতার মুখ দেখছেন জামাল
- কুমিল্লায় ড্রাগন ফল চাষে ভাগ্য বদল
- চিনা বাদামের বাম্পার ফলন, ভালো দাম পাওয়ায় খুশি চাষিরা!
- মধুপুরে আনারসের বাম্পার ফলন, দামেও সন্তুষ্ট কৃষকেরা
- গোবর হল কোটিপতি হওয়ার চাবিকাঠি, ভার্মি কম্পোস্ট ব্যবসা শুরু করুন
- লটকনে ভাগ্য বদলের স্বপ্ন কুড়িগ্রামের কৃষকদের
- অল্প সময়ে বড় হচ্ছে মাছ, লাভও বেশি
- আবার বিয়ে করেছেন পূর্ণিমা
- সয়াবিন তেল নতুন দামে বিক্রি আজ থেকে
- বড়শিতে ধরা পড়লো ১৮ কেজির বিশাল কোরাল, ২৪ হাজারে বিক্রি
- সহজে জাল দলিল চেনার ৯ উপায়
- বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের বিকাশে প্রাকৃতিক পরিবেশ গুরুত্বপূর্ণ
- বুকের ঘাম বিক্রি করে অভিনেত্রীর কোটি টাকা আয়
- যুক্ত হচ্ছে বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেলপথ
