ফরজ গোসলের সঠিক নিয়ম না জানার কারণে অসংখ্য মুসলিম ভাই-বোনের নামাজসহ নানা আমল কবুল হয় না। যেটা ঈমানের ক্ষেত্রে চরম ভয়ানক ব্যাপার। অনেকের প্রশ্ন, ফরজ গোসলের আগে কিছু খাওয়া যাবে কি না। হ্যাঁ, খাওয়া যাবে। খাওয়া জায়েজ আছে। এটি নিষিদ্ধ কিছু নয়। কিন্তু উত্তম হলো, যদি আপনার ওপর গোসল ফরজ হয়ে থাকে, তাহলে আগে গোসল করে নেয়া। কারণ এটা আপনার জন্য বাধ্যতামূলক।
বিশিষ্ট আলেম ড. মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ বলেন, আপনি যদি মনে করেন, কোনো কারণে আপনার দেরি হতে পারে, বা আপনাকে পরে গোসল করতে হবে, তাহলে সেক্ষেত্রে আপনার জন্য সুন্নাহ হচ্ছে, আপনি অজু করে নেবেন। তাহলে আপনি অন্য সব কাজ করতে পারবেন। কিন্তু গোসল বা অজু কোনো কিছু না করলে এটা আদবের মধ্যে পড়ে। তাই সম্ভব হলে গোসল করে নেবেন। দেরি হলে অজু করে নেবেন।
যেসব কারণে গোসল ফরজ হয়
১. স্বপ্নদোষ বা উত্তেজনাবশত বীর্যপাত হলে।
২. নারী-পুরুষ মিলনে (সহবাসে বীর্যপাত হোক আর নাই হোক)।
৩. মেয়েদের হায়েয-নিফাস শেষ হলে।
৪. ইসলাম গ্রহণ করলে (নব-মুসলিম হলে)।
ফরজ গোসলের সঠিক নিয়ম
১. গোসলের জন্য মনে মনে নিয়ত করতে হবে। বাড়তি মুখে কোনো আরবি শব্দ উচ্চারণ করে নিয়ত করা বিদ’আত।
২. প্রথমে দুই হাত কব্জি পর্যন্ত ৩ বার ধুতে হবে।
৩. এরপর ডানহাতে পানি নিয়ে বামহাত দিয়ে লজ্জাস্থান এবং তার আশপাশ ভালো করে ধুতে হবে। শরীরের অন্য কোনো জায়গায় বীর্য বা নাপাকি লেগে থাকলে সেটাও ধুতে হবে।
৪. এবার বামহাতকে ভালো করে ধুইয়ে ফেলতে হবে।
৫. এবার ওজুর নিয়মের মত করে ওজু করতে হবে তবে দুই পা ধোয়া যাবে না।
৬. ওজু শেষে মাথায় তিনবার পানি ঢালতে হবে।
৭. এবার সমস্ত শরীর ধোয়ার জন্য প্রথমে ৩ বার ডানে তারপরে ৩ বার বামে পানি ঢেলে ভালোভাবে ধুতে হবে, যেন শরীরের কোনো অংশই বা কোনো লোমও শুকনো না থাকে। নাভি, বগল ও অন্যান্য কুঁচকানো জায়গায় পানি দিয়ে ধুতে হবে।
৮. সবার শেষে একটু অন্য জায়গায় সরে গিয়ে দুই পা ৩ বার ভালোভাবে ধুতে হবে।
মনে রাখতে হবে
১. পুরুষের দাড়ি ও মাথার চুল এবং মহিলাদের চুল ভালোভাবে ভিজতে হবে।
২. এই নিয়মে গোসলের পর নতুন করে আর ওজুর দরকার নেই; যদি ওজু না ভাঙ্গে।
মহান রাব্বুল আলামীন আল্লাহ তায়ালা আমাদের সঠিকভাবে পবিত্র কোরআন ও সহিহ সুন্নাহ মেনে চলার তাওফিক দান করুন এবং পূর্বের না জেনে করা ভুলগুলো ক্ষমা করুন। আল্লাহুম্মা আমিন।
আলোকিত সিরাজগঞ্জ