
সংগৃহীত
আপনি কি খালি পেটে থাকলে মাথাব্যথা অনুভব করেন? অনেকেই এটা তেমন কিছু মনে না করলেও, শরীর এতে একটা গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেয়— ‘আমার পুষ্টি দরকার।’
এ ধরনের মাথাব্যথার পেছনে রয়েছে শরীরের কিছু সহজ ব্যাখ্যা। চিকিৎসাবিজ্ঞানে একে বলা হয় ‘হাঙ্গার হেডেক’, অর্থাৎ ক্ষুধাজনিত মাথাব্যথা।
কেন হয় এই ব্যথা? যখন আমরা দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকি, তখন শরীরে ব্লাড সুগার বা রক্তে শর্করার মাত্রা কমে যায়। আমাদের মস্তিষ্ক মূলত গ্লুকোজ থেকেই শক্তি পায়। এই শক্তির অভাবে মাথায় ও শরীরের কিছু অংশে চাপ তৈরি হয়, আর সেখান থেকেই শুরু হয় মাথাব্যথা।
এছাড়াও ক্ষুধার সময় শরীর থেকে কিছু হরমোন (যেমন কর্টিসল, অ্যাড্রেনালিন) এবং হিস্টামিন নিঃসৃত হয়, যা মাথাব্যথা বাড়িয়ে দিতে পারে। আরও কিছু কারণ হতে পারে:
- শরীরে পানির ঘাটতি (ডিহাইড্রেশন)
- অনিয়মিত খাওয়ার সময়
- ক্যাফেইন হঠাৎ কমিয়ে দেওয়া
- ঘুমের অভাব
- কড়া ডায়েট বা হঠাৎ ক্যালরি কমিয়ে ফেলা
লক্ষণ
ক্ষুধাজনিত মাথাব্যথা সাধারণত কপাল বা মাথার সামনের দিকে শুরু হয়, পরে ছড়িয়ে পড়ে। এর সঙ্গে দেখা দিতে পারে:
- মাথা ঘোরা বা দুর্বল লাগা
- বমি ভাব
- ঘাড়-কাঁধে টান
- ঘাম হওয়া
- পেট ব্যথা
এই মাথাব্যথা কমাতে কী করবেন?
সবচেয়ে সহজ সমাধান—খাওয়া। পুষ্টিকর ও সুষম খাবার খান, যাতে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, সবজি ও ফল থাকে। সময় না থাকলে স্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস যেমন বাদাম, ফল, দই বা হোল গ্রেইন বিস্কুট খেতে পারেন। সাধারণত খাওয়ার ২০-৩০ মিনিটের মধ্যে মাথাব্যথা কমে আসে।
মনে রাখবেন, পানি খাওয়াও খুব জরুরি।
প্রতিরোধে করণীয়
- দিনে কয়েকবার ছোট ছোট পরিমাণে খাবার খান
- পর্যাপ্ত পানি পান করুন
- ঘুম ঠিক রাখুন
- হঠাৎ ডায়েট বা ক্যালরি কমাবেন না
- রোজা রাখলে সেহরিতে পুষ্টিকর খাবার ও পানি নিন
কখন চিকিৎসকের পরামর্শ জরুরি
- মাথাব্যথা যদি বারবার হয়
- খাবার বা ওষুধে না কমে
- দৈনন্দিন কাজে ব্যাঘাত ঘটায়
হঠাৎ তীব্র মাথাব্যথা, কথা জড়ানো, মাথা ঘোরা বা চোখে ঝাপসা দেখা দিলে—তা হতে পারে স্ট্রোকের লক্ষণ। দ্রুত চিকিৎসা নিন।
ক্ষুধার মাথাব্যথা আসলে শরীরের একটা সতর্ক সংকেত। সময়মতো খাওয়া আর পুষ্টিকর খাবার খেয়ে আপনি এটি সহজেই প্রতিরোধ করতে পারেন। তাই নিজের শরীরের বার্তাগুলোকে গুরুত্ব দিন। যত্ন নিন, সুস্থ থাকুন।
সূত্র: কালবেলা