মঙ্গলবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৫, ২২ আশ্বিন ১৪৩২

পেট ও পায়ে ফোলাভাব : লিভার সমস্যার পূর্বাভাস?

পেট ও পায়ে ফোলাভাব : লিভার সমস্যার পূর্বাভাস?

সংগৃহীত

আপনার কি হঠাৎ করে পায়ের গোড়ালি বা পেটের নিচে ফোলাভাব দেখা দিচ্ছে? ভাবছেন, এটা কি শুধুই দাঁড়িয়ে থাকার ক্লান্তি, নাকি এর মধ্যে আছে অন্য কোনো স্বাস্থ্যঝুঁকি? বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি হতে পারে নন অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ (এনএএফএলডি)–এর প্রাথমিক লক্ষণ।

বিশ্বজুড়ে দ্রুত বাড়ছে নন অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ, যা বর্তমানে এক ধরনের নিরব মহামারিতে রূপ নিচ্ছে। চিকিৎসকদের মতে, অনিয়মিত জীবনযাপন, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং দৈনন্দিন শারীরিক কার্যক্রমের অভাব– এই তিনটি কারণ মিলেই বাড়াচ্ছে এই রোগের ঝুঁকি।

লিভারে অল্প পরিমাণ চর্বি থাকা স্বাভাবিক। কিন্তু যখন চর্বির পরিমাণ অতিরিক্ত হয়ে যায়, তখন তা লিভারের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত করে। চিকিৎসা না করলে এই সমস্যা ‘সিরোসিস’, এমনকি ‘লিভার ক্যানসারে’ও পরিণত হতে পারে।

ফ্যাটি লিভার দুই ধরণের– 

এক. অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার, যা অতিরিক্ত মদ্যপান থেকে হয়। 
দুই. নন অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার (এনএএফএলডি), যা অতিরিক্ত ওজন, ডায়াবেটিস, চর্বিযুক্ত খাবার এবং অনিয়মিত জীবনযাপনের কারণে হয়ে থাকে।

এই রোগের শুরুর দিকে সাধারণত কোনো উপসর্গ দেখা দেয় না। তবে ধীরে ধীরে এর কিছু আভাস দেখা দিতে পারে। যেমন– পেটের ডান পাশে চাপ বা অস্বস্তি, অতিরিক্ত ক্লান্তি, হঠাৎ ওজন কমে যাওয়া, পেটে বা পায়ে ফোলাভাব, চোখ ও ত্বকে হলুদ ভাব (জন্ডিস), গাঢ় প্রস্রাব ও হালকা বর্ণের মল, মাঝে মাঝে মানসিক বিভ্রান্তি।

ব্রিটেনের জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা সংস্থা (এনএইচএস) জানিয়েছে, পায়ে ফোলাভাব ফ্যাটি লিভারের একটি প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে। অনেকে ভেবে বসেন, এটি হয়তো শুধু দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার কারণে হয়েছে। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন, এটি লিভারের ক্ষতির আগাম ইঙ্গিত হতে পারে।

লক্ষণ বুঝবেন যেভাবে:

ফুলে যাওয়া অংশে আঙুল দিয়ে কয়েক সেকেন্ড চেপে ধরুন। যদি আঙুল তোলার পরেও সেখানে গর্তের মতো দাগ থাকে, তবে তা হতে পারে ‘পিটিং এডেমা’, যা শরীরে তরল জমে থাকার লক্ষণ।

পায়ে বা পেটে এমন অস্বাভাবিক ফোলাভাব দেখা দিলে অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। সময়মতো পরীক্ষা ও চিকিৎসা শুরু করলে ফ্যাটি লিভার থেকেও পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠা সম্ভব।

নন অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার প্রতিরোধে বিশেষজ্ঞদের কিছু পরামর্শ:

১. প্রতিদিন নিয়মিত শরীরচর্চা করুন

২. সুষম ও পরিমিত খাবার খান

৩. অ্যালকোহল পরিহার করুন

৪. শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন

কোনও উপসর্গ দেখা না গেলেও লিভার দীর্ঘ সময় পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তাই শরীরের এমন অস্বাভাবিক পরিবর্তনকে গুরুত্ব দিন। সামান্য ফোলাভাবও হতে পারে বড় বিপদের পূর্বাভাস।

সূত্র: ঢাকা পোষ্ট

সর্বশেষ:

শিরোনাম: