মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

সম্পত্তির লোভে মা`কে মারধর করলো ছেলে

সম্পত্তির লোভে মা`কে মারধর করলো ছেলে

মায়ের কাছে সবচাইতে প্রিয় সন্তানের হাসিমুখ। জন্ম থেকে শুরু করে সন্তানের জন্য কতই না কষ্ট করেন মা। কিন্তু নিয়তির নির্মম পরিহাসে সেই সন্তানের হাতেই মারধরের শিকার হয়ে বৃদ্ধা মা হাসনা বানু (৯০) কে যেতে হলো হাসপাতালে। সম্পত্তির লোভ যে মানুষকে কতটা অন্ধ করে দেয়, নওগাঁর চকদেব (ডাক্তার পাড়া) গ্রামের এই ঘটনাই যেন তার প্রকৃষ্ট প্রমাণ। 
 
এক বিশ্বস্তসূত্রে অভিযোগ উঠেছে, ছেলের নামে সম্পত্তি লিখে না দেওয়ায় ৯০ বছরের বৃদ্ধা মা হাসনা বানু কে বেধড়ক মারধর করে গুরুতর জখম করে বড় ছেলে কামরুল হাসান (৫৮) ও প্রবাস ফেরত ছোট ছেলে মেহেদী হাসান আইভি (৫৪)। আরও জানা যায়, ছোট ছেলে মেহেদী হাসান আইভি এক সময়ে খুনের মামলার আসামীও ছিল।   
মূলত প্রবাসে থাকাকালীন সময় থেকেই বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে সম্পত্তি নিজের হস্তগত করার লোভে মা হাসনা বানুকে অস্ত্র প্রদর্শনের মাধ্যমে চাপ প্রয়োগ করতো কামরুল ও মেহেদী। 
  
নিকট স্বজনদের ভাষ্যমতে জানা যায়, ছোট ছেলে মেহেদী দেশে আসার পর বড় ভাই কামরুলের সাথে মিলে সম্পূর্ণ সম্পত্তি দখলের জন্য দীর্ঘদিন ধরে ষড়যন্ত্র করতে থাকে। কিন্তু হাসনা বানু তার বাকি সন্তানদের বঞ্চিত করে দুই ছেলেকে সম্পত্তি লিখে দিতে রাজি হন নি। সম্পত্তি হস্তগত না করতে পারার ক্ষোভে এক পর্যায়ে আজ ২৪ অক্টোবর রবিবার সকালে নিজের মাকে মারধর করা শুরু করে কামরুল ও মেহেদী। এমনকি আছাড় মেরে মায়ের মোবাইল ফোন ভেঙ্গে ফেলে ও মায়ের হাত-পা কেটে জখম করে। পরবর্তীতে স্বজনরা জখম মাকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করান। 
 
গত ১৬-১৭ বছর ধরে মাকে আটকে রেখে নির্যাতন করে আসছিল কামরুল। সেখানে তাকে ঠিক মতো খেতে দিতো না, এমনকি বাড়ির বাহিরেও যেতে দিত না। এর আগে ভুক্তভোগীর স্বামীকে অস্ত্র দেখিয়ে সম্পত্তি লিখে দেয়ার জন্য ভয়ভীতিও দেখিয়েছিলো। সম্পত্তির জন্য এই দুই ছেলের অধঃপতন সহ্য করতে না পেরে এক পর্যায়ে বাবাও মারা যান। মৃত্যুর পূর্বেই তিনি স্ত্রী হাসনা বানুর নামে বাড়িটি লিখে দিয়ে যান। এর পর থেকেই দিন দিন নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছিল কামরুল ও মেহেদী। পরিবারের সম্মানের কথা ভেবে অত্যাচারের বিষয়ে এতদিন কাউকে বলেননি হাসনা বানু। 

আলোকিত সিরাজগঞ্জ